ধর্মীয় স্বাধীনতা বিপন্ন ভারতে, কালো তালিকাভুক্ত করল মার্কিন সংস্থা
ধর্মীয় স্বাধীনতা বিপন্ন বলে ভারতকে কার্যত কালো তালিকাভুক্ত করল ইউনাইটেড স্টেটস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম বা ইউএসসিআইআরএফ।
ভারতকে তারা ‘কান্ট্রিজ অফ পারটিকুলার কনসার্ন’ (অর্থাৎ যে সব দেশের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক) তালিকায় রেখেছে। আর মার্কিন প্রশাসনের কাছে তাদের সুপারিশ, তারা ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক। ব্যবস্থা নেওয়া মানে, ভারতের বিরুদ্ধে বেশ কিছু ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা এবং যাঁদের জন্য ধর্মীয় স্বাধীনতার বিপদ দেখা দিয়েছে, তাদের মার্কিন ভিসা না দেয়া। সংগঠনের তালিকায় ভারতসহ মোট ১৪টি দেশের নাম আছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পাকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, ইরান, নাইজিরিয়া, সৌদি আরব, রাশিয়া, সিরিয়া, ভিয়েতনামের মতো দেশ। ২০০৪ সালের পর থেকে ভারতের নাম কখনওই তালিকায় ছিলো না।
ইউএসসিআইআরএফ-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, ”ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধন আইন পাস করা হয়েছে। তার ওপর সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, সারা দেশে এনআরসি বা নাগরিকপঞ্জি করা হবে। আসামের অভিজ্ঞতা বলছে, দেশজুড়ে এনআরসি হলে প্রচুর মানুষ নাগরিকত্ব হারাবেন। অ-মুসলিমদের জন্য সিএএ-র সুরক্ষা আছে। সে ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে দেশজুড়ে এনআরসি হলে শুধুমাত্র মুসলিমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।”
নরেন্দ্র মোদি সরকার অবশ্য এই রিপোর্টকে খারিজ করে বলেছে, ”রিপোর্ট পুরোপুরি একপেশে। ভারতের বিরুদ্ধে এই সংগঠনের এই ধরনের মত নতুন কিছু নয়। কিন্তু এই বার মিথ্যা বর্ণনা নতুন স্তরে চলে গেছে। এই সংগঠনের একেবারে নির্দিষ্ট লোকেদের জন্য উদ্বেগ রয়েছে। আমরাও এই রিপোর্টকে সেই ভাবে নেব।”
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ”ভারতে ২০১৯ এ ধর্মীয় স্বাধীনতার অবস্থা ভয়ঙ্করভাবে নিচের দিকে নেমেছে। মে মাসে বিজেপি আবার ক্ষমতায় আসার পর থেকে তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে কাজে লাগিয়ে এমন আইন পাস করেছে, যার ফলে ভারতে ধর্মীয়স্বাধীনতার অবস্থা খারাপ হয়েছে, বিশেষ করে মুসলিমরা তার ফল ভোগ করছেন।”
প্রশ্ন হলো, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর এই রিপোর্টের কোনো প্রভাব পড়বে কি? বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের সঙ্গে মোদির সম্পর্ক খুবই ভালো। তা ছাড়া ভোটে জেতার জন্য তার আমেরিকান ইন্ডিয়ানদের সমর্থন দরকার। প্রধানমন্ত্রী মোদি ওই সমর্থন তাকে পাইয়ে দিতে পারেন। তাছাড়া ভারতের বিশাল বাজার আমেরিকার কোম্পানিগুলো কখনওই হারাতে চায় না।
এর আগেও ট্রাম্প সিএএ, এনআরসি নিয়ে মন্তব্য এড়িয়ে গিয়েছেন। এই রিপোর্টেরও কোনো প্রভাব তার ওপর পড়ার সম্ভাবনা কম।
সূত্র : ডয়চে ভেলে