তৃতীয় দিনের মতো উত্তপ্ত কাশ্মিরে ভারতবিরোধী সংঘর্ষ অব্যাহত

0

বিরোধপূর্ণ কাশ্মিরে তৃতীয় দিনের মতো ভারতবিরোধী বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। সরকারি বাহিনীর হাতে এক শীর্ষস্থানীয় বিদ্রোহী নেতা নিহত হওয়ার পর এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

বিদ্রোহী নেতা রিয়াজ নাইকু ও তার সহকারী গত বুধবার দক্ষিণ আওয়ানতিপুরা এলাকায় ভারতীয় সৈন্যদের সাথে এক বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। 

কাশ্মিরের বেশ কয়েকটি এলাকায় সংঘর্ষ হয়েছে। শুক্রবারও তা অব্যাহত থাকে। বিক্ষোভকারীরা সরকারি বাহিনীকে লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করে। আর সরকারি বাহিনী পেলেট গান ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। 

এসব সংঘর্ষে অন্তত একজন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে বলে অধিবাসী ও চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন অর্ধ শতাধিক লোক। আহত বেশির ভাগ লোকের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে স্থানীয়ভাবে।

তবে অন্তত ডজনখানেক লোককে শ্রীনগরের হাসপাতালে নেয়া হয়েছে চিকিৎসার জন্য। পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক একথা বলেন।

অধিবাসীরা বলেন, সরকারি বাহিনী বৃহস্পতিবার নিহত বিদ্রোহী নেতার গ্রামের বাড়িতে বিপুল সংখ্যায় অবস্থান নেয়। মৃত ব্যক্তির জন্য শোক প্রকাশ করতে যে তাঁবু নির্মাণ করা হয়েছিল, সরকারি বাহিনী তা গুঁড়িয়ে দিয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেছে। এর ফলেও বড় ধরনের বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ ওই বিদ্রোহী নেতা ও তার সহকর্মীর লাশ পরিবারগুলোর হাতে হস্তান্তর না করে গ্রামটি থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে একটি পার্বত্য এলাকার কবরে সমাহিত করেছে। লাশ দাফনকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের বিক্ষোভ হতে পারে, এমন আশঙ্কায় সরকার এ সিদ্ধান্ত নেয়।

কর্তৃপক্ষ সেলফোন ও মোবাইল ইন্টারনেট সার্ভিস বুধবার থেকে বন্ধ রেখেছে। বিক্ষোভ প্রশমনে সরকার এমন কৌশল সবসময় গ্রহণ করে থাকে। তারা পূর্ণাঙ্গ তথ্য ব্ল্যাকআউট করে, পরিস্থিতি সম্পর্কে মিডিয়া ব্রিফিং করতে অস্বীকৃতি জানায়।

সাম্প্রতিক করোনাভাইরাস লকডাউনের মধ্যে ভারত অধিকৃত কাশ্মিরে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে দমন অভযান জোরদার করেছে সেনাবাহিনী। বিদ্রোহীরা সেনা ও তাদের চরদের উপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।

হিমালয়ান রাজ্য কাশ্মিরের পুরো অংশের উপর মালিকানা দাবি করে আসছে ভারত ও পাকিস্তান। বর্তমানে অঞ্চলটি আংশিকভাবে দুটি দেশই নিয়ন্ত্রণ করছে। কাশ্মিরে গণঅভ্যুত্থান শুরুর পর ১৯৮৯ সাল থেকে সেখানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর দমন অভিযানে ৭০,০০০-এর বেশি মানুষ নিহত হয়।

ভারতীয় শাসনের বিরুদ্ধে বেশিরভাগ কাশ্মিরির ক্ষোভ প্রচণ্ড। তারা হয় পাকিস্তানের সঙ্গে এক হতে অথবা স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে বিদ্রোহীদের দাবিকে সমর্থন করে। 

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com