লেবাননে লকডাউনে চরম সংকট, ব্যাংকে হামলা লুটপাট
মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্ম, খাদ্য সংকটসহ নানা সমস্যা লকডাউনের কারণে তীব্র হয়ে ওঠায় রাজপথে বিক্ষোভ করেছে লেবাননের হাজার হাজার মানুষ। এ সময় দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় শহর ত্রিপোলিতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে একজনের প্রাণহানি ঘটেছে। বিক্ষোভকারীরা ব্যাংকে হামলা চালিয়ে লুটপাট চালানোর সময় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা বলছে, লেবাননের উত্তরাঞ্চলের ত্রিপোলিতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সহিংস সংঘর্ষে একজন নিহত ও আরও কয়েক ডজন আহত হয়েছেন। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা গোলাবারুদ, রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে।
সোমবার দেশজুড়ে হাজার হাজার মানুষ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় এবং ত্রিপোলির একটি ব্যাংকে হামলা চালায়। দেশটিতে দ্রুতগতির মুদ্রাস্ফীতির কারণে ক্ষোভ থেকে ব্যাংকে হামলা হয়েছে বলে বিক্ষোভকারীদের অনেকে অভিযোগ করেছেন। তারা বলেছেন, মুদ্রার অবমূল্যায়ন ঘটায় লাখ লাখ মানুষ বেতন এবং ব্যাংকে জমাকৃত অর্থের অর্ধেক হারিয়েছেন।
সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ফাতিমা ফুয়াদ নামের এক তরুণীর ভাই ফুয়াজ ফুয়াদ আল সিমান মারা গেছেন বলে ওই তরুণী ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে নিশ্চিত করেছেন। সেনাবাহিনী বলছে, বিক্ষোভ থামাতে সেনাবাহিনী গোলাবর্ষণ এবং আকাশে ফাঁকা গুলি নিক্ষেপ করেছে।
লেবানন স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখে পড়েছে চলতি বছরে। সম্প্রতি করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে দেশজুড়ে লকডাউন জারি করায় অর্থনৈতিক দুর্দশা এই দেশটিতে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
খাবারের তীব্র সংকট ও মৌলিক নিত্যপ্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হয়ে জীবন বাঁচানোর তাগিদে দেশটির হাজার হাজার মানুষ রোববার থেকে বিক্ষোভ করে আসছেন। সোমবার ত্রিপোলিতে বিক্ষোভকারীরা জ্বালাও-পোড়াও ও সহিংস হয়ে উঠলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা টিয়ারগ্যাস ও গোলাবর্ষণ করে।
ত্রিপোলির দুই ডজনেরও বেশি স্থানে এই বিক্ষোভ হয়েছে। লেবাননের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর নর্দার্ন ত্রিপোলিতে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। এই সময় বিক্ষোভকারীরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভের এক পর্যায়ে স্থানীয় একটি ব্যাংকে হামলা চালিয়ে লুটপাট করে।
লেবানন সেনাবাহিনী বলছে, বিক্ষোভ দমন এবং সড়ক থেকে উত্তেজিত জনতাকে সরিয়ে দেয়ার সময় অন্তত ৫৪ সেনাসদস্য আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪০ জনই ত্রিপোলিতে আহত হয়েছেন।
মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৭১৭ জন করোনা রোগী পাওয়া গেছে। এছাড়া এই ভাইরাসে মারা গেছেন ২৪ এবং সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৪৫ জন।
সূত্র: আলজাজিরা, রয়টার্স।