অবশেষে ট্রাম্পের প্রেস ব্রিফিং বাতিল

0

মহামারি আকার ধারণ করা করোনাভাইরাসের চিকিৎসা নিয়ে উদ্ভট পরামর্শ এবং প্রায় প্রতিদিনই গণমাধ্যমকে ‘ফেইক নিউজ’ হিসেবে মন্তব্য করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রথম দিকে ম্যালেরিয়া রোগের ইনজেকশনকে করোনা প্রতিরোধে মহৌষধ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার ‘জীবাণুনাশক’ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় জীবাণুনাশক কোম্পানির পক্ষ থেকে তাৎক্ষনিকভাবে সর্বসাধারণকে সতর্ক করে দেয়া হয় যে, জীবাণুনাশক’কে ইনজেকশন হিসেবে দেহে প্রবেশ অথবা মুখ দিয়ে খেলে প্রচণ্ড প্রতিক্রিয়া হবে, যা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির জীবননাশেরও কারণ হতে পারে। 

এর পরিপ্রেক্ষিতে বিব্রত হোয়াইট হাউজসহ করোনাভাইরাস ট্রাস্কফোর্সের শীর্ষ কর্মকর্তারা। পুনরায় প্রেস ব্রিফিংকালে গণমাধ্যমের মুখোমুখী হতে হবে, যার কোন সঠিক জবাব দেয়া সম্ভব হবে না। অধিকন্তু চলমান মহামারির পরিপ্রেক্ষিতে জনগণকে ভ্রান্ত তথ্য প্রদানের জন্যে আরো জটিল অবস্থা তৈরি হতে পারে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। নভেম্বরের নির্বাচনে যার প্রভাব পড়তে বাধ্য। এরফলে হোয়াইট হাউজের নেতৃত্ব ধরে রাখা দূরের কথা ইউএস সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠতাও হাত ছাড়া হতে পারে বলে ঘনিষ্ঠজনরা ট্রাম্পকে কনভিন্স করতে সক্ষম হওয়ার পরই শনিবার থেকে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ের কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে বলে শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে। যদিও হোয়াইট হাউজের আনুষ্ঠানিক কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অথচ করোনা পরিস্থিতিকে নভেম্বরের নির্বাচনে ট্রাম্পের বিজয়ের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছিল রিপাবলিকানরা-এমন মন্তব্য রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। মার্চে থেকে শুরু নিয়মিত প্রেসব্রিফিং হলো না শনিবার (২৫ এপ্রিল)। ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের নেতৃত্বে গঠিত হোয়াইট হাউজ করোনাভাইরাস টাস্কফোর্সের উদ্যোগে এই ব্রিফিং হয় টানা ৫০দিন বিকেলে। এতে সর্বশেষ পরিস্থিতি এবং প্রশাসনের কার্যক্রম উপস্থাপন করা হতো। সারা আমেরিকার মানুষ টিভি, অনলাইন, রেডিওতে নজর রাখতেন প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনার জন্য। কিন্তু বৃহস্পতিবারের ‘করোনা সারতে জীবাণুনাশক’ এবং ‘গ্রীষ্মের রোদ অথবা হাই পাওয়ারের লাইট করোনা রোধে সক্ষম’ এমন মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সারা আমেরিকায় সৃষ্ট নিন্দা, প্রতিবাদ, ধিক্কার শুরু হওয়ায় শুক্রবার ট্রাম্প, ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং টাস্কফোর্সের কর্মকর্তা কথা বলার পর প্রশ্নোত্তর পর্ব বাতিল করা হয়।  

শনিবার প্রেস ব্রিফিং না হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে হোয়াইট হাউজে বারংবার যোগাযোগের পর নাম গোপন রাখার শর্তে এক কর্মকর্তা জানান, প্রতিদিনই ব্রিফিং করার পরিকল্পনা থেকে সরে গেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। 

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ট্রাম্পের ঐসব মতামত বা বক্তব্যকে ‘মজা করার জন্যে তিনি করেছিলেন’ বলে শুক্রবার দুপুরের আগে এক সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে জানানো হয়। এর আগে হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি এক ব্যাখ্যায় উল্লেখ করেছিলেন যে, ট্রাম্পের বক্তব্যকে বিকৃত করেছে কোন কোন গণমাধ্যম। প্রেস সেক্রেটারি ক্যালি ম্যাকইনানী বলেন, প্রেস ব্রিফিংয়ের ব্যাপারটি নিতান্তই প্রেসিডেন্টের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে। তাই আমেরিকানদের স্বার্থে তিনি প্রয়োজন হলেই সরাসরি কথা বলবেন।

বৃহস্পতিবারের ‘কবিরাজি’ স্টাইলের উদ্ভব মতামত প্রকাশের ঘটনাকে ধামাচাপ দেয়ার অভিপ্রায়ে দেশব্যাপী সমালোচনার পর ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় উল্লেখ করেছেন যে, উদ্ভুত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে হোয়াইট হাউজের প্রেস কনফারেন্সে এসে কোন কোন গণমাধ্যম উদ্ভব প্রশ্নের অবতারণা করেন এবং পরবর্তীতে বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রেখে রিপোর্ট প্রকাশ বা প্রচার করেন না। এর ফলে আমেরিকানরা সঠিক তথ্য জানতে সক্ষম হন না। ওরা সবসময়ই ফেইক নিউজ করছে। এভাবে সময় অপচয়ের প্রয়োজন হয় না। 

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com