আফগানিস্তানে করোনা মহামারীর শঙ্কায় মার্কিন সেনাদের প্রত্যাহার করা উচিত

0

যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে মহামারী করোনাভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কার মধ্যে দেশটি থেকে সব মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার করার জন্য সামরিক ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের চাপ দিয়ে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দুই বর্তমান ও এক সাবেক সিনিয়র মার্কিন কর্মকর্তার বক্তব্যে এ তথ্য জানা গেছে।

কর্মকর্তারা বলেন, ট্রাম্প প্রায় প্রতিদিনই অভিযোগ করছেন যে এখনো আফগানিস্তানে মার্কিন সৈন্যরা রয়েছে এবং তারা এখন মহামারীর সামনে অবস্থান করছে। তিনি আশঙ্কা করছেন যে আফগানিস্তানে থাকা হাজার হাজার মার্কিন সৈন্য শিগগিরই করোনাভাইরাসের সুরক্ষা শঙ্কায় পড়বে। তিনি তালেবানের সাথে শান্তিচুক্তির স্থবির অবস্থা কাটানোর ওপরও জোর দিচ্ছেন।

তবে প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টারা তাকে বলছেন যে করোনাভাইরাসের কারণে যদি আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যহার করতে হয়, তবে ইতালি থেকেও প্রত্যাহার করা প্রয়োজন পড়বে। কারণ ইতালিতে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ মাত্রায় রয়েছে।

প্রশাসনের এক কর্মকর্তা ও অপর এক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেন, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের বিষয়টি আলোচনায় রয়েছে। তবে খুব সম্ভবত মার্কিন সৈন্যদের আফগানিস্তানের একটি বা দুটি ঘাঁটিতে এনে রাখা হবে।

মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, আফগান সরকার করোনার ব্যাপারে যে পরিসংখ্যান দিচ্ছে, সত্যিকারের অবস্থা তার চেয়ে ১০ গুণ খারাপ বলে তারা মনে করছেন। সোমবার পর্যন্ত আফগান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, কোভিড-১৯-এ ১,৭০৩ জন শনাক্ত হযেছে, ৫৭ জন মারা গেছে।

কিন্তু মার্চে আফগান স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফিরোজউদ্দিন ফিরোজ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছিলেন যে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে আফগানিস্তানের অর্ধেক মানুষ এতে সংক্রমিত হতে পারে এবং মারা যেতে পারে এক লাখের বেশি। 

বিশ্বের সবচেয়ে গরিব দেশগুলোর একটি হলো আফগানিস্তান। এখানকার স্বাস্থ্য কাঠামোও খুবই নাজুক। সরকার ইরান-সংলগ্ন হেরাতে ১০০ শয্যার একটি হাসপাতাল নির্মাণ করছে। দেশটিতে সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম ও ভেন্টিলেশনের অভাবও রয়েছে।

আফগানিস্তান থেকে অবশ্য মার্কিন সৈন্য প্রত্যহারের কাজ শুরু হয়ে গেছে। মার্চের প্রথম দিকে মার্কিন সৈন্য ১২ হাজার থেকে কমিয়ে ৮,৬০০ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। তবে পরিকল্পনার চেয়েও দ্রুত গতিতে সৈন্য প্রত্যাহার চলছে বলে মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন।

ট্রাম্প ২০১৬ সালের নির্বাচনী প্রচারণার সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তিনি আফগান যুদ্ধের অবসান ঘটাবেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি এ লক্ষ্যে তালেবানের সাথে চুক্তিও করেছন। 

তবে শান্তিচুক্তিটি বাস্তবায়নে জটিলতা দেখা দিয়েছে। তবে বাধা দূর করতে গত মাসে ট্রাম্প তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেইওকে কাবুল পাঠিয়েছিলেন।

আফগানিস্তানবিষয়ক বিশেষ মার্কিন দূত জালমি খালিলজাদ অব্যাহতভাবে অঞ্চলটি সফর করছেন শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের জন্য। উভয় পক্ষই শান্তি ত্বরান্বিত করার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com