বিশ্বজোটে একঘরে ট্রাম্প

0

করোনার টিকা তৈরি ও বিতরণে ডব্লিউএইচওর মহাপরিকল্পনা চলমান করোনা ভাইরাস মহামারীর জেরে বিশ্বজুড়ে প্রাণহানি অব্যাহত আছে।  আজ রোববার সকাল পর্যন্ত কোভিড-১৯ রোগে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা ২ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। আক্রান্তের সংখ্যা পেরিয়ে গেছে সাড়ে ২৯ লাখ।

এই রোগে গত শুক্রবার ২৪ ঘণ্টাতেই মারা গেছে ৬ হাজারের বেশি মানুষ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছে ৫৮ হাজারের বেশি। এমন পরিস্থিতিতে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে এর পরীক্ষার কিট এবং তৈরি হওয়া মাত্র প্রতিষেধক, ওষুধ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়ার মহাপরিকল্পনা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। যার সঙ্গে একমাত্র মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ছাড়া ঐকমত্যে পৌঁছেছেন সব বিশ্বনেতা।

গত শুক্রবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভা থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ মহাপরিকল্পনার কথা জানান ডব্লিউএইচও-প্রধান ডা. ডেড্রোস অ্যাডহানম গেব্রিয়েসুস। পরে ভিডিও কনফারেন্সেই তার এ পরিকল্পনার প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন বিশ্বনেতারা।

করোনা নিয়ে তথ্য গোপন ও চীনের মদদে দেরিতে তৎপরতা শুরুর অভিযোগে এরই মধ্যে ডব্লিউএইচওর বার্ষিক ৫০০ মিলিয়ন ডলারের তহবিল বন্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া এ ইস্যুতে বারবার ডব্লিউএইচও-প্রধান ডা. গেব্রিয়েসুসের পদত্যাগের দাবি তুলছে দেশটি।

সঙ্গত কারণেই ডব্লিউএইচওর মহাপরিকল্পনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, জেনেভায় নিযুক্ত মার্কিন প্রতিনিধি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, এই পরিকল্পনায় যুক্তরাষ্ট্রের অংশগ্রহণ থাকবে না। তবে এ উদ্যোগের দিকে তারা দৃষ্টি রাখবে।

গত শুক্রবার এক বক্তব্যে ডা. গেব্রিয়েসুস বলেন, নভেল করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক, চিকিৎসাসেবা, পরীক্ষা কিট বিশ্বেও প্রতিটি মানুষের মানুষের কাছে অবশ্যই সমতার ভিত্তিতে সহজলভ্য করতে হবে।

কোভিড-১৯ প্রতিরোধ ও চিকিৎসার কার্যকর ওষুধ, পরীক্ষা এবং প্রতিষেধক তৈরির গতি বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন দেশ যুগান্তকারী সহযোগিতা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফুসফুসের এই রোগ সবার জন্য হুমকি। একে পরাজিত করতে হলে আমাদের সম্মিলিত উপায় অবলম্বন করতে হবে। তাই এর প্রতিষেধক ও ওষুধ আবিষ্কার জরুরি। যদিও আমাদের অভিজ্ঞতা বলছে, যখন নতুন কোনো কিছু তৈরি হয় তখন সেটি সবার জন্য সমানভাবে সহজলভ্য হয় না। করোনার প্রতিষেধকের ক্ষেত্রে আমরা এটা ঘটতে দিতে পারি না।

ডা. গেব্রিয়েসুসের পরে এ নিয়ে অনলাইনে কথা বলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন, আফ্রিকান ইউনিয়নের (এফইউ) চেয়ারম্যান সিরিল রামাফোসাসহ এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর নেতারাও। এ সময় ধনী-গরিব নির্বিশেষে বিশ্বের প্রত্যেক ব্যক্তির রোগ শনাক্ত, চিকিৎসা ও প্রতিরোধে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ৮০০

কোটি ডলারের তহবিল সংগ্রহের আশ্বাস দেয় ইউরোপীয় কমিশন। এ উপলক্ষে আগামী ৪ মে যুক্তরাজ্যের নেতৃত্বে এক বৈশ্বিক অনলাইন সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। যাতে অ্যাঙ্গেলা মেরকেল, ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, ধনকুবের বিল গেটসসহ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

এদিকে গতকাল এক বিবৃতিতে ডব্লিউএইচও বলেছে, করোনা ভাইরাসে একবার কেউ আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয়বার ফের আক্রান্ত হয়নি এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ফলে সুস্থ হয়ে যাওয়া রোগীদের যেসব দেশ ঝুঁকিমুক্ত বলে সনদ দিচ্ছে, সেগুলোর কোনো নিশ্চয়তা ডব্লিউএইচওর পক্ষ থেকে দেওয়া সম্ভব নয়।

এর আগে গত সপ্তাহে চিলি ঘোষণা দেয় করোনা আক্রান্ত যেসব রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন, তাদের ‘স্বাস্থ্য পাসপোর্ট’ দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে একবার যদি কারোর শরীরে ভাইরাসটি প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়, তা হলে সে তাৎক্ষণিকভাবে কাজে যোগ দিতে পারবে।

এ বিষয়ে ডব্লিউএইচও বলছে, এমন কোনো সার্টিফিকেট কাউকে দেওয়া হলে তাতে নতুন সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়বে। কারণ তখন সুস্থ হওয়া রোগীরা ভাইরাস প্রতিরোধে নেওয়া সাধারণ সতর্কতা মানবে না।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com