মাঝরাতে দরজায় ধাক্কাধাক্কি করে ওরা, হয়রানির অভিযোগ তনুশ্রীর
বলিউডে ‘হ্যাশট্যাগ মি টু’ আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটেছিল তাঁর হাত ধরেই। ২০১৮ সালে অভিনেতা নানা পাটেকরের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে পুরো ইন্ডাস্ট্রিকে নাড়িয়ে দিয়েছিলেন অভিনেত্রী তনুশ্রী দত্ত। এবার তিনি আবার শিরোনামে। তবে এবার অভিযোগ কর্মক্ষেত্র নয়, নিজের বাড়ি নিয়েই। তাঁর দাবি, চার থেকে পাঁচ বছর ধরে সেখানেই ভয়ানক হয়রানির শিকার হচ্ছেন তিনি। এ বিষয়ে তিনি পুলিশের হস্তক্ষেপ চান।
ইনস্টাগ্রামে এক ভিডিও পোস্ট করে তনুশ্রী বলেন, ‘নিজের বাড়িতে হয়রানির শিকার হচ্ছি। আমি এখনই পুলিশকে ডেকেছিলাম, ভয় পেয়ে ডেকেছিলাম। পুলিশ এসে থানায় গিয়ে অভিযোগ জানাতে বলেছে। সম্ভবত কাল বা পরশু যাব। আমি খুবই অসুস্থ। গত চার থেকে পাঁচ বছরে এত হয়রানি সহ্য করেছি যে শরীরটাই ভেঙে পড়েছে।’
ভিডিওতে তনুশ্রী আরও অভিযোগ করেছেন, বাড়িতে তিনি গৃহকর্মী রাখতে পারছেন না এবং তাঁর ঘরও একেবারে অগোছালো অবস্থায় আছে। অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি কিছুই ঠিকমতো কিছু করতে পারছি না। ঘর একেবারে অগোছালো। গৃহকর্মী রাখতেও ভয় লাগে, আগে যাদের রেখেছিলাম, তারা চুরি করত, নানা ঝামেলা করত। তাই এখন সব কাজ নিজেকেই করতে হয়। এর মধ্যেও লোকজন দরজার বাইরে এসে বিরক্ত করে, নিজের ঘরেই আমি এখন নিরাপদ নই।’
ভিডিওর ক্যাপশনে তনুশ্রী লেখেন, ‘আমি আর পারছি না এই হয়রানি সহ্য করতে! ২০১৮ সালের “হ্যাশট্যাগ মি টু” এর পর থেকেই চলছে এটা। আজ একেবারে বিরক্ত হয়ে পুলিশ ডাকলাম। দয়া করে কেউ সাহায্য করুন! কিছু করুন, এর আগেই যেন দেরি না হয়ে যায়।’
তনুশ্রী তাঁর ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতেও আরও কিছু অভিযোগ তুলে ধরেন। লেখেন, ‘কয়েক বছর ধরে মাঝরাতে জোরে আওয়াজ, দরজায় ধাক্কাধাক্কি করে ওরা! ম্যানেজমেন্টকে বহুবার জানিয়েছি, কাজ হয়নি। আজ আমি খুব অসুস্থ ছিলাম, তারপরও সারা দিন ধরে ওই শব্দ চলছিল। এরপর কিছু অচেনা লোক এসে দরজার ঘণ্টা বাজাতে থাকে, যেখানে আমি স্পষ্টভাবে “ডিস্টার্ব করবেন না” লিখে রেখেছি।’
২০১৮ সালে এক সাক্ষাৎকারে তনুশ্রী দত্ত অভিযোগ করেছিলেন, ২০০৯ সালে ‘হর্ন ওকে প্লিজ’ সিনেমার একটি আইটেম গানের শুটিংয়ের সময়, নানা পাটেকর, কোরিওগ্রাফার গণেশ আচার্য ও পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী তাঁর সঙ্গে অন্যায্য আচরণ করেছিলেন। কিন্তু তখন তনুশ্রীর পাশে কেউ দাঁড়াননি। সিনে অ্যান্ড টেলিভিশন আর্টিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের (সিনটা) কাছে গিয়ে নানা পাটেকরের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান তিনি।
কিন্তু নানা পাটেকরের মতো অভিনেতার বিরুদ্ধে কেউ একটি কথা শুনতে রাজি ছিলেন না। যদিও নানা পাটেকর এই অভিযোগ অস্বীকার করেন।
২০১৯ সালের জুনে মুম্বাই পুলিশ নানা পাটেকরকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়। তদন্তকারী ওশিওয়ারা থানার রিপোর্টে বলা হয়, তনুশ্রীর অভিযোগ ‘বৈরিতা’ ও ‘প্রতিশোধপরায়ণতা’ থেকে আসতে পারে।
তনুশ্রী দত্ত ‘আশিক বানায়া আপনে’, ‘ঢোল’ ও ‘ভাগম ভাগ’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য পরিচিত। ২০০৪ সালে তিনি ‘ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া ইউনিভার্স’ খেতাব জিতেছিলেন।