আওয়ামী লীগের প্রশাসন নির্যাতিতদের অভিযোগ নেয় না: রিজভী

0

ধর্ষণ বন্ধ এবং ধর্ষণকারীদের বিচার দাবি করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আজকে কারো কোনো নিরাপত্তা নেই। অবৈধ সরকার ও অনাচারের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে। সিলেটের এমসি কলেজে নারী ধর্ষণের ঘটনায় প্রমাণিত হয় যেন আদিম যুগ ফিরে এসেছে।

গতকাল মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের ৪১ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ‘শহীদ জিয়ার রাজনৈতিক দর্শন, ধর্মীয় মূল্যবোধ ও আজকের প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে সারাদেশে নারী নির্যাতনের কলংকিত রুপ বিস্তার লাভ করেছে। আগামী বছর তারা আরও ভয়াবহতা নিয়ে আসবে। আজকে মানুষ আতংকিত। তারা বিচলিত-শংঙ্কিত। যেখানে একটা সম্ভ্রমহানির বড় অপরাধ সংঘটিত হলো, আর জানাজানি হলো ৩২ দিন পর। তাহলে জাতি কি লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে এই বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন? এই পরিস্থিতি আর চলতে পারেনা। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে হবে। প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

প্রশাসনের লোকজন দিয়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতা বন্ধ করা হয়েছে, এমন অভিযোগ করে রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে এমন প্রশাসন তৈরী হয়েছে, যেখানে নির্যাতিত মানুষ কমপ্লেন করতে পারছে না। নির্যাতিত হয়েও অভিযোগ না করে উল্টো ভয়ে নিজ এলাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।

বেগমগঞ্জে নারী নির্যাতনের প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, দুষ্কিতিকারীরা এতই ভয়ঙ্কর যে বেগমগঞ্জের ওই নারী অভিযোগ করার পর্যন্ত সাহস পায়নি। উল্টো ভয়ে নিজের এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন। আর প্রশাসন এ ক্ষেত্রে নিশ্চুপ। তাহলে আজ কী ধরনের শাসক তৈরি করেছে শেখ হাসিনা। যেখানে সম্ভ্রমহানি একজন নারী থানায় গিয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করতে ভয় পায়।

তিনি আরও বলে, জনগণ জানে সরকার কাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়। হয়তো এই কারণেই সম্ভ্রমহানি শারীরিকভাবে নির্যাতন ক্ষতবিক্ষত হওয়ার পরেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে যেতে পারছে না।

রিজভী বলেন, বর্তমানে যে অবস্থা তৈরী হয়েছে, পাকিস্তান আমলেও ২৫ মার্চের থে‌কে ১৬ ডি‌সেম্বর পর্যন্ত এমন পরিস্থিতি হয়েছে কিনা আমার জানা নাই।

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, আমরা রাস্তাঘাটে চলতে ভয় পাচ্ছি। এমনকি মেয়ে মানুষদের নিয়ে নিজের ঘরে থাকতেও ভয় পাচ্ছি। এমসি কলেজের এই নৃশংস ঘটনার পরে আবার সেই বেগমগঞ্জে নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটলো। আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, বিশ্বের দিকে তাকিয়ে দেখেন কোথায় ধর্ষণ নাই। তথ্যমন্ত্রী বলছেন, বিএনপি আশ্রয়-প্রশ্রয় ধর্ষন হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সব সময় নিদেজের দায়ভার বিএনপির উপর চাপানোর চেষ্ট করছে। শুধু তাই নয়, বর্তমান প্রশাসন দিয়ে বিরোধী দলকে দমন পীড়ন করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ দলটি লুটেরা, টাকা পাচারকারী ও নারীদের সম্ভ্রমহানিকারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা হিসেবে পরিচিত হয়েছেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেন মানুষের পাশে কেউ থাকে না শুধু আওয়ামী লীগ থাকে। দেশব্যাপী ধর্ষণ ও নির্যাতন হওয়া, আওয়ামী লীগ থাকার এটাই নমুনা। আওয়ামী লীগের প্রশাসন নির্যাতিতদের অভিযোগ নেয় না। কালকে আমরা একটা মিছিল করি, দেখবেন পুলিশ পেছন থেকে টপাটপ করে বিএনপির নেতাকর্মীকে কিভাবে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এখানে তারা দারুন নৈপুণ্য ও দক্ষতা দেখাচ্ছে। বিরোধী দলকে দমন করার জন্য ক্রসফায়ার দেয়ার জন্য এত দক্ষ যে এদের তুলনা হয়না।

অনুষ্ঠানে ওলামা দলের আহ্বায়ক পিন্সিপাল মাওঃ শাহ্ নেছারুল হকের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব প্রিন্সিপাল মাওঃ নজরুল ইসলাম তালুকদারের সঞ্চলনায় আরও বক্তব্য দেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন এর উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সহ-সাংগঠ‌নিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু ও নির্বাহী ক‌মি‌টির সদস‌্য আবু না‌সের মোঃ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com