সরকারের সাথে বসতে চান হল মালিকরা

0

বন্ধ প্রেক্ষাগৃহ (সিনেমা হল) পুনরায় চালু করতে চাইলে আর্থিকসহ নীতি সহায়তা দেয়ার কথা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনা। গত মঙ্গলবার একনেক সভায় সিনেমা হল মালিকদের সহায়তা করতে বিশেষ তহবিল গঠনের নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। এ সম্পর্কে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, বন্ধ প্রেক্ষাগৃহ বাঁচাতে সরকার আর্থিক ঋণ সহায়তার ব্যবস্থা করে দেবে। এ জন্য প্রেক্ষাগৃহ মালিকদের আবেদন করতে হবে।

তবে আবেদন কোথায় এবং কবে থেকে করা যাবে সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারা জানান, মাত্র একনেকে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। এটা নথি আকারে মন্ত্রণালয়ে আসবে। তারপর কার্যক্রম শুরু হবে। আমাদের হাতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পাওয়া মাত্রই প্রক্রিয়াগত কাজ শুরু হয়। এর চেয়ে বিস্তারিত কিছু আমাদের জানা নেই এখনো। আমরা খবরের মাধ্যমে জেনেছি।

এ দিকে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক ও প্রদর্শক সমিতির নেতাদের সাথে বৈঠকে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে বন্ধ থাকা সিনেমা হলগুলো খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের পর।

তথ্যমন্ত্রীর ওই বৈঠকে চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা সুদীপ কুমার দাস, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু উপস্থিত ছিলেন। তবে এতে প্রেক্ষাগৃহ মালিকদের সরাসরি কোনো প্রতিনিধি রাখা হয়নি।

এ সম্পর্কে মধুমতি সিনেমা হলের কর্ণধার ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগের জন্য ধন্যবাদ। পাশাপাশি ধন্যবাদ দিতে চাই ঢাকা চেম্বারের আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাবটা দিয়েছিলেন। তবে আর্থিক সহায়তার ব্যাপারে সরকারকে হল মালিকদের নিয়ে একটি কমিটি করতে হবে এবং তাদের সাথে আলোচনা করে করণীয় ঠিক করতে হবে। তা না হলে সিনেমা হলের বাস্তবিক কোনো পরিবর্তন হবে না।

তিনি বলেন, শুনলাম ১৫ সেপ্টেম্বরের পর সিনেমা হল খুলে দেয়ার একটা প্রস্তুতি চলছে। তবে হল খোলার আগে কনটেন্ট দরকার। পুরনো সিনেমা দিয়ে আমি হল খুলতে চাই না। ১৫ সেপ্টেম্বরের পর হল চালু করতে হলে ওই দিন দু’টি নতুন সিনেমা মুক্তি দিতে হবে। মধুমিতা পুরনো ছবি দিয়ে হল চালাবে না।
সনি সিনেমা হলের কর্ণধার ও প্রযোজক মোহাম্মদ হোসেন প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, এই সময়ে হল মালিকদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ খুব প্রয়োজন ছিল। প্রধানমন্ত্রী সেই প্রয়োজন অনুধাবন করেছেন। তবে ঠিক এই মহূর্তে সিনেমা হল খোলার পক্ষে নই আমি। আরো কিছু দিন দেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সিনেমা হল চালু করতে হবে। এ জন্য সরকার যদি হল মালিকদের সাথে বসে সিদ্ধান্ত নেন তাহলে ভালো হবে।

স্টার সিনেপ্লেক্সের কর্ণধার মাহবুবুর রহমান রুহেলের সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে যোগাযোগ করা হলে পাওয়া যায়নি। তবে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, সিনেমা হলগুলো বাঁচানের জন্য আমরা সংবাদ সম্মেলন করে সরকারের কাছে সাতটি দাবি জানিয়েছিলাম। তার মধ্যে একটি ছিল প্রণোদনার জন্য। সরকার আমাদের সেই দাবি আমলে নিয়েছে। এটা আমাদের সবার জন্য একটি প্রাপ্তি।

করোনার কারণে গত প্রায় পাঁচ মাস দেশের সিনেমা হলগুলো বন্ধ রয়েছে। এই সময়ে আর্থিক অনটনের কারণে মালিক ও কর্মীদের মধ্যে অনেক দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। কোনো ধরনের আয় না থাকার যুক্তি দেখিয়ে শ্রমিকদের বিনা বেতনে ছুটিতে পাঠিয়েছে অনেক প্রতিষ্ঠান। ফলে প্রেক্ষাগৃহের সরঞ্জামও যত্নের অভাবে নষ্ট হয়েছে। তাই নতুন করে হল চালু করতে হলে বড় রকমের অর্থের প্রয়োজন হবে মালিকদের। বিষয়টি নিয়ে সরকার চিন্তা করছে জানতে পেরে বেশ আনন্দিত বলাকা সিনেমা হলের ম্যানেজার শাহিন। তিনি বলেন, করোনার কারণে গত প্রায় পাঁচ মাস বাসায় বেকার বসে আছি। সরকারের প্রণোদনা পেয়ে হলগুলো যদি আগের মতো করে চালু হয়, তবে শুধু আমরাই উপকৃত হবো তা না, বিনোদনপ্রেমী মানুষ, শিল্পী-কলাকুশলীরাও অনেক উপকৃত হবেন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com