সৌদি আরবে প্রিন্স ফয়সালকে গুম করা হয়েছে: এইচআরডব্লিউ
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাব্লিউ) দাবি করেছে, প্রয়াত সৌদি বাদশাহ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজের ছেলে প্রিন্স ফয়সালকে গুম করে নির্জন কারাবাসে রাখা হয়েছে। সংস্থাটি তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মার্চ মাসের শেষের দিকের পর তাকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি।
সৌদি যুবরাজ ফয়সাল বিন আব্দুল্লাহ আল সৌদি দেশটির মানবাধিকার সংস্থা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি প্রধান ছিলেন। তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা একটি সূত্রের বরাত দিয়ে এইচআরডব্লিউ শনিবার জানিয়েছে, সৌদি কর্তৃপক্ষ হয়ত জোরপূর্বকভাবে দেশটির সাবেক রাজা আব্দুল্লাহর পুত্র প্রিন্সকে গুম করে রেখেছে।
হিউম্যান রাইট ওয়াচ জানিয়েছে, সৌদি কর্তৃপক্ষ প্রিন্স ফয়সাল বিন আব্দুল্লাহ আল সৌদকে এক মাস ধরে আটকে রেখেছে এবং তখন থেকেই তাকে নির্জন কারাবাসে রাখা হয়েছে।
এইচআরডাব্লিউর মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক উপ পরিচালক মাইকেল পেইজ বলেছেন, ‘চারদিকে ব্যাপক সমালোচনা সত্ত্বেও বিতর্কিত যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের শাসনামলে সৌদি কর্তৃপক্ষের বেআইনি আচরণ বেড়েই চলেছে। এখন সৌদি আরবে শত শত ব্যক্তিকে বিনা কারণে আটকে রাখা ব্যক্তিদের নামের তালিকায় যুবরাজকে ফয়সালকেও আমাদেরকে অন্তর্ভুক্ত করতে হচ্ছে।’
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরায় প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ২০১৭ সালেও তথাকথিত দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের সময় রিয়াদের একটি বিলাসবহুল হোটেল থেকে ফয়সাল গ্রেফতার হন। পরে অবশ্য সৌদি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সাবেক এই প্রধানকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এই প্রতিবেদন নিয়ে সৌদি কর্তৃপক্ষের তরফে এখনও কোনও মন্তব্য করা হয়নি। গত মার্চে সৌদির ডি-ফ্যাক্টো নেতা ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশে রাজ পরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্য ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ধরপাকড় অভিযান শুরু হয়।
যুবরাজ সালমানের এই ধরপাকড় অভিযানে কিছুদিন আগে সৌদি রাজপরিবারের প্রভাবশালী সদস্য ও বাদশাহ সালমানের সবচেয়ে ছোট ভাই প্রিন্স আহমেদ বিন আব্দুল আজিজ এবং সাবেক ক্রাউন প্রিন্স ও দেশটির সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন নায়েফকেও গ্রেফতার করা হয়।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বাবা সৌদি বাদশাহ সালমানের মৃত্যুর পর ক্ষমতার পথ কণ্টকমুক্ত করতে যুবরাজ ক্রাউন প্রিন্স সালমান এই অভিযান শুরু করেছেন। তিনি ক্রাউন প্রিন্স হওয়ার পর থেকেই দফায় দফায় এই গ্রেফতার ও দমন চলছেই।