এমসি কলেজে স্বামীকে বেঁধে তরুণীকে গণধর্ষণ: ক্ষোভে উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া

0

সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে শুক্রবার সন্ধ্যায় স্বামীকে বেঁধে এক তরুণী গণধর্ষণের ঘটনায় ক্ষোভে তোলপাড় চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। নৃশংস এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা, ক্ষোভ আর প্রতিবাদে ফেটে পড়েছেন নেটিজেনরা। ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হতে দেখা গেছে সব শ্রেণি-পেশার মানুষদের।

ওই ঘটনায় সিলেট শহরের বিভিন্ন জায়গায় শনিবার প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে সাধারণ মানুষ। গণধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষিতার স্বামী বাদী হয়ে একটি মামলাটি দায়ের করেছেন। এজাহারে ৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে যারা ছাত্রলীগের কর্মী বলে জানা যায়। এছাড়া আরও তিন জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।

ফেসবুকে সালাহ্ উদ্দীন পল্লব সিলেটের এমসি কলেজ ধর্ষণ ঘটনাকে ইংগিত করে লেখেন, আরেহ না! ওরা মোটেও ছাত্রলীগের ছিলো না। ঘটনা ঘটার ঠিক এক ঘণ্টা আগেই তাদের বহিষ্কার করা হয়েছিলো!

আহমেদ নুরুদ্দিন শাহী লিখেছেন, ‘‘আমরা বলি ধর্ষক বা অপরাধীর কোন দলীয় পরিচয় নাই!আগে আমাদের এই স্লোগান পাল্টাতে হবে!যদি তার কোন পরিচয় না থাকতো তাহলে সে কেমনে এত বড় বড় অপরাধ করে কোন সাহসে করে? আজ যখন তার শত অপরাধের মধ্যে একটা অপরাধ সবার সামনে আসার কারণে দলিয় ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে তখন বলি তার দলীয় পরিচয় নাই,অথচ তাকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে আরো কত অবৈধ কাজ করাইছেন বা করেছে তখনতো ঠিকই দলীয় পরিচয় ছিল! আগে ঘরের বিতরের ধর্ষক, জঙ্গি, অপরাধী তাদের লাগাম টেনে নিন!ঘরে এসব অপরাধী রেখে বাহিরে তালাশ করে কোন লাভ হবেনা!আমাদের উচিত যে সব দল, গোষ্ঠী, নেতা এসব অপরাধী তৈরি করতেছে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানো এবং ত্যাগ করা!না হয় আজ বা কাল আমি আপনি এর শিকার হব!’’

সালাহুদ্দিন আইয়ুবি লিখেছেন, ‘‘সিলেটের এমসি কলেজে ধর্ষণের ঘটনা ছাত্রসমাজের জন্য কলঙ্কজনক। স্বনামধন্য এ প্রতিষ্ঠানটি একটি ছাত্র সংগঠনের অপকর্মের কারণে বারবার শিরোনাম হচ্ছে। এর আগের ধর্ষণের ঘটনাগুলোর উদাহরণযোগ্য বিচার না হওয়া কিংবা বিচারে দীর্ঘসূত্রিতার জন্যই এ ঘটনাগুলো বেশী বেশী ঘটছে। পাশাপাশি আমাদের সামাজিক অবক্ষয়তো রয়েছেই। সবারই নিজ নিজ জায়গা থেকে আওয়াজ তোলা দরকার, প্রতিবাদ করা দরকার এবং ধর্ষকদের প্রতিরোধ করা দরকার।’’

বিলাস রায় লিখেছেন, ‘‘বর্তমান ছাত্রলীগ অতীতের ছাত্রলীগের জন্য লজ্জার।আমরা যে ছাত্রলীগের ইতিহাস পড়েছি আর আজকের এই ছাত্রলীগ দুটোই দুটোর পরিপন্থী।আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর এখন মনে হয় সেই সময় জরুরি হয়ে পড়েছে যে ছাত্রলীগের ঐতিহ্য ফিরাতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার।আর সরকারের আরও জরুরি হয়েছে জনগণকে ছাত্রলীগের কোরাল গ্রাস থেকে রক্ষা করতে আইনের কঠোর প্রয়োগ করা।নচেৎ এই ছাত্রলীগ অতীতের সব অর্জন ভূলুণ্ঠিত করে দিয়ে লজ্জার আর ঘৃণার স্থান দখল করে নিবে।শুধু এইসব দোষী না সকল দোষী ব্যক্তিদের কঠোর বিচার চাই।’’

আব্দুল্লাহ আল মামুন লিখেছেন, ‘‘দেশে করোনা মহামারির চেয়েও ভয়ংকর রূপে ছড়িয়ে পড়েছে ধর্ষণ। বাবা, শ্বশুর,মামা, চাচা থেকে শুরু করে মসজিদ-মাদরাসা-মন্দিরের ইমাম-হুজুর-পুরোহিতও ধর্ষক। অভিজাত হোটেল থেকে বস্তি এলাকা ধর্ষকদের অভয়ারণ্য যেন সবই। শিশু থেকে শতবর্ষী বৃদ্ধা নারীও ধর্ষণের শিকার। এমনকি ধর্ষণ থেকে রেহাই পাচ্ছে না বাক বা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীরাও। ধর্ষণ শেষে নির্মম নির্যাতন, চলন্ত বাস থেকে ফেলে দিয়ে, ঘাড় মটকে হত্যার ঘটনাও ঘটছে। আমাদের এ প্রিয় মাতৃভূমি ধর্ষণের উপত্যকা হিসেবে পরিচিতি লাভের আগেই ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড নিশ্চিত করে আইনগত, বিচারিক, প্রশাসনিক সংস্কার এখুনি দরকার। লাখো শহীদ ও কন্যা-জননীর সম্ভ্রমের চড়া মূল্যে অর্জিত এ পুণ্যভূমি ধর্ষকের দখলে যেতে পারে না!’’

উবায়দুল হক বলেছেন, ‘‘জসীম উদ্দিন মানিকের কথা মনে আছে?১৯৯৮ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের সেঞ্চুরি করে মিষ্টি বিতরন করেছিলো। এরা তো তার ই উত্তরসূরী তাই না।’’

মীর মশিউর লিখেছেন, ‘‘২০০৮ এর পর থেকে ২০২০ এর আজ অবধি যত ধর্ষণ হয়েছে, স্বাধীনতার পর থেকে ২০০৭ পর্যন্ত এত ধর্ষণ খুঁজে পাওয়া যাবেনা! তারপরও তিনি বলছেন দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার সুফল দেখতে পাচ্ছে জনগণ। আপনার ছেলেদের দারা এই ধর্ষণই কি সুফল হিসাবে হিসাবে দেখছেন।’’

আজাদুল ইসলাম আদনান লিখেছেন, ‘‘সেঞ্চুরি করেছো তোমরা, কিন্তু সেই কলঙ্ক এখনও যুগের পর যুগ বয়ে বেড়াতে হয় জাবির শিক্ষার্থীদের। এরপর থেকে আজ পর্যন্ত কত মেয়ে যে তোমাদের কাছে সতিত্ব হারিয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। সুতরাং তোমাদেরকে নতুন করে আর কিছু বলার নেই। দেশের মানচিত্রটাও তোমাদের কাছে নিরাপদ বলে মনে হচ্ছে না।’’

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com