বাংলাদেশের গণতন্ত্র আজ কবরে শায়িত, আর সেই কবরের ওপর নৃত্য করছে আ.লীগ সরকার

0

বাংলাদেশের গণতন্ত্র আজ কবরে শায়িত বলে উল্লেখ করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, আমাদের মানসিক রোগগ্রস্ত সরকার সেই কবরের ওপর নৃত্য করছে। তিনি বলেন, আমাদের মধ্যবর্তী নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি কল্যাণকর রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তুতি নিতে হবে।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডি ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভাষাসৈনিক আব্দুল মতিনের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আমাদের দেশে কেউ না খেয়ে নেই। হ্যাঁ, না খেয়ে কথাটা কিছুটা সত্য। কিন্তু না খেয়ে না থাকলেও যথার্থ পুষ্টি নাই। সেটা আরও খারাপ। না খেয়ে থাকলে আন্দোলন হবে, মানুষ ক্ষিপ্ত হবে। কিন্তু মানুষ এখন খেতে পাচ্ছে বলে আন্দোলন করার স্পৃহাটা নেই। এটাই পুঁজিবাদের ধর্ম।

তরুণদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দেশের নিপীড়িত শোষিত মানুষের মুক্তি এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার একমাত্র তরুণদের পক্ষেই সম্ভব, এই জন্য প্রয়োজন গণ-আন্দোলন। আমাদের বয়স হয়েছে। এখন আমাদের অবলম্বন তরুণেরা। তারাই বাংলার নিপীড়িত মানুষকে মুক্তি দেবে। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবে। পরিবর্তন ছাড়া আর কোন উপায় নেই। এ জন্য মধ্যবর্তী নির্বাচন মানে একটি কল্যাণকর রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তুতি নিতে হবে। এই যে এখন ফাঁসির আইন হচ্ছে। এটি কোনো সমাধান নয়, এটি একটি বুলি মাত্র। এসবের পরিবর্তন করতে হলে তরুণদের জেগে উঠতে হবে।

আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, আইন করলেই ধর্ষণ বন্ধ হবে না। ফাঁসির আদেশ দিয়ে ধর্ষণ ঠেকানো যাবে না। মূলত আমাদের দেশে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। রাজনৈতিক প্রভাবে যেভাবে অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছে, ফাঁসি দিলেও তাতে ধর্ষণ বন্ধ হবে না।

নুর বলেন, সবাই দেখেছে কারা ধর্ষণ করছে। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে যে দেলোয়ার বাহিনী ধর্ষণে আলোচনায় এসেছে সে কীভাবে এসেছে সবাই তা দেখেছে। সে উঠে এসেছে নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র দখলের মাধ্যমে। ওসি প্রদীপ কীভাবে একজন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তাকে গুলি করে। এটা শুধুমাত্র ভারতীয় ব্যাকআপে সম্ভব হয়েছে। কারণ তিনি মার্ডার করার পর ভারতীয় দূতাবাসে যোগাযোগ করেছেন, এটা আমার কথা নয় তদন্ত প্রতিবেদনের কথা। যখন ওসি থেকে শুরু করে চকিদার লেভেলে সর্বত্রই ভারতীয়দের আধিপত্য এবং ভোট ডাকাতির জন্য দেলোয়ার বাহিনীদের সরকার তৈরি করে, তখন এ সরকারের অবসান না ঘটানো পর্যন্ত ধর্ষণ থেকে এ জাতিকে রক্ষা করা যাবে না।

নুর বলেন, এই স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে ৯০ এ যেভাবে আন্দোলন হয়েছিল সেভাবেই আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আমাদের দাবি একটাই যদি অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য যদি সংবিধান সংশোধন করে আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃস্থাপন করতে হয় তাহলে সেটাই করতে হবে।

তিনি বলেন, আমি চ্যালেঞ্জ করলাম আপনারা কালকে নামেন পরের দিন দেখবেন সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হবে। এরশাদের পতনের আগের দিনও জেনারেল নুরুদ্দিনরা বৈঠক করেছিলেন। কিন্তু যখন জনগণ নেমে গেছে তখন তারা বলেছে আমরা আর আপনাদের সাথে নাই। আশা করছি খুব শিগগিরই সে গণ-আন্দোলনের ডাক পাবেন।

নূর বলেন, যেভাবে আমাকে টার্গেট করে ছাত্রলীগ-যুবলীগ দিয়ে একের পর এক মামলা দেয়া হচ্ছে, কিন্তু আমি তো থেমে যায়নি। যেভাবে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে দুই বছর মিথ্যা মামলায় কারাগারে রেখেছে, সেখানে আমি নুর কিছুই না। কিন্তু আমি জানি আমার পরিণতি বেগম জিয়ার মতো হতে পারে। আওয়ামী লীগের নেতা মাকসুদ কামাল তো টকশোতে বলেছেন যে, ভিপি নুরের পরিণতিও খালেদা জিয়ার মতো হবে। কিন্তু আমি বলছি আমার একটা জীবনের বিনিময়ে যদি এদেশের ১৮ কোটি মানুষ মুক্তি পায় তাহলে আমার জীবন আমি উৎসর্গ করলাম। কোন গণ-আন্দোলন ত্যাগ ছাড়া সফল হয়নি।তাই জনগণের প্রতি অনুরোধ থাকবে এখন আর বসে থাকার সময় নেই খুব শিগগিরই ডাক আসবে গণ-আন্দোলনের।

ভাসানী অনুসারী পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য নঈম জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী, বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. দিলারা চৌধুরী, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মের আহ্বায়ক কালাম ফয়েজী, মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক কাউন্সিলর মো. ফরিদ উদ্দিন প্রমুখ।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com