অন্তর্বর্তী সরকারকে এখন থেকেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় যেতে হবে: আমীর খসরু
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে এখন থেকেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা সরকারে থাকলে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব পালন সম্ভব নয়।
আমীর খসরু বলেন, দেশ-বিদেশে সবাই এখন একটাই প্রশ্ন করছেন: বাংলাদেশে নির্বাচন কবে হবে? নির্বাচিত সরকার ছাড়া ১৫ মাস ধরে দেশ চলছে, যা অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘মুক্তিযোদ্ধা দল’-এর আলোচনা সভায় বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এখন দেশে কোথাও কোনো জবাবদিহিতা নেই। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, শিক্ষাঙ্গন, প্রশাসন-সবখানেই জবাবদিহির ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। বর্তমান সরকারের কাছে জনগণের কোনো প্রত্যাশা নেই, কারণ তাদের ম্যান্ডেট নেই।
আমীর খসরু মনে করেন, যত দ্রুত সম্ভব জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে। নির্বাচিত সরকার না থাকায় সব ক্ষেত্রেই এক ধরনের চাপ তৈরি হয়েছে। যাদের যাওয়ার কথা, তারা এখনও পদে বসে আছেন।
নির্বাচনের বিষয়ে আমীর খসরু বলেন, নির্বাচন নিরপেক্ষ হতে হবে। কারণ, নিরপেক্ষতাই নির্বাচনের প্রথম শর্ত। এতদিন আমরা নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্যই আন্দোলন করেছি। নিরপেক্ষতা না থাকলে অপশক্তি শক্তিশালী হয়।
তিনি দাবি করেন, এই সরকারকে এখন থেকেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। সরকারের কিছু ব্যক্তি নিয়োগ ও পদায়নে প্রভাব খাটাচ্ছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত-তারা সরকারে থাকলে অন্তর্বর্তী সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব পালন করতে পারবে না।
আমীর খসরু বলেন, বর্তমান সরকারের এখন কোনো বড় সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত নয়; তাদের দৈনন্দিন কাজে মনোযোগী থাকা প্রয়োজন। বড় সিদ্ধান্ত নিলে প্রশ্ন উঠবে।
বিএনপির ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি রাস্তায় নামতে পারত, কিন্তু আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাই না। এখন যেতে হবে জনগণের কাছে, ইশতেহারে দাবি নিয়ে। শান্তিপূর্ণ পরিবর্তনই বিএনপির লক্ষ্য। তবে সরকারের ভেতরের কিছু লোকের কারণে পরিস্থিতি বিঘ্নিত হলে সেটি সরকারেরই সম্মানহানি ঘটাবে। তাই অন্তর্বর্তী সরকারকে এখন থেকেই তত্ত্বাবধায়কের মুডে যেতে হবে।
দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করে আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয়ে কারো হস্তক্ষেপ বরদাশত করা হবে না।