‘গুম নির্যাতন থেকে মুক্তি পেতে হলে ইস্পাত কঠিন প্রাচীর গড়ে তুলতে হবে’: জামায়াতে ইসলামী
সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সরকার গুম হওয়া ব্যক্তিদের ব্যাপারে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
৩০ আগস্ট আন্তর্জাতিক গুম দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ৩০ আগস্ট আন্তর্জাতিক গুম দিবস। এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশনের হিসেব মতে বর্তমান সরকারের আমলে ২০০৯ সাল থেকে ২০২০ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত বাংলাদেশে রাজনৈতিক নেতা-কর্মী-ছাত্রসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মোট ৫ শতাধিক মানুষকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দিয়ে সাদা পোশাকধারী ব্যক্তিরা অপহরণ করে গুম করেছে। তাদের মধ্যে খোঁজ পাওয়া গিয়েছে ২শত ৫০ জনের। অজ্ঞাতবাস থেকে যারা ফিরে এসেছেন তারা কেউই অপহরণকারীদের ব্যাপারে মুখ খোলেননি। অনেকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন।
জামায়াত আমীর বলেন, যারা গুম হয়েছেন তাদের মধ্যে আছেন, বিএনপি’র নেতা জনাব ইলিয়াস আলী, সাবেক কমিশনার চৌধুরী আলম, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আযমের পুত্র সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমী, জামায়াতে ইসলামীর সাবেক নির্বাহী পরিষদ সদস্য শহীদ মীর কাসেম আলীর পুত্র সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আরমান আহমদ বিন কাসেম, হাফেজ জাকির হোসাইন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা আল মোকাদ্দাস, মোহাম্মদ ওলিউল্লাহ।
যারা গুম হয়েছেন তাদের পরিবার-পরিজন অত্যন্ত উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে জীবন যাপন করছেন। অনেকেরই পিতা-মাতা এবং স্ত্রীসহ আপনজন শোকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। গুম হওয়া ব্যক্তিদের তাদের পরিবারের নিকট ফেরত দেওয়ার জন্য সরকারের নিকট আবেদন-নিবেদন করেও কোন ফল পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সরকার গুম হওয়া ব্যক্তিদের ব্যাপারে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। গুম হওয়া ব্যক্তিদের আত্মীয়-স্বজন সাংবাদিক সম্মেলন করে আপনজনকে পরিবারের নিকট ফেরত দেওয়ার জন্য বক্তব্য দেওয়া সত্তে¡ও সরকার কোন সাড়া দিচ্ছেন না।
কার্যত বাংলাদেশে মানুষের সকল অধিকার আজ গুম হয়ে গিয়েছে। গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটের অধিকার, বেঁচে থাকার অধিকার, অন্ন-বস্ত্র-চিকিৎসা এক কথায় মানুষের সকল অধিকার হরণ করেছে বর্তমান সরকার।
এ অবস্থা অনন্তকাল চলতে পারে না। এ থেকে জাতির মুক্তি ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য জাতিকে ইস্পাত কঠিন প্রাচীর গড়ে তুলতে হবে।