অনিশ্চয়তার মধ্যেই জাপানে পৌঁছলো অলিম্পিক মশাল
করোনা ভাইরাসের প্রভাবে টোকিও অলিম্পিক নিয়ে অনিশ্চয়তার কথা বলছেন অনেকে। যদিও ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নিয়ে এশিয়ার প্রায় প্রত্যেকটি দেশ নির্ধারিত সময়ে অলিম্পিক আয়োজন নিয়ে আশার কথা শুনিয়েছে। সময়মতোই এই বিশ্ব ক্রীড়াযজ্ঞ আয়োজনের ব্যাপারে প্রত্যয়ী জাপান। এর মধ্যেই গতকাল দেশটিতে পৌঁছলো অলিম্পিক মশাল।
মশাল গ্রহণের অনুষ্ঠান ছিল অনাড়ম্বর। যদিও দিনটির জন্য আয়োজনের কোনো কমতি ছিল না জাপান সরকারের। তবে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থমকে দিয়েছে সব। একটি চার্টার্ড বিমানে করে ২০১১ সালের সুনামিতে বিপর্যস্ত মিয়াগি রাজ্যের মাতসুশিমা এয়ার বেইজে নেয়া হয় অলিম্পিক মশাল। বিমান থেকে মশাল গ্রহণ করেন জাপানের সাবেক দুই পদক জয়ী অলিম্পিয়ান সোওরি ইয়োশিদা ও তাদাহিরো নমুরা।
এরপর তারা মশাল নিয়ে যান চেরি ফুলে সজ্জিত মঞ্চে থাকা অতিথিদের সামনে।
এ সময় দুইশোর মতো স্থানীয় শিশু অলিম্পিক মশালকে স্বাগত জানায়। অলিম্পিক মশালের আনুষ্ঠানিক রিলে শুরু হবে আগামী ২৬শে মার্চ ফুকুশিমার জে-ভিলেজ স্পোর্টস কমপ্লেক্স থেকে। সূচি অনুযায়ী ২৪শে জুলাই পর্দা ওঠার কথা টোকিও অলিম্পিকের। শেষ হওয়ার কথা ৯ই আগস্ট। কিন্তু করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মুখে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই ক্রীড়া ইভেন্ট পিছিয়ে দেয়ার দাবি তুলেছেন অনেকে। যদিও সময়মতোই অলিম্পিক আয়োজনের ব্যাপারে আশাবাদী জাপান কর্তৃপক্ষ।
করোনা-ভাইরাস সারা বিশ্বে যে ভয়াল থাবা বাড়িয়েছে তাতে প্রশ্নটা ক্রমেই বড় হয়ে উঠছে। সময়মতো টোকিওতে ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ হবে তো? চারদিকে উড়ে বেড়াচ্ছে সংশয়ের মেঘ- মহামারিতে রূপ নেয়া করোনা ভাইরাসের কারণে স্থগিত হয়ে যেতে পারে এবারের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক। সংশয় প্রকাশ করেছেন খোদ জাপানের উপ-প্রধানমন্ত্রী তারো আসো। তিনি তো টোকিও অলিম্পিককে ‘অভিশপ্ত’ই বলে দিয়েছেন। তারো আসোর অবশ্য উল্টোপাল্টা মন্তব্য করার ব্যাপারে একটা ‘খ্যাতি’ আছে আগে থেকেই। তবে গত বুধবার সংসদীয় কমিটির কাছে টোকিও অলিম্পিককে অভিশপ্ত বলার পেছনে একটি যুক্তিও তিনি দাঁড় করিয়েছেন। ‘এটা একটা সমস্যা আর এমনটা ঘটে প্রতি ৪০ বছরে। এটা অভিশপ্ত অলিম্পিক যা সত্য’- বলেছেন তিনি। যুক্তি দিতে গিয়ে তিনি ফিরে গেছেন পেছনে। ১৯৪০ সালে টোকিও আয়োজক হয়েছিল গ্রীষ্মকালীন ও শীতকালীন অলিম্পিকের। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে তা অনুষ্ঠিতই হতে পারেনি। এর চল্লিশ বছর পর ১৯৮০ সালে মস্কো যখন আয়োজক হলো অলিম্পিকের, সোভিয়েত ইউনিয়নের আফগানিস্তান আক্রমণের প্রতিবাদে সেই অলিম্পিক বর্জন করলো যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান এবং আরও কিছু দেশ। এদিকে বিশ্ব অ্যাথলেটিকসের প্রধান সেবাস্তিয়ান কো স্বীকার করেছেন যে কেউই বলতে পারেন না যাই ঘটুক না কেন গেমস হবে। ২০১২ লন্ডন অলিম্পিক গেমসের দায়িত্বে থাকা কো বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে যেকোনও কিছুই সম্ভব। ক্রীড়াঙ্গন এখন যে অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে, আর সেদিন আইওসি ও অন্য ফেডারেশনগুলোর আলোচনায় যে উত্তাপ অনুভব করলাম, তাতে কেউই বলতে পারেন না যাই হোক না কেন গেমস হবে।’ অলিম্পিক ও বিশ্ব অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপ একসঙ্গে আয়োজন সম্ভব কি না এমন প্রশ্নে রেডিও ফোরের অনুষ্ঠানে কো বলেছেন, ‘এমন সম্ভাবনা মোটেও নেই, এটা যদি আমি বলি তা হবে হাস্যকর। আমরা এমন এক পরিবেশের মধ্যে আছি যেখানে দ্রুতই সবকিছু বদলে যাচ্ছে।’