বরগুনায় নারী ইউএনওকে হত্যাচেষ্টার মামলা: যুবলীগের সভাপতিসহ গ্রেপ্তার ২

0

বরগুনার আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরা পারভীনের দায়ের করা মামলায় উপজেলা পরিষদ সদস্য এবং আমতলী পৌর যুবলীগের সভাপতি এডভোকেট আরিফ উল হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সরকারি কাজে বাধা ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে গতকাল এই মামলাটি দায়ের করা হয়। এ মামলায় রায়হান নামে আরেক আসামিকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি এডভোকেট আরিফ উল হাসানের সহকারী।

আমতলী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সৈয়দ রবিউল ইসলাম জানান, রোববার বিকালে মামলাটি গ্রহণ করা হয়। গ্রেপ্তার দুই আসামিকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

এদিকে এ মামলাকে ‘ষড়যন্ত্রমূলক ও রাজনৈতিক প্রভাবিত’ মামলা বলে উল্লেখ করে  আরিফ উল হাসানের মুক্তির দাবিতে মিছিল করেছে স্থানীয়-ছাত্রলীগ-যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের একটি অংশ। এছাড়াও জেলা যুবলীগসহ ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ সংগঠনের ব্যানারে আরিফুল হাসানের মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। এ ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিভিন্ন পেশাজীবী নেতৃবৃন্দও।

এ বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আ্যাড. মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, ‘অ্যাড. আরিফুল হাসান সম্পূর্ণ নির্দোষ।

অপরদিকে আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরা পারভীন জানান, শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে সাধারণ যাত্রীদের মাঝে মাস্ক বিতরণের পাশাপাশি লঞ্চে যাতে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন না হয় সে বিষয়ে সরকারি দায়িত্ব পালন করতে আমতলী লঞ্চঘাটে যান তিনি। এসময় তিনি আমতলী থেকে ঢাকাগামী সুন্দরবন-০৭ লঞ্চে ধারণ ক্ষমতার চারগুণ বেশি যাত্রী বোঝাই দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে তিনি আর কোনো যাত্রী লঞ্চে না উঠিয়ে লঞ্চ ছেড়ে দেওয়ার জন্য লঞ্চের সুপারভাইজার মো. মইনুলকে নির্দেশ দেন।

সুপারভাইজার মইনুল তাঁর নির্দেশ অমান্য করে লঞ্চে যাত্রী ওঠাতে থাকেন এবং কেবিনের যাত্রী রয়ে গেছে বলে অপেক্ষা করতে থাকেন। এসময় ইউএনও মনিরা পারভীন পুনরায় সুপারভাইজার মো. মইনুলকে লঞ্চ ছাড়ার কথা বললে ইউএনও মনিরা পারভিনের সঙ্গে তিনি অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং তাঁর নির্দেশ অমান্য করেন। পরবর্তীতে তাঁর সঙ্গে যোগ দিয়ে আমতলীর আইনজীবী ও জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্য অ্যাড. আরিফ উল হাসান এবং তাঁর সহকারী মো. রায়হান তাঁর পাশে থাকা একটি টেবিল ভেঙ্গে ফেলেন এবং ইউএনও মনিরা পারভিনকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। এতে তিনি পায়ে এবং কোমরে আঘাতপ্রাপ্ত হন। এসময় আমতলী থানা পুলিশকে খবর দিলে আমতলী থানার পুলিশ আইনজীবী আরিফ উল হাসান এবং তাঁর সহকারী মো. রায়হানকে আটক করে থানায় নিয়ে যান।

এ ঘটনায় পাল্টাপাল্টি দুটি মিছিল করেছে আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের দুটি পক্ষ। বিকেল ৫টার দিকে আইনজীবী আরিফ উল হাসানের মুক্তির দাবিতে শহরের সাকিব প্লাজার সামনে মিছিল করে আমতলী উপজেলা ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং আওয়ামী লীগের একটি অংশ। এসময় বক্তব্য রাখেন আমতলী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও প্যানেল মেয়র জিএম মুছা, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন খান এবং উপজেলা যুবলগের সভাপতি জিএম উসমানী হাসান।

অন্যদিকে ওই দিন সন্ধ্যার পরে ইউএনওর ওপরে হামলার প্রতিবাদে পাল্টা মিছিল বের করেন আমতলী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. মজিবর রহমান, আমতলী সদর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান মোতাহার উদ্দিন মৃধা, চাওড়া ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান বাদল খান, হলদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম মৃধা, কুকুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন মাসুম তালুকদার এবং আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাংশ।

এ বিষয়ে বরগুনার জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, ‘আমি জেনেছি আমতলীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া হয়েছে, তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়েছে এবং তাকে আহত করা হয়েছে। এ ঘটনায় আমতলীর ইউএনও মনিরা পারভীন ব্যক্তিগতভাবে আমতলী থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com