ধনকুবেরদের নিয়ে কেন মার্কিনিদের সতর্ক করলেন বাইডেন
আনুষ্ঠানিক বিদায়ের আগে বুধবার মার্কিনিদের উদ্দেশ্যে শেষবারের মতো ভাষণ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আর সেই ভাষণে তিনি ধনকুবের বা অলিগার্কদের নিয়ে মার্কিনিদের সর্তক করেছেন। শেষ ভাষণে কেন ধনকুবেরদের নিয়ে মার্কিনিদের সতর্ক করলেন বাইডেন; তা নিয়ে রয়েছে নানা মহলে কৌতূহল। তবে বাইডেনের এমন সতর্কতার পেছনে যে যথেষ্ট কারণ রয়েছে তা পরিষ্কার হয় সবশেষ মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে তাকালেই।
বুধবার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে অলিগার্কদের নিয়ে বাইডেন বলেন, ‘আজ, আমেরিকায় একটি ব্যাপক সম্পদ, ক্ষমতা এবং প্রভাবের অধিকারী অলিগার্ক আবির্ভূত হচ্ছে। যেটা আক্ষরিক অর্থে আমাদের গোটা গণতন্ত্র, আমাদের মৌলিক অধিকার, আমাদের স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।’
অলিগার্কদের উত্থান মার্কিনিদের জন্য হুমকির বলেও জানান বাইডেন। বলেন, ‘আমি সমানভাবে প্রযুক্তি-শিল্প কমপ্লেক্সের সম্ভাব্য উত্থান সম্পর্কে উদ্বিগ্ন, যেটা আমাদের দেশের জন্য প্রকৃত হুমকি হতে পারে।’
অলিগার্কদের নিয়ে বাইডেনের এমন কথা যে নিছক কথার কথা নয় সেটা পরিষ্কার হয় সবশেষ মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে তাকালে। সবশেষ নির্বাচনে কমলা হ্যারিসকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর ট্রাম্পের এই সাফল্যের পেছনে বড় নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে এই অলিগার্ক শ্রেণি।
সবশেষ নির্বাচনে ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়েছেন অলিগার্ক শ্রেণির ইলন মাস্ক, মার্ক জাকারবার্গ ও জেফ বেযস। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলন মাস্ক সবশেষ নির্বাচনে ট্রাম্পের হয়ে সরাসরি প্রচারণা চালিয়েছেন। শুধু তাই নয় এই ধনকুবের ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় ১০ কোটি ডলার ব্যয় করেছেন। সেই সঙ্গে তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সকে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণার কাজে লাগিয়েছেন।
মেটার মালিক মার্ক জাকারবার্গও ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়েছেন। নির্বাচনী প্রচারণায় মেটাকে কাজে লাগিয়েছেন। সেই সঙ্গে ট্রাম্পকে ক্ষমতার চেয়ারে বসাতে বিশাল অনুদান দিয়েছেন। এর বাইরে ফ্লোরিডায় ট্রাম্পের ব্যক্তিগত ক্লাবে গিয়ে প্রেসিডেন্ট-নির্বাচিত রিপাবলিকানের সাথে দেখা করেছেন। একই কাজ করেছেন অ্যামাজনের মালিক জেস বেযস। যা কমলাকে নির্বাচনে হারের পথে নিয়ে গেছে।
এই অবস্থায় মার্কিন নির্বাচনে এই ধনকুবেরদের প্রভাব নিয়ে তাই উদ্বিগ্ন জো বাইডেন। ভবিষ্যতেও যে এর প্রভাব থাকবে সে বিষয়ে মার্কিনিদের সতর্ক করেছেন তিনি। বাইডেন বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে যা করেছি, তার প্রভাব বুঝতে সময় লাগবে। কিন্তু এর বীজ রোপণ করা হয়েছে এবং সেগুলো বড় হবে এবং দশকের পর দশক ধরে বিকশিত হবে।’