শফিউল বারী বাবু’র অকাল মৃত্যুতে তারেক-ফখরুলের শোক
আজ ভোর ৪টায় বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিউল বারী বাবু রাজধানীর এ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫১ বছর। তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দু:খ প্রকাশ করেছেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান।
এক শোকবার্তায় বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “দুরারোগ্য ব্যধি ক্যাান্সারে আক্রান্ত হয়ে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু’র মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে ব্যাথিত। তার মৃত্যু এই দু:সময়ে আমাদের সকলের জন্য বেদনার ও কষ্টের। মরহুম শফিউল বারী বাবু ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়ে পরবর্তীতে দলের বিভিন্ন সাংগঠনিক পদে কাজ করেছেন নিরলসভাবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বাক-ব্যক্তি স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র পুণরুজ্জীবনের আন্দোলনে সামিল থেকেছেন তরুণদের নেতা হিসেবে। গণতন্ত্রের প্রতি ছিল তার দায়বদ্ধতা। দলের সকল সংকট কালে তার সাহসী নেতৃত্ব ছিল নেতাকর্মীদের জন্য প্রেরণার। বর্তমান রাজনৈতিক ক্রান্তিকালে সরকারী জুলুম-নির্যাতনের মধ্যেও সাহসের ওপর ভর করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতেন। এই কারণে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের ও তাকে জেল-জুলুমের শিকার হতে হয়েছে। মরহুম শফিউল বারী বাবু ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন ছাত্ররাজনীতিতে এক নতুন মাত্রা নিয়ে এসেছিলেন। সৎ, কর্মীঘনিষ্ঠ ও দক্ষ সংগঠক হিসেবে তার পরিচয় পাওয়া যায় ছাত্রজীবন থেকেই। রাজনীতিকেই জীবনের ব্রত হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন তিনি। দলের কর্মসূচি পালনে তিনি ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ। স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হিসেবে দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে দেশের যেকোন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে উপদ্রুত মানুষের পাশে দাঁড়াতেন। বর্তমান বৈশি^ক মহামারী করোনার থাবায় আতঙ্কিত ও নিরন্ন মানুষের কাছে ত্রাণ তৎপরতায় বাবু যে দৃষ্টান্ত রেখেছেন তা নিঃসন্দেহে অনুকরণীয়। শহীদ জিয়ার জাতীয়তাবাদী দর্শণ ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আপোষহীন নেতৃত্ব ছিল মরহুম শফিউল বারী বাবু’র পথ চলার প্রেরণা।
তার এই অকাল মৃত্যুতে আমি শোক জানানোর ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। আমি দোয়া করি মহান আল্লাহ যেন তাকে বেহেস্ত নসিব করেন।
আমি তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকাহত পরিবার-পরিজন, আত্মীয়স্বজন, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।”
অপর এক শোকবার্তায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, “বিএনপি’র রাজনীতির এক নির্ভিক সৈনিক ছিলেন মরহুম শফিউল বারী বাবু। দলের সকল ক্রান্তিকালে শফিউল বারী বাবু দায়িত্ব পালন করতেন অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে। স্বৈরশাহীর নিপীড়ণ-নির্যাতন সহ্য করেও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার সংগ্রামে মরহুম বাবু থাকতেন সামনের কাতারে। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি আইনের শাসন, মানবিক মর্যাদা, মৌলিক-মানবাধিকারসহ গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে গেছেন দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে। বাবু’র রাজনৈতিক চিন্তা ছিল দেশ ও দশের পক্ষে। তাই ছাত্ররাজনীতি শেষ করার পর স্বেচ্ছাসেবক দলের দায়িত্ব গ্রহণ করে দেশের যেকোন প্রাকৃতিক দুর্যোগকবলিত এলাকায় সহায়তা দানের জন্য অসহায় মানুষের পাশে ছুৃটে যেতেন। নানা বাধার মুখেও মরহুম বাবু দলকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করতে অদম্য সাহসিকতার সাথে কাজ করে গেছেন। দুরারোগ্য ব্যধি ক্যান্সারের আঘাতে তার মতো একজন যোগ্য ও দক্ষ নেতা না ফেরার দেশে চলে যাওয়ায় বিএনপি’র সকল নেতাকর্মী শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েছে। ছাত্রজীবন থেকে শহীদ জিয়ার আদর্শ ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আপোষহীন নেতৃত্বে অনুপ্রাণিত হয়ে দলের সাংগঠনিক তৎপরতায় নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছিলেন। এই জন্য নিবেদিতপ্রাণ এই নেতাকে সইতে হয়েছে সরকারী নানা শারিরীক ও মানসিক জুলুম-নির্যাতন। তার এই সংগ্রামী ভূমিকার জন্য তিনি দলের নেতাকর্মী ও দেশবাসীর কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
দেশে করোনার আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকেই নিজের জীবনকে বিপন্ন করে নিরন্ন কর্মহীন মানুষের পাশে বারবার ত্রান সামগ্রী নিয়ে দাঁড়িয়েছেন সাবেক এই ছাত্রনেতা। অকালে পৃথিবী থেকে তার চলে যাওয়া দলের জন্য বড় ধরণের ক্ষতি। আল্লাহ তাকে জান্নাত নসিব করুন।
আমি তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকার্ত পরিবার, আত্মীয়স্বজন, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।