গণমাধ্যমের গলা টিপে ‘পাপ ঢাকতে’ ব্যস্ত আওয়ামী লীগ সরকার: রিজভী

0

দেশের গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করে আওয়ামী সরকার ‘চেতনা সন্ত্রাস, লুটেরা সন্ত্রাস ও পাচার সন্ত্রাসের’ পাপ ঢাকতে উঠেপড়ে লেগেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত ‘জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা-২০২০’ দেশের গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধের আরেকটি ‘কালাকানুন’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এক দোয়া মাহফিলে তিনি এই মন্তব্য করেন। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় ঢাকা কলেজ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল পরিবারের উদ্যোগে সদ্য প্রয়াত কলেজের ছাত্রনেতা আবদুল আউয়াল খান ও শফিউল বারী বাবুর স্মরণে এ দোয়া মাহফিল হয়।

রিজভী বলেন, ‘প্রতিনিয়ত এই গণবিরোধী সরকার এমন এমন আইন করছে যাতে কোনও ভাবে যেন বিরোধীকণ্ঠ বাতাসের মধ্যে ভেসে না যায়। গত সোমবার তারা জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যমে নীতিমালা করে তা আইন করার জন্য অনুমোদন দিয়েছে। অর্থাৎ টেলিভিশন থাকবে, কিন্তু তার যদি অনলাইন ভার্সন বা নিউজ পোর্টাল থাকে তাহলে তার জন্য আলাদা রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এটা একটা কণ্ঠরোধ।’

তিনি বলেন, ‘পত্রিকাগুলোরও তাই। পত্রিকাগুলোতে যেসব খবর ছাপা হচ্ছে, তার অনলাইন ভার্সনে ভিন্ন কথা থাকলে পরে তার জন্যও আলাদা রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এরকম কালাকানুনের বন্ধনের মধ্যে শুধু আটকিয়ে রাখো, শুধু আটকাও, নিয়ন্ত্রণ করো, যত পারো নিয়ন্ত্রণ করো- তারই একটি দৃষ্টান্ত হলো জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

রিজভী বলেন, ‘বাংলাদেশ বিধি-নিষেধের বেড়াজালের মধ্যে, বেড়াজালের মধ্যে আটকাতে আটকাতে তারা (সরকার) একেবারে বাকশালের যে চূড়ান্ত রূপ -একদল, একদেশ, এক নেতা যেটা করেছিলো ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি। শেখ হাসিনা সেই পিতার একদলীয় নীতির সেই এক দল, এক নেতা, একদেশ ও একটি পত্রিকা- সেই ধারাতে তিনি চলে আসছেন। চূড়ান্ত চেহারায় আত্মপ্রকাশ করছেন তিনি এই গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের মধ্য দিয়ে।’

তিনি বলেন, ‘কারণ এরা হলো চেতনা সন্ত্রাস, এরা হলো ভোট সন্ত্রাস, এরা হলো লুটেরা সন্ত্রাস। এখন আরেকটা সন্ত্রাস যুক্ত হয়েছে পাচার সন্ত্রাস। মানবপাচার আর টাকা পাচার। এই যে এতোগুলো সন্ত্রাস তারা তাদের অঙ্গে ভূষণ হিসেবে নিয়েছেন এটা ঢাকা দেয়ার জন্য গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করার কেনও বিকল্প নেই –এই নীতি নিয়ে আজকে শেখ হাসিনা দেশ চালাচ্ছেন। তিনি মনে করছেন এভাবে টিকে থাকা যায়।’

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘এই সরকারের নিপীড়নের যেন শেষ নেই। গণতন্ত্র, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা গোরস্তানে। এত কিছু করেও সরকার আশ্বস্ত হতে পারছে না। এত সাংবাদিকদের গুম করা হয়েছে, মিথ্যা মামলায় সাংবাদিকদের প্রতিনিয়ত কারাগারে যেত হচ্ছে, এর মধ্যে আবার নতুন করে গণমাধ্যেমের কণ্ঠরোধ করার জন্য যুক্ত হলো জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা।’

এই অবস্থা থেকে উত্তরণে তিনি বলেন, ‘এ অবস্থার পরিবর্তনে আমাদের গণতন্ত্র রক্ষার লড়াইয়ের দিকে ধাবিত হতে হবে। আমাদের সামনে এক পবর্তসঙ্কুল পথ অতিক্রমের যে প্রস্তুতি থাকা দরকার আজকে এই তরুণরা সেই প্রস্তুতি নিয়ে এগিয়ে যাবেন বলে আমি প্রত্যাশা করছি।’

ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপুর সভাপতিত্বে ও ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সজিবের পরিচালনায় দোয়া মাহফিলে বিএনপির আসাদুল করিম শাহিন, আবদুস সালাম আজাদ, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, হারুনুর রশীদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, সাদরেজ জামান, যুব দলের কামাল আনোয়ার,  ঢাকা কলেজের সাবেক ছাত্র নেতা জাকির হোসেন, গোলাম সারোয়ার শামীম, এসএইচ জাবেদ ও চৌধুরী হাসান জামান মিন্টু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com