‘চুরি কমানোর সুযোগ থাকলেও সরকার করেনি’

0

সরকার একটি সুযোগ পেয়েছিল সব ব্যয়ের হিসাব নেওয়ার। যেখানে ব্যয়গুলি অপব্যয় হচ্ছিল। চুরি যেখানে বেশি হচ্ছে সে খরচগুলো কমানোর সুযোগ হয়েছিল। ক্যাটাগরিক্যালি খরচগুলো আর একটু দেরিতে করতে পারতো। এটা না করে তারা যেভাবে কাজ করছে তাতে মনে হচ্ছে বছরটা যেন একেবারেই স্বাভাবিক। এটা যে অস্বাভাবিক বছর, ৩শ বছরে এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি, এটা তাদের হয়তো বোঝার ক্ষমতা নেই।

সোমবার (১৫ জুন) বিকেলে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ অ্যান্ড কমিউনিকেশনের (বিএনআরসি) আয়োজনে ‘বাজেট ২০২০-২১ পর্যালোচনায় গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া একথা বলেন। ভার্চ্যুয়াল এ পর্যালোচনা অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি জহির উদ্দিন স্বপন।
 
অর্থনীতিবিদ রেজা কিবরিয়া বলেন, এবছর জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ২ দেখাচ্ছে এবং সামনের বছর ৮ দশমিক ২। এটা না হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। যেখানে এবছর সারা পৃথিবীর অর্থনীতি ৬ শতাংশ কমে যাবে সেখানে এ ধরনের সংখ্যা দেওয়া ঠিক না। মিডলইস্ট থেকে ওয়ার্কাররা ফেরত আসছে। আমাদের গার্মেন্টসের অর্ডার ৫০ শতাংশে নেমে এসেছে। তার ভেতরে এ ধরনের পরিসংখ্যান মানুষকে আশা শুধু দেওয়া না, কথাগুলিরতো একটা ভিত্তি থাকতে হবে। অর্থমন্ত্রী যখন একটা কথা বলেন, তার কথার ওপরে মানুষের আস্থা থাকতে হবে।

বিদেশ থেকে টাকা পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এই সময়ে যখন সারা বিশ্ব সমস্যায় আছে তখন তাদের কাছ থেকে বেশি কিছু আশা করা ঠিক হবে না। কারণ তারা নিজেরাই সমস্যায় আছে। আমাদের দেশেও বেশি সম্পদ নেই। আমাদের আছে শুধু জনবল। কিন্তু সেই জনবলকে বাঁচিয়ে রাখার মতো কিছু দেখছি না। 

গরিব মানুষকে সরকারি ত্রাণ ও নগদ টাকা দেওয়ার বিষয়টি কী কারণে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হাতে দেওয়া হলো প্রশ্ন করে গণফোরামের এই নেতা বলেন, তারা মনে হয় ৭৪ এর দুর্ভিক্ষের কথা ভুলে গেছেন। ত্রাণ দেওয়ার কাজটা আরও শক্তিশালী এবং দুর্নীতিমুক্ত করা উচিত ছিল।

মানুষের আয় ও ব্যয়ের বৈষম্য অনেক বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিছু মানুষ তাদের বাচ্চাকে এক বেলা খাওয়াতে পারে, আর কিছু মানুষ প্রাইভেট প্লেনে লন্ডন চলে যায়। এটা হলো বাংলাদেশ। ৪৩ শতাংশ মানুষের কোনো সেভিংস নেই, বিক্রি করার মতোও কোনো সম্পদ নেই। তাদের অর্থনৈতিক ক্ষতি হয় না, কিন্তু তাদের না খেয়ে থাকতে হয়।  

তিনি বলেন, এই বাজেট পড়ে মনে হয়েছে যে আমরা অলরেডি করোনা ভাইরাস মোকাবিলা করে ফেলেছি। আসলে এটার মোকাবিলা হয়নি কিন্তু মনে হয় যে আমরা মোকাবিলা করে ফেলেছি। সেভাবে কাজ করছি।
 
ঢাবির সাবেক অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, বাজেটে ধনী গরিবের বৈষম্য কীভাবে কমানো যায় সে সম্পর্কে কোনো দিক নির্দেশনা নেই। আমরা দ্রব্যমূল্য যে কমাতে চাচ্ছি এমন কোনো কিছু সরাসরি দেখছি না। ফলে বৈষম্য আরও যে বাড়বে সেটা সহজে অনুমেয়।
 
এই বাজেট পর্যালোচনায় আরও বক্তব্য দেন, বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু, অর্থনীতিবিদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর ড. আবু আহমেদ।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com