পুঠিয়ায় চাল ক্রয়ে খাদ্য গুদামের চালবাজি

0

রাজশাহীর পুঠিয়ায় চলতি অর্থ বছরে খোলা বাজারে চাউলের দাম বেশি হওয়ায় খাদ্য গুদামের ক্রয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে খাদ্য গুদাম কর্মকর্তাদের যোগসাজসে স্থানীয় একটি দালাল চক্র কাবিখার নামে বরাদ্দকৃত গুদামে থাকা চাল ক্রয় দেখিয়ে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার গুঞ্জন চলছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছে উপজেলা খাদ্য ক্রয় কমিটি।

উপজেলা খাদ্য গুদাম অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর এই উপজেলায় প্রতি টন ৩৬ হাজার টাকা দরে ৬১৪ মে.টন চাউল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেন খাদ্য বিভাগ। আর চাল ক্রয় চলবে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। কিন্তু সরকার নির্ধারিত দরের চেয়ে খোলা বাজারে দাম বেশি হওয়ায় মিলাররা চাল সরবরাহে আগ্রহী হচ্ছেন না। যার কারণে খাদ্য ক্রয় উদ্বোধনের প্রায় দু’মাস পেরিয়ে গেলেও মাত্র ২৫৫ মে.টন চাল ক্রয় করতে সক্ষম হয়েছেন খাদ্য গুদাম কর্তৃপক্ষ।

অপরদিকে উপজেলার পৌরসভাসহ ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় চলতি অর্থ বছরে কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির অধিনে দু’দফায় মোট ৩০টি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। এতে বরাদ্দ দেয়া হয় ২৮০ মে. টন চাল। কিন্তু বরাদ্দপ্রাপ্ত জনপ্রতিনিধিরা ওই চাউল গুদাম থেকে গ্রহণ না করে তারা প্রতি টন ২০ হাজার টাকা দরে স্থানীয় একটি দালাল চক্রের নিকট বিক্রি করে দেন।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে একাধিক মিলাররা বলেন, এ বছর খোলা বাজারে চাউলের দাম একটু বেশি। তাই এবার সিন্ডিকেট চক্রের নিকট থেকে চাল না পেয়ে খাদ্য গুদাম আমাদের উপর চাপ প্রয়োগ করছেন। কিন্তু খোলা বাজারে যখন দাম কম থাকে তখন খাদ্য গুদাম কমিশন বাণিজ্য করতে দালাল চক্রের মাধ্যমে চাল ক্রয় করেন। এ বছর কোনো মিলারই খাদ্য গুদামে চাউল সরবরাহ করেনি। তবে গুদাম কর্মকর্তার যোগসাজসে একটি চক্র আমাদের মিলের কাগজপত্র নিয়ে গেছেন। তারা ওই কাগজের মাধ্যমে অফিসিয়াল ভাবে ক্রয় দেখালেও মূলত সেগুলো কাবিখার চাউল। দালাল চক্রটি গুদাম কর্মকর্তার সহায়তায় চেয়ারম্যান-মেম্বারদের নিকট থেকে কাবিখার নামে বরাদ্দকৃত চাল ২০ হাজার টাকা টন ক্রয় করেছে। আবার সে চালগুলো ৩৬ হাজার টাকা টন হিসাবে খাদ্য ক্রয় দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে যে চালগুলোর মান খারাপ তা অটোরাইস মেশিনে সাটিং-এর মাধ্যমে পুনরায় গুদামে রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শেখ মোঃ মোফাজ্জল হোসেনের ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এলএসডি গোডাউন জালাল উদ্দীন বলেন, সরকারী ক্রয় মূল্যের চেয়ে বর্তমানে বাজারে দাম বেশি হওয়ায় মিলাররা চাল সরবরাহ করতে আগ্রহী হচ্ছে না। এ পর্যন্ত ২৫৫ মে. টন চাল আমরা কিনেছি। আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত আমাদের চাল ক্রয় চলবে। অপরদিকে দালাল চক্রের মাধ্যমে কাবিখার চাল ক্রয়ের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা খাদ্য ক্রয় কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওলিউজ্জামান বলেন, খাদ্য গুদাম সরাসরি তালিকাভূক্ত মিলারদের নিকট থেকে চাল কিনবেন। সেখানে কাবিখার পুরনো চালগুলো নতুন ক্রয় দেখানোর কথা নয়। তবে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com