খালেদা জিয়া কারও অনুকম্পায় মুক্তি চান না : ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া কারও অনুকম্পায় মুক্ত হবেন না। তিনি অবশ্যই তার যে হক, তার যে ন্যায্য অধিকার, এ মামলাতেও তার জামিন পাওয়ার যে অধিকার, সেই অধিকারে তিনি মুক্ত হবেন। বেআইনি মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে আটক রাখা যাবে না। জনগণ তাদের প্রিয় নেত্রীকে অবশ্যই আন্দোলনের মধ্য দিয়েই বের করে নিয়ে আসবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এ মানববন্ধন হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রীকে মুক্ত করার জন্য, গণতন্ত্রকে মুক্ত করার জন্যে আজকে পেশাজীবীরা মাঠে নেমেছেন। আসুন দলমত নির্বিশেষে সবাই বেরিয়ে এসে একাত্ম হয়ে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার সংগ্রাম এবং গণতন্ত্রের প্রতীক খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ হই। আমরা গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে নিয়ে আসি।
দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় খালেদা জিয়ার অবদানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এ নেত্রী গণতন্ত্রের আকাক্সক্ষার মূর্ত প্রতীক। তার রাজনৈতিক জীবনে প্রতিটি মুহূর্ত গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছেন, লড়াই করেছেন। নেত্রী এ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তিনি তার স্বামীকে হারিয়েছেন, যিনি ছিলেন এ দেশের স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতির জিয়াউর রহমান বীর-উত্তম এবং এ গণতন্ত্রের জন্য ১৯৭১ সালে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর হাতে গ্রেফতারও হয়েছিলেন, নির্যাতিত হয়েছিলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া সেই স্বৈরাচার এরশাদ ক্ষমতায় আসার পর থেকে নিরন্তর সংগ্রাম করেছেন ৯ বছর, গণতন্ত্রকে মুক্ত করার জন্য। তারপর গণতন্ত্রকে মুক্ত করে তিনি জনগনের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়েই প্রথম যে কাজটি করেছিলেন সেটি হচ্ছে বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে এনেছিলেন। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার কাজ করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার বিষয়ে ‘সুখবর’ শুনতে চায় বিএনপি- এমন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী গেছেন ভারতে। আমরা সব সময় আশা করে থাকি যে, ভারতের সঙ্গে এ সরকারের নাকি সবচেয়ে সুউচ্চ সম্পর্ক। পর্বতের শৃঙ্গের মতো সম্পর্ক। তো বারবার আমরা হতাশ হই। প্রধানমন্ত্রী যতবার যান, ফিরে আসার পর দেখি মূল সমস্যাগুলোর সমাধান হয় না। কিন্তু আমরা দিয়ে আসি একেবারে উজাড় করে।
তিনি বলেন, আজকেও জনগণ আশা করবে, তিস্তাসহ সব অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা বাংলাদেশ পাবে- এমন সুখবর প্রধানমন্ত্রী নিয়ে আসবেন। আমরা আশা করব- আমাদের সীমান্তে যে হত্যা হচ্ছে, তা বন্ধ হয়ে যাবে।
ভারতের চলমান নাগরিকপুঞ্জির বিষয়টি তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা আশা করব আমাদের বাংলাদেশিদের নিয়ে যখন ভারতের মন্ত্রী ও নেতারা বিভিন্ন রকম কথা বলেন যে, আসাম থেকে বের করে দেয়া হবে, বের করে দেয়া হবে উত্তর প্রদেশ থেকে। তখন স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে, নাগরিক হিসেবে আমরা উদ্বিগ্ন হই। এজন্য উদ্বিগ্ন হই যে, আমাদের কোনো মানুষ ভারতে গেছে বলে আমরা মনে করি না।
আমরা মনে করি এটা এক ধরনের ষড়যন্ত্রের কথা, যা দিয়ে বাংলাদেশের ওপরে আরও একটা বড় রকমের চাপ সৃষ্টি হতে পারে। এমনিতেই যে রোহিঙ্গা সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে, তা সমাধানে এ সরকার ব্যর্থ হয়েছে। এখন পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাকেও তারা ফেরত পাঠাতে পারেনি।