পুরুষদের চেয়ে নারীরা করোনার বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে!
নারীর তুলনায় পুরুষ করোনাভাইরাসে বেশি অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে অথবা মারা যাচ্ছে। দেখা গেছে, কোভিড- ১৯ এ আক্রান্ত বৃদ্ধ বয়সের একজন পুরুষ একই বয়সের একজন নারীর তুলনায় অধিক মৃত্যু ঝুঁকিতে থাকছেন। মহামারি শুরুর দিক থেকেই এ চিত্র দেখা যাচ্ছে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এখনও পর্যন্ত এর যথাযথ কারণ উদঘাটন করতে পারেননি। তবে গবেষকরা এ বিষয়টির ওপর নতুন আলো ফেলতে সক্ষম হয়েছেন বলে জানা গেছে। বুধবার একদল গবেষক এমন দাবিই করেছেন।
জার্নাল ন্যাচারে নতুন এক গবেষণা পত্র প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণাপত্রটির প্রধান লেখক ইয়ালে ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আকিকো আওয়াসাকি বলেন, আমরা দেখেছি কোভিড- ১৯ মোকাবেলায় নারী ও পুরুষ পৃথক প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি করে।
এই বিশেষজ্ঞ আরো বলেন, পুরুষের রোগের উচ্চ সংবেদনশীলতাই এই পার্থক্যের কারণ। গবেষকরা বলছেন, নারীরা সাদা রক্ত কনিকার মতো টি লিম্ফোসাইটস এর মাধ্যমে জোরালো প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি করতে পারে। এর ফলে ভাইরাসটিকে চিহ্নিত ও তাকে নির্মূল করা সম্ভব হয়। এমনকি বয়স্ক নারীদের ক্ষেত্রেও এমনটিই দেখা গেছে।
অপরদিকে বয়স্ক পুরুষদের ক্ষেত্রে টি সেল এক্টিভিটি কম বিধায় তাদের প্রতিরোধ ব্যবস্থাও দুর্বল। এছাড়া কোভিড -১৯ এ মারাত্মকভাবে আক্রান্তরা ‘সাইটোকাইন স্ট্রমের’ শিকার হন। অতিরিক্ত প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরির মাধ্যমে এই স্ট্রম বা ঝড় তৈরি হয়, যা রোগীর জন্যে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষেরা অতিরিক্ত সাইটোকাইন তৈরি করতে পারে। এটি এক ধরণের প্রদাহজনক প্রোটিন, যা শরীরের অন্য প্রতিরোধ অংশ থেকে আসে। যেসব নারীর শরীরেও অতিরিক্ত সাইটোকাইন তৈরি হয় তাকেও ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়। এসব কারণে গবেষণাপত্রের লেখকেরা নারী ও পুরুষের ভিন্ন চিকিৎসারও সুপারিশ করেছেন।
তারা বলছেন, পুরুষদের চিকিৎসায় টি সেল বাড়িয়ে দেয়া এবং নারীদের চিকিৎসায় সাইকোটাইন কমিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করা উচিত। তবে গবেষণাপত্রটির কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে বলে জানা গেছে। কারণ
মাত্র মোট ৯৮ জন রোগীর ওপর এ গবেষণা চালানো হয়েছে। তাদের বয়সও বেশি, গড়ে ৬০ বছর।
যুক্তরাষ্ট্রের ইয়ালে নিউ হ্যাভেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের ওপর এ গবেষণা চালানো হয়।