সামাজিক দূরত্বে থাকতে হবে কিন্তু মানসিক ঐক্যও দরকার -জোনায়েদ সাকি
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেছেন, করোনাভাইরাস সংকটের এ সময়ে সামাজিক দূরত্বে থাকতে হবে। কিন্তু মানসিক ঐক্যও দরকার। তিনি বলেন, ব্যাপক মানসিক এবং জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
জোনায়েদ সাকি বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। অসংখ্য মানুষ আক্রান্ত ও অসংখ্য মানুষ মৃত্যুবরণ করেছেন। বিশ্ব অর্থনীতিও গভীর সংকটে পড়েছে। বাংলাদেশেও ইতিমধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে। বর্তমানে মানুষের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। তিনি বলেন, দেখতে পাচ্ছি করোনায় যারা আক্রান্ত তাদের প্রতি একটি বিদ্বেষী মনোভাব। তাদের চিকিৎসা থেকে শুরু করে কবর দেওয়া নিয়ে একটি অমানবিক এবং নিষ্ঠুর পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। আমাদের সবার খেয়াল রাখা প্রয়োজন যে, আমরা যে কেউ করোনায় আক্রান্ত হতে পারি। কাজেই আমাদের দরকার ব্যাপক সহানভূতি, সহমর্মিতা এবং একটি প্রবল মানসিক ঐক্য। যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে করোনা কমিয়ে আনা সম্ভব হয়। মানুষকে নিজগৃহে থাকতে বলার নির্দেশনাটি ব্যাপকভাবে কার্যকর করা দরকার, কেননা নিজগৃহে থাকলেই কেবলমাত্র সংক্রমণকে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারব। জোনায়েদ সাকি বলেন, ডাক্তারদের রক্ষা করতে না পারলে হাহাকার সৃষ্টি হবে। করোনা রোগীর পরীক্ষা আরও বেশি বাড়ানো দরকার। প্রয়োজনে স্টেডিয়াম, স্কুল, কমিউনিটি সেন্টার লিজ নিয়ে সরকার প্রাথমিক চিকিৎসা চালাতে পারে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মতো যারা কিট তৈরি করছে তাদের সহযোগিতা করা দরকার। এ ছাড়া আলেম-ওলামাসহ প্রতিটি ধর্মের ধর্মীয় প্রধানদের সহযোগিতা নেওয়া যেতে পারে। তিনি বলেন, সংকট মোকাবিলার জন্য সমন্বিত ঐক্য দরকার। অর্থনীতিবিদদের নিয়ে সমন্বিত পরিকল্পনা করার এখনই সময়। সরকার একলা চলো নীতি অনুসরণ করলে জাতি বিপদে পড়বে। সর্বদলীয় কমিটি গঠন করা যেতে পারে। শ্রমিকদের মার্চ-এপ্রিল মাসের বেতনের নিশ্চয়তা দিতে হবে। শ্রমিকরা রাস্তায় নামছে। বিষয়টি নির্মম। নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারলে নৈরাজ্য তৈরি হতে পারে। আর খাদ্য বিতরণের জন্য ইউনিয়ন, ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত প্রশাসনকে যুক্ত করতে হবে। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবক তৈরি করা যেতে পারে। মাইকিং হবে কেউ বাইরে আসবে না। খাবার ঘরে যাবে। প্রতিবেশী দেশ ভারতেও এটা হচ্ছে। এভাবে সংক্রমণ কমানো সম্ভব। তিনি বলেন, সংকট মোকাবিলায় দুই থেকে তিন মাসের জন্য ৫০ থেকে ৬০ হাজার কোটি টাকায় দুর্যোগকালীন বাজেট ঘোষণা দরকার। এ ছাড়া দেশে খাদ্য সংকট মোকাবিলার জন্য সরকারকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি জানান, দেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর থেকে তাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে মাস্ক, স্যানিটাইজার, পিপিই, খাদ্য বিতরণ করা হচ্ছে। জীবাণুনাশক ছিটানো হচ্ছে। এ ছাড়া যেসব এলাকায় পুরোপুরি লকডাউন সেখানে সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ওষুধসহ বাজার পৌঁছে দিচ্ছে।