করোনায় হতাশ তরুণরা উগ্রবাদে ঝুঁকতে পারে: জাতিসংঘ মহাসচিব

করোনা ভাইরাসের কারণে উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিতে পারে বলে সতর্ক করে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, করোনা মহামারির কারণে কট্টরপন্থী গোষ্ঠীগুলো তরুণদের হতাশা ও ক্ষোভকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে। এর ফলে একটি প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা সামাল দিতে পারবে না বিশ্ব।

গত সোমবার (২৭ এপ্রিল) এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই সতর্কবার্তা দিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে বিশ্বের প্রতি পাঁচজন তরুণের মধ্যে একজন বেকার বসে আছেন। তাদের পড়াশোনা নেই, কোনো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেই, নেই কোনো চাকরি বা কাজ। এ ছাড়া প্রতি চারজন তরুণের মধ্যে একজন সহিংসতা অথবা সংঘাতের শিকার।

পাঁচ বছর আগে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে তরুণ, শান্তি ও নিরাপত্তার ওপর পাস হওয়া একটি ঐতিহাসিক প্রস্তাবের পর্যালোচনা করতে গিয়ে এসব মন্তব্য করেন জাতিসংঘের মহাসচিব গুতেরেস।

ভিডিও কনফারেন্সে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদেশগুলোর উদ্দেশে গুতেরেস বলেন, করোনা সংকট শুরু হওয়ার আগেও সারা বিশ্বের তরুণরা অবিশ্বাস্য এক চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন। যারা ক্ষমতায় আছেন, তারা বিষয়টি চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। এর ফলে তরুণরা প্রচলিত রাজনীতি ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার ওপর থেকে আস্থা হারাচ্ছেন।

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, করোনার মতো এই ধরনের ঘটনা যখন ঘটে, তখন উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলোর জন্য তরুণদের হতাশা ও ক্ষোভকে কাজে লাগানো সহজ হয়ে যায়। ফলে উগ্রবাদের ঝুঁকি অনেকটা বেড়ে যায়।

গুতেরেস বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যেই লক্ষ করেছি, উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলো কোভিড-১৯-এর সংক্রমণের কারণে লকডাউনের সুযোগ নিচ্ছে। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে। এসব প্ল্যাটফর্মে ঘৃণা ছড়াচ্ছে তারা। ফলে মহামারির কারণে লকডাউনের ফলে যেসব তরুণ ঘরে বসে থাকছেন এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন, তাদের নিজেদের দলে ভেড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে উগ্রবাদীরা।’

তিনি বলেন, করোনা মহামারির কারণে এই তরুণরা পিছিয়ে যাচ্ছেন। করোনা মোকাবিলায় তরুণদের শক্তি ও মেধাকে কাজে লাগানোর জন্য জাতিসংঘের সদস্যদেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

জাতিসংঘ মহাসচিব এমন সময়ে এই কথা বললেন, যখন জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ জানিয়েছে, এই করোনা মহামারির কারণে ১৫৪ কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

তরুণদের প্রশংসা করে গুতেরেস বলেন, এত সীমাবদ্ধতার মধ্যেও তরুণরা করোনা মোকাবিলার লড়াইয়ে যুক্ত হয়েছেন, সম্মুখসারির যোদ্ধাদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছেন। বর্তমান অবস্থার পরিবর্তনের জন্য প্রতিনিয়ত কাজ করছেন তরুণরা।