বাংলাদেশে আ.লীগের রাজনীতি করার কোনও অধিকার নেই: হাফিজ

0

আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটি মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, যারা এই দেশের গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়েছে, যারা দেশে রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করেছে, যারা হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে শিশু হত্যা করেছে, যারা রাজপথে সাধারণ মানুষকে গুলি করে খড়কুটোর মতো উড়িয়ে দিয়েছে, যাদের কারণে ভারতীয় সেনাবাহিনী বাংলাদেশে অবাধ বিচরণ করেছে— বাংলাদেশে সেই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার কোনও অধিকার নেই বলে আমি মনে করি।

রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে সেন্টার ফর সোশ্যাল স্টাডিজ আয়োজিত ‘বাংলাদেশ রাষ্ট্রের পুনর্গঠন ও জন-মালিকানা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন উদ্দিন আহমেদ বলেন, রাজনীতিবিদদের একটা বড় অংশ দুর্নীতিবাজ এতে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু কয়েকটা নির্বাচন হলে পরিশীলিত হয়ে যাবেন তারা। ছাকনির মতো দুর্বৃত্তরা বেরিয়ে যাবে, খাঁটি মানুষরা সামনে উঠে আসবে। তাদেরকে সুযোগ দেন। এই যে তিন- চারটি নির্বাচন করে গেলো শেখ হাসিনার আমলে। এগুলো কি নির্বাচন হলো? এগুলোতে কি পেয়েছি আমরা? এভাবে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা বিশ্বের কোনও সরকার করেনি। কীভাবে ব্যাংক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। কীভাবে পুলিশ বাহিনীকে একটা দুর্বৃত্ত বাহিনীতে পরিণত করেছে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি জনগণের মধ্যে থেকে উঠে আসা একটি রাজনৈতিক দল। নির্বাচন এলেই দেখবেন, এই দলের জনপ্রিয়তা আছে কী নেই। তবে রাষ্ট্র সংস্কার করার নিশ্চয়ই প্রয়োজন আছে। এই দেশের সরকারগুলো কেন একের পর এক জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে ব্যর্থ হয় ? একজন ক্ষুদ্র রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমার মনে হয় যে, আমাদের সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে দুর্নীতি শিকড় গেঁড়ে বসেছে। ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতি দমন করতে আমরা যথেষ্ট পদক্ষেপ নিতে পারি না। ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিস্টেম বাংলাদেশে থাকতে হবে। প্রধানমন্ত্রী হোক, রাষ্ট্রপতি হোক, যেই হোক— ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় দুর্নীতি করলে তাকে জেলে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। এমন শক্তিশালী হতে হবে দুর্নীতি দমন কমিশনকে। এই ধরনের ব্যবস্থা আমাদের সংবিধানে সুনির্দিষ্ট করতে হবে।

মেজর অব. হাফিজ বলেন, রাষ্ট্রের মালিকানা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। আমরা এখন আর এই রাষ্ট্রের মালিক নই। আমরা হলাম দাস। মালিক হলো যারা ক্ষমতায় যায়, ভোটের মাধ্যমে বা বিনা ভোটে, যেভাবেই হোক। একটা মাইন্ডসেট গড়ে উঠছে যে বা যারা ক্ষমতায় যাবে, কেবিনেটে বসবে, মন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রী হবে, তারা হলো রাষ্ট্রের মালিক। আর আমরা বাকি সবাই হলাম প্রজা। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের ব্যবস্থা করতে হবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘এত রক্তপাতের পর এত ত্যাগ তিতিক্ষার পর যে উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হলো, এদের বেশিরভাগেরই বিপ্লবী চরিত্র নেই। প্রফেসর ইউনূস থেকে শুরু করে কেউই তো বিপ্লবে অংশগ্রহণ করেননি, শুধু আসিফ নজরুলকে দেখেছি। আর কারাভোগ করেছেন আদিলুর রহমান খান। তো এই দুজনকে ধরে নিতে পারি আগের সরকারের বিরুদ্ধে সরব প্রতিবাদে তারা ছিলেন।’

এসময় দ্রুত নির্বাচনের কথা জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে যে ৩১ দফা দিয়েছি— তার মধ্যে থেকে ছয়টি দফা এই সরকার গ্রহণ করেছে, ছয়টি কমিশন করেছে। আমরা আশা করবো, কমিশনগুলোর মাধ্যমে তারা বিদ্যমান রাষ্ট্র ব্যবস্থার সংস্কার করতে পারবে। তবে দীর্ঘ সময় নেবেন না। সংস্কার করতে ১০-২০ বছর লাগাবেন না। অতি অল্প সময়ের মধ্যে নির্বাচনি ব্যবস্থা সংস্কার করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দেন।’

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com