আ.লীগের দুর্নীতিবাজ ও প্রতারকদের কারণে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের মর্যাদা ক্ষুন্ন হয়েছে

0

দেশের প্রতি জনগণকে বিনামূল্যে করোনা ভাইরাসের টিকা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ আহবান জানান।

তারেক রহমান বলেন, শহীদ জিয়া যেভাবে ‘প্রত্যেক শিশুর জন্য বিনামূল্যে ‘বিসিজি টিকা’ দানের’ ব্যবস্থা নিয়েছিলেন. একইভাবে বর্তমানেও দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য বিনামূল্যে করোনা ভাইরাসের টিকার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কারণ বিনামূল্যে করোনা ভাইরাসের টিকা পাওয়া সকল নাগরিকের অধিকার। এটি নাগরিকদের মৌলিক মানবাধিকার।

তারেক রহমান বলেন, কোবিড-নাইন্টিন পরিস্থিতি মোকাবেলায় ক্ষমতাসীন সরকারের সামনে এই মুহূর্তে সবচেয়ে অগ্রাধিকার ইস্যু হওয়া উচিত দেশের মানুষের জন্য করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রাপ্তি নিশ্চিত করা।

কয়েকটি দেশ করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন ট্রায়ালের প্রায় শেষ ধাপে রয়েছে। তাই করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে, বাংলাদেশে ভ্যাকসিনের থার্ড ফেজের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমতি দেয়ার পাশাপাশি সম্ভাব্য সকল বিকল্প সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে। ‘গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন’/জি-এ-ভি-আই ‘এর সদস্য হতে হবে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ভ্যাকসিন গবেষণা ও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গেও নিবিড় যোগাযোগ রাখতে হবে, যাতে যথাসময়ে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন পেতে বাংলাদেশকে সমস্যায় পড়তে না হয়।

তারেক রহমান বলেন, ‘দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন শেখ হাসিনা সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে বলতে চাই, করোনা ভাইরাসের ভ্যাক্সিন সংগ্রহে দুর্নীতির আশ্রয় নেবেন না’। ‘মানুষের জীবনবাজি রেখে দুর্নীতি করবেন না’।

করোনা টেস্ট ট্রেসের সময় দুর্নীতির প্রসঙ্গ তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, নির্বাচন কমিশন রাতের অন্ধকারে যেভাবে নিশিরাতের সরকারের এমপিদের পাশ ফেলের সার্টিফিকেট দিয়েছিলো, একইভাবে নিশিরাতের সরকারের অনুসারীরা শতাব্দীকালের আতঙ্ক করোনা ভাইরাস টেষ্ট না করেও ইস্যু করছিলো ভুয়া সার্টিফিকেট।

ক্ষমতাসীন দলের দুর্নীতিবাজ ও প্রতারকদের কারণে বিশ্বের দরবারের বাংলাদেশের মর্যাদা ক্ষুন্ন হয়েছে। দেশে দেশে বাংলাদেশের নাগরিকদের বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়েছে।

সুতরাং, করোনা-ভ্যাকসিন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে যাতে আর কোনো কেলেংকারী না ঘটে সে ব্যাপারে এই দুর্নীতিবাজ সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, স্বাস্থ্যখাতে সীমাহীন দুর্নীতি এবং অব্যবস্থাপনার কারণে জনগণ বিশ্বাস করে একমাত্র সেনাবাহিনীই পারে কোভিড-নাইটিন ভ্যাক্সিন সঠিকভাবে প্রতিটি মানুষের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছে দিতে।

দীর্ঘ ভাষণে রহমান বলেন, বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন একটি দল, জনগণের সমর্থন নিয়ে বিভিন্ন মেয়াদে বিএনপি একাধিকবার রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেয়েছে। জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বাংলাদেশ পেয়েছিলো আধুনিক রাষ্ট্রের মর্যাদা, বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ির অপবাদ ঘুচিয়ে দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামলে বিশ্বে বাংলাদেশ ‘এশিয়ার ইমারজিং টাইগার’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলো।

তিনি বলেন, ‘এই বাস্তবতায় বিএনপির ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই শুভলগ্নে আমি দেশ এবং জনগণের স্বার্থে ক্ষমতাসীনদের প্রতি একটি আহবান জানিয়ে বলতে চাই, মিথ্যাচার, প্রতিহিংসা এবং কূটতর্কের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসুন, ব্লেমগেমের রাজনীতির পরিবর্তে জনগণের আস্থা অর্জনের চেষ্টা করুন। স্বাধীনতার ঘোষকের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার বন্ধ করে বরং তারঁ অন্যতম একটি যুগান্তকারী ভালো কাজের মতো আপনারাও একটি ভালো কাজ করার চেষ্টা করুন।

তারেক রহমান বলেন, ডিপথেরিয়া, হুপিংকফ, ধনুষ্টংকার, পোলিও, হাম এবং যক্ষ্মা, বাংলাদেশে প্রতিটি শিশুকে এইসব রোগের টিকা দেয়া হয়। ১৯৭৯ সালের ৭ এপ্রিল …তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো প্রতিটি শিশুকে বিনামূল্যে সার্বজনীন ‘বিসিজি টিকা’ দান বাধ্যতামূলক করেছিলেন। শহীদ জিয়ার দূরদর্শী সেই সিদ্ধান্তিটি ছিল রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নাগরিকদের জন্য একটি বিনিয়োগ।

চিকিৎসাবিজ্ঞান সাময়িকী ‘সেল রিপোর্টস মেডিসিনে ‘ .গত ৫ আগস্ট প্রকাশিত নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রেলিয়া, ডেনমার্ক, গ্রিস ও জার্মানির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ২৪ জন বিশেষজ্ঞের একটি গবেষণা নিবন্ধে বলা হয় ‘বিসিজি টিকা’ নেয়া ব্যক্তিদের করোনা-ভাইরাস জনিত অসুস্থতা কম থাকে’ । এ প্রসঙ্গে তারেক রহমান আরো বলেন, সুতরাং এটি প্রমাণিত বিনামূল্যে বাধ্যতামূলকভাবে ‘বিসিজি টিকা’ দেয়ার ব্যাপারে শহীদ জিয়ার সেই দূরদর্শী সিদ্ধান্তটির সুফল পাচ্ছে বাংলাদেশ।

দেশের সার্বিক অবস্থা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং জনসমর্থিত দল হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা বিরোধী দেশি-বিদেশি নানা অপশক্তির ষড়যন্ত্রে দেশে গণতন্ত্রের কবর রচনা করা হয়েছে, মানবাধিকারের কবর রচনা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গত একদশকের বেশি সময় ধরে বিএনপিকে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখার অপচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে, দেশে এখন সরকারি বয়ানের বাইরে জনগণের কিছু বলার কিংবা গণমাধ্যমে স্বাধীন মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই।

তারেক রহমান বলেন, বর্তমানে এক শাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে মানুষের জীবন। একদিকে স্বেচ্ছাচারী শাসকের শোষণে নিষ্পেষিত জনগণ অপরদিকে মরণঘাতি করোনা ভাইরাস কয়েকটি জেলায় বন্যার ভয়াল থাবা আর সবমিলিয়ে দেশে চলছে এক নীরব দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি। বেড়েই চলছে চাল-ডাল-আটা-তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য।

চারদিকে এমন বিপদের মধ্যেও বাংলাদেশের জন্য আরেকটি বড় সমস্যামিয়ানমার থেকে আশ্রয় নেয়া প্রায় ১১ লক্ষ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানুষ।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গা পরিস্থিতি ক্রমেই জাতীয় সংকটে রূপ নিচ্ছে। গত তিন বছরেও বাংলাদেশ একজন রোহিঙ্গাকেও তাদের জন্মভূমি মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে পারেনি। নিশিরাতের সরকারের নতজানু কূটনীতির কারণে রোহিঙ্গা ইস্যু মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক বিশ্বে একা হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ।

তারেক রহমান বলেন, প্রতিটি ঘটনাকেই সরকার হীন দলীয় স্বার্থে ব্যাবহার করতে গিয়ে বারবার দেশকে বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে বিডিআর পিলখানার সুপরিকল্পিত সেনা হত্যাযজ্ঞের বিভীষিকাময় স্মৃতি জনগণ এখনো ভুলে যায়নি,
সেই নারকীয় সেনা হত্যাযজ্ঞে দলীয়ভাবে আওয়ামী লীগ লাভবান হলেও অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে বাংলাদেশের।

তিনি বলেন , বিডিআর বিদ্রোহের নামে পিলখানায় সেনা হত্যাযজ্ঞ না ঘটলে, এতো বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশের দিকে কেউ ঠেলে পাঠানোর সাহস পেতো কিনা কিংবা অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহাকেও এভাবে পুলিশের হাতে নির্মমভাবে প্রাণ দিতে হতো কিনা এ নিয়ে জনমনে এমন জিজ্ঞাসা রয়েছে।

তারেক রহমান বলেন, মেজর সিনহার নির্মম হত্যাকাণ্ডে আবারো প্রমাণিত হয়েছে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে বর্তমান সরকার পুলিশ বাহিনীর ভেতর একটি পেশাদার খুনি গ্রূপ তৈরী করেছে। পুলিশের ইউনিফর্ম পরা ‘পেশাদার খুনি গ্রূপটি’র কাছে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, ভিন্নমতের মানুষ, পেশাজীবী, সাধারণ মানুষ কিংবা সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা সবাই সমান। এই খুনি গ্রূপটি যাকেই খুন করুক তাকে ‘সরকার বিরোধী’ প্রমান করা গেলে সাত খুন মাফ।

তারেক রহমান আরো বলেন, মেজর সিনহা হত্যাকান্ড কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বরংটেকনাফে ওসি প্রদীপের সাম্রাজ্যে এটি তার ২০৫ নম্বর হত্যাকান্ড। শুধু টেকনাফ থানাতেই নয়, দেশের প্রতিটি থানাতেই এভাবে হত্যাকান্ড চলছে। ভিন্ন দল কিংবা মতের হাজার হাজার মানুষকে গুম কিংবা খুন করা হয়েছে, হচ্ছে।

তারেক রহমান বলেন, অবৈধ বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারটি একাধারে প্রায় এগারো বছর ধরে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে আছে। একটি রাজনৈতিক দলের একটানা এতদিন ক্ষমতায় থাকার পর, প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের পরিবর্তে, এতদিন তাদের নিজেদের সাফল্যের কথা বলার মতো সক্ষমতা অর্জন করার কথা ছিল।

অথচ গণতন্ত্র হত্যা, মানুষ খুন, গুম, দুর্নীতি আর টাকা পাচার ছাড়া গর্ব করে বলার মতো এই সরকারের কোনো সাফল্য নেই। তিনি বলেন, গণমাধ্যমে এতদিন তারা ‘উন্নয়ন’ ‘উন্নয়ন’ জিগির তুলতো। অথচ দেখা যাচ্ছে এরা এতদিন জনগণের সঙ্গে শুধু প্রতারণাই করেছে।

বাস্তবতা হলো, প্রতিটি মন্ত্রণালয়, প্রতিটি দপ্তর -অধিদপ্তর, প্রতিটি সেক্টর, প্রতিটি বিভাগ সরকারি বেসরকারি প্রতিটি প্রতিষ্ঠান-ই দুর্নীতি-লুটপাট-অবিচার-অনাচার আর প্রতারণায় নিমজ্জিত। সর্বক্ষেত্রে এমন পাহাড়সম দুর্নীতি-প্রতারণা আর ব্যর্থতার আড়ালে চাপা পড়েছে আওয়ামী লীগের রাজনীতি। রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া আওয়ামী লীগ এখন তাদের ব্যর্থতা থেকে মানুষের দৃষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে অত্যন্ত দৃষ্টিকটুভাবে শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটিকে হঠাৎ করেই আবারো দাবার গুটি হিসেবে ব্যবহার করছে।

তারেক রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকান্ডের বিচার করেছে। বিচারের রায় কার্যকর করতে গিয়ে অভিযুক্তদের একের পর এক ফাঁসির রায়ও কার্যকর করছে। তাই, আমরা মনে করি, এটি এখন একটি মীমাংসিত বিষয় হতে পারতো। কিন্তু সেটি হয়নি বরং দেখা যাচ্ছে আওয়ামী লীগ নিজেরাই সেটি হতে দিচ্ছেনা।

তিনি বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের বিচারের পরও প্রায়শ:ই আওয়ামী লীগ এবং তাদের দোসর জাসদ নিজেরাই একে অপরের সঙ্গে ঝগড়ায় লিপ্ত। শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের সময়কার সেনা প্রধান এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি জেনারেল শফিউল্লাহ প্রকাশ্যেই বলেছেন, শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে শেখ সেলিম জড়িত। পাল্টা জবাবে, শেখ সেলিম খোদ জেনারেল শফিউল্লাহর দিকেই অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছেন।

অপরদিকে আওয়ামী লীগের অভিযোগ শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের জন্য জাসদ দায়ী। আবার জাসদের অভিযোগ শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের দায় আওয়ামী লীগের। তারা প্রমান দিয়ে বলেন, শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের পর গঠিত সরকারের মন্ত্রিসভায় সবাই ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা। শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকান্ড নিয়ে একদিকে তারা নিজেদের মধ্যে বাগযুদ্ধে লিপ্ত অপরদিকে চলছে নিজেদের মধ্যে ক্ষমতার ভাগ-বাটোয়ারা।

তারেক রহমান বলেন, এমন পরিস্থিতির মধ্যেই সম্প্রতি দেখলাম শেখ হাসিনা এবার হঠাৎ করেই শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে স্বাধীনতার ঘোষকের নাম জড়িয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত।

আমরা মনে করি, শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের বিচার সম্পন্ন হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই স্বাধীনতার ঘোষকের সংশ্লিষ্টতার কোনো বিশ্বাসযোগ্য তথ্য প্রমান পাওয়া যায়নি। ফলে, শেখ হাসিনা কিংবা আওয়ামী লীগের …রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যাচারের জবাব দিয়ে… ভিত্তিহীন একটি অভিযোগের গুরুত্ব বাড়ানোর প্রয়োজন আছে বলে বিএনপি মনে করেনা।

কারণ, শেখ হাসিনা কিংবা ওবায়দুল কাদেরের কথায় ইতিহাস রচিত হয়না, ইতিহাস উদ্ভাসিত হয় তার আপন আলোয়। ফলে শেখ হাসিনা কিংবা ওবায়দুল কাদেরের কথায় আওয়ামী লীগ আনন্দিত হতে পারে, কিন্তু মানুষের কাছে শেখ হাসিনা কিংবা ওবায়দুল কাদেরের কথার গুরুত্ব নেই, জনগণ তাদের কথা বিশ্বাসও করেনা। জনগণ যদি তাদের কথা বিশ্বাস করতো তাহলে বারবার তাদেরকে বিনা ভোটে কিংবা নিশিরাতের হিসাব নিকাশে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে হতোনা।

তারেক রহমান বলেন, আওয়ামী অপশক্তির অতীত কার্যকলাপে প্রমাণিত যখনি আওয়ামী লীগ তাদের কোনো ব্যার্থতা আড়াল করতে চায়, গণবিরোধী কোনো অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে চায় কিংবা দেশের স্বার্থ বিরোধী কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করে তখনি তারা একটি অহেতুক ইস্যু সামনে এনে জনগণকে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করে।

তাই এবারও হঠাৎ করেই ‘স্বাধীনতার ঘোষক’ এবং ‘মাদার অফ ডেমোক্রেসি’র বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার উস্কে দিয়ে আওয়ামী লীগ হয়তো দেশ এবং জনগণের স্বার্থবিরোধী কোনো অপতৎপরতায় লিপ্ত। এ ব্যাপারে তারেক রহমান বলেন, ‘দেশপ্রেমিক জনগণের প্রতি আমার আহবান সতর্ক ও সজাগ দৃষ্টি রাখুন’।

তারেক রহমান বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী আওয়ামী লীগ সরকার এবং বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার। দুটি সরকারেরই একই চরিত্র। দলটির শুধু নেতৃত্ব পরিবর্তন হয়েছে, চরিত্র পরিবর্তন হয়নি। শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগকে বলেছিলেন ‘চোরের খনি’ আর সেই ‘চোরের খনি’ এখন শেখ হাসিনার আমলে ‘ডাকাতের খনি’তে পরিণত হয়েছে।

বিএনপি’র ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তিনি সারাদেশে বিএনপি’র সর্বস্তরের নেতা-কর্মী-শুভার্থী-সমর্থক এবং বিশেষ করে দেশপ্রেমিক জনগণকে… শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, দলটি, প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বিশ্বস্ত রাজনৈতিক দল হিসেবে মানুষের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। তিনি বলেন, জনগণ বিশ্বাস করে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল যাদের কাছে বাংলাদেশ নিরাপদ, গণতন্ত্র নিরাপদ, নিরাপদ মানুষের স্বাধীনতা ও সম্মান।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে.স্মরণ করে বলেন, স্বাধীনতার ঘোষক বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবিত করেছিলেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। বিএনপি গঠনের আগে আওয়ামী লীগসহ নিষিদ্ধঘোষিত রাজনৈতিক দলগুলোকে পুনরায় নিজ নিজ দলীয় পরিচয়ে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন।

তারেক রহমান বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার আপোষহীন নেতৃত্ব ও ব্যক্তিত্ব বিএনপিকে পৌঁছে দিয়েছে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া রূপসা থেকে পাটুরিয়া দেশের প্রতিটি এলাকা প্রতিটি অঞ্চলে মানুষের হৃদয়ে। খালেদা জিয়া ‘মাদার অফ ডেমোক্র্যাসি’।
দলের প্রতিষ্ঠাকাল থেকে আরম্ভ করে আজ পর্যন্ত বিএনপির অসংখ্য নেতা কর্মী সমর্থক ইন্তেকাল করেছেন, বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতাসীনদের নির্মমতার শিকার হয়ে প্রাণ দিয়েছেন, তাদের জন্য তিনি মহান আল্লাহর দরবারে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।

তারেক রহমান বলেন, সারাদেশে,দলের বিভিন্ন পর্যায়ের অনেক নেতাকর্মী সমর্থক শুধুমাত্র বিএনপি করার কারণে এই অবৈধ সরকার এবং তাদের লেলিয়ে দেয়া সন্ত্রাসীদের দ্বারা নির্যাতিত হয়েছেন,বছরের পর বছর ধরে হামলা কিংবা মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার হয়েছেন তিনি তাদের সবার প্রতি আন্তরিক সহানুভূতি প্রকাশ এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সহমর্মিতা জানান।

তিনি বলেন, ‘ আমি আবার একটি প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করতে চাই, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বিভিন্ন সময়ে যারা আত্মত্যাগ করেছেন নির্যাতন নিপীড়ণের শিকার হয়েছেন, জনগণের সমর্থনে আগামী দিনে বিএনপি আবারো রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে গণতন্ত্রের জন্য তাদের ত্যাগ ও অবদান অবশ্যই শ্রদ্ধার সঙ্গে মূল্যায়ন করা হবে’।

দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য .আমাদের শ্লোগান আমাদের লক্ষ্য হোক একটিই, দেশনেত্রীর সেই আহবান ‘দেশ বাঁচাও-মানুষ বাঁচাও’ । তাই দেশ বাঁচাতে মানুষ বাঁচাতে কারো আদেশের জন্য অপেক্ষা করার প্রয়োজন নেই,
সময় পরিস্থিতি বিবেচনা করে যার যার নিজ নিজ এলাকায় নিজ নিজ অবস্থান থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে গুম, খুন, অপহরণ-দুর্নীতি- অন্যায়-অবিচার-অনিয়মের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ান।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com