কিভাবে চিনবেন আম ফরমালিনমুক্ত নাকি যুক্ত?

0

জেটিভি ডেস্ক: এবার রোজা আর পাকা আমের মৌসুম চলছে একসঙ্গে। ইফতারে এবং সেহেরিতে আম দিয়ে দুধ আত, আহা!!অন্যদিকে বাজার সয়লাব নানান প্রজাতির আমে। যেমন: হিমসাগর, ফজলি, ল্যাংড়া, আম্রপালিসহ হরেক রকম।

আর অনেকরেই প্রিয় ফল যে আম, এটা বলাই বাহুল্য। ফলের রাজা আম খেতে যেমন সুস্বাদু ও রসালো তেমনি পুষ্টিগুণের দিক থেকেও অতুলনীয়। ছোটো বড় সব বয়সী মানুষের কাছেই এটি একটি জনপ্রিয় ফল। কিন্তু আমের সঙ্গে আপনার আমার শরীরে বিষ ঢুকছে না তো!

বাজারে পাওয়া অধিকাংশ আমের মধ্যেই ব্যবহার করা হয় ফরমালিন ও কার্বাইড নামের রাসায়নিক পদার্থ। মূলত আমকে সঠিক সময়ের আগে পাকানো, আকর্ষণীয় রঙ ও বেশিদিন পচনরোধ করার জন্যই এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী এই অনন্য ফলটিকে বিষাক্ত করে তুলছে। যা খেয়ে কিডনিসহ বিভিন্ন প্রাণঘাতি রোগ ছড়াচ্ছে মানুষের মধ্যে। আর এই ফরমালিন ও কীটনাশক মেশানোর কারণে এত সুস্বাদু ফলটিই এখন মানুষ খেতে ভয় পায়।

তাহলে চলুন ফরমালিনমুক্ত আম চেনার উপায় জেনে নেওয়া যাক।

ফরমালিনমুক্ত আম: কীটনাশক এবং ফরমালিনমুক্ত আমে কাচাপাকা রং হয়। আমের গায়ে সাদাটে ভাব থাকবে, কালো কালো দাগও থাকবে, আমের বোটায় সুঘ্রাণ থাকবে, মুখে দিলে টক-মিষ্টি স্বাদ পাওয়া যাবে, আমে মাছি বসবে। আবার কিছু আম আছে যা পাকলেও রং সবুজই থাকে, এদের গায়ে কালো কালো দাগ থাকবে, সুঘ্রাণ থাকবে।

ফরমালিনযুক্ত আম: আমগুলো দেখতে সম্পূর্ণ হলুদ হবে। দেখতে খুব সুন্দর হবে, চকচকে দেখা যাবে। কোনো দাগ থাকবে না, মোলায়েম দেখাবে। কোনো ঘ্রাণ নেই বরং হালকা দুর্গন্ধ থাকবে, কোনো স্বাদ থাকবে না, আমের উপর কখনো মাছি বসে না।

আসুন আরো একটু বিস্তারিত ভাবে ফরমালিন ও কার্বাইড নামের রাসায়নিক পদার্থ দেয়া আম চেনার উপায় জেনে নেই।

১. প্রথমেই লক্ষ্য করুন যে আমের গায়ে মাছি বসছে কি না। কেননা ফরমালিনযুক্ত আমে মাছি বসবে না।

২. আম গাছে থাকা অবস্থায় বা গাছ পাকা আম হলে লক্ষ্য করে দেখবেন যে আমের শরীরে এক রকম সাদাটে ভাব থাকে। কিন্তু ফরমালিন বা অন্য রাসায়নিকে চুবানো আম হবে ঝকঝকে সুন্দর।

৩. কারবাইড বা অন্যকিছু দিয়ে পাকানো আমের শরীর হয় মোলায়েম ও দাগহীন। কেননা আমগুলো কাঁচা অবস্থাতেই পেড়ে ফেলে ওষুধ দিয়ে পাকানো হয়। গাছপাকা আমের ত্বকে দাগ পড়বেই।

৪. গাছপাকা আমের ত্বকের রঙে ভিন্নতা থাকবে। গোঁড়ার দিকে গাঢ় রঙ হবে, সেটাই স্বাভাবিক। কারবাইড দেয়া আমের আগাগোড়া হলদেটে হয়ে যায়, কখনো কখনো বেশি দেয়া হলে সাদাটেও হয়ে যায়।

৫. হিমসাগর ছাড়া আরো নানা জাতের আম আছে যেগুলো পাকলেও সবুজ থাকে, কিন্তু অত্যন্ত মিষ্টি হয়। গাছপাকা হলে এসব আমের ত্বকে দাগ পড়ে। ওষুধ দিয়ে পাকানো হলে আমের শরীর হয় মসৃণ ও সুন্দর।

৬. আম নাকের কাছে নিয়ে ভালো করে শুঁকে কিনুন। গাছ পাকা আম হলে অবশ্যই বোটার কাছে ঘ্রাণ থাকবে। ওষুধ দেয়া আম হলে কোনো গন্ধ থাকবে না, কিংবা বিচ্ছিরি বাজে গন্ধ থাকবে।

৭. আম মুখে দেয়ার পর যদি দেখেন কোনো সৌরভ নেই, কিংবা আমে টক/মিষ্টি কোনো স্বাদই নেই, বুঝবেন যে আমে ওষুধ দেয়া।

৮. আম কেনা হলে কিছুক্ষণ রেখে দিন। এমন কোথাও রাখুন যেখানে বাতাস চলাচল করে না। গাছপাকা আম হলে গন্ধে মৌ মৌ করে চারপাশ। ওষুধ দেয়া আমে এই মিষ্টি গন্ধ হবেই না।

অবশেষে একটা কথায় বলবো, আসুন আমরা নিজেরা সচেতন হয়। আমাদের সচেতনতায় আমাদের অসাধু মনটাকে বশে আনতে পারে এবং এইসব অসাধু ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com