ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় বাংলাদেশি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত থেকে সরলো ত্রিপুরার হোটেল মালিকরা

0

ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর জারি করা হোটেল নিষেধাজ্ঞা শিথিলের ঘোষণা দিয়েছে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার হোটেল ও রেস্টুরেন্ট মালিকরা। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে অল ত্রিপুরা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (এটিএইচআরওএ) নিষেধাজ্ঞা শিথিলের এই ঘোষণা দিয়েছে।

সংগঠনটি বলেছে, মেডিক্যাল ভিসাধারী বাংলাদেশি নাগরিকদের ত্রিপুরার হোটেল ও রেস্টুরেন্টে আতিথেয়তা দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে এটিএইচআরওএ। এর আগে, গত ২ ডিসেম্বর বাংলাদেশে ভারতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে ত্রিপুরায় বিক্ষোভ করেন দেশটির কট্টর হিন্দুত্ববাদী বিভিন্ন সংগঠনের কর্মী-সমর্থকরা।

পরে সেদিনই বাংলাদেশি নাগরিকদের ত্রিপুরার কোনও হোটেল ও রেস্তোরাঁয় জায়গা দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দেয় অল ত্রিপুরা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। যদিও ভারতের ত্রিপুরা ও কলকাতার বেশিরভাগ হোটেল এবং রেস্তোরাঁর ব্যবসার প্রধান ভোক্তা বাংলাদেশি নাগরিকরা।

হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নিপীড়ন ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ভারতের কয়েকটি রাজ্যে প্রায় প্রত্যেক দিনই বিক্ষোভ হচ্ছে। এছাড়া ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হামলা-ভাঙচুর এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননার ঘটনা ঘটে।

এই ঘটনায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার ভারতীয় রাষ্ট্রদূত প্রণয় ভার্মাকে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানায়। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ও আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনার নিন্দা এবং কূটনৈতিক শিষ্টাচার বজায় রাখার গুরুত্বের ওপর জোর দেয়।

ত্রিপুরায় বাংলাদেশি নাগরিকদের সঙ্গে কোনও ধরনের দুর্ব্যবহারের ঘটনা ঘটেনি জানিয়ে অল ত্রিপুরা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, ‘‘জাতীয় সংবেদনশীলতা এবং আতিথেয়তার নীতির মাঝে ভারসাম্য বজায় রাখার স্বার্থে আমাদের ঘোষিত নিষেধাজ্ঞা সংশোধন করা হয়েছে।’’

সংগঠনটি বলেছে, ‘‘আমরা মেডিক্যাল ভিসাধারী বাংলাদেশি অতিথিদের স্বাগত জানাবো। ত্রিপুরায় তাদের যথাযথ আবাসন এবং সেবা নিশ্চিত করা হবে।’’

এর আগে, চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়া বাংলাদেশি রোগীদের বয়কট না করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে দেশটির চিকিৎসকদের কেন্দ্রীয় সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (আইএম)। বুধবার কলকাতায় এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটির পশ্চিমবঙ্গ শাখা।

আইএমএর পশ্চিমবঙ্গ শাখার সদস্য ও চিকিৎসক এন কাঞ্জিলাল এবং কৌশিক চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন। এ সময় তারা বলেন, চিকিৎসা পরিষেবা নিতে পশ্চিমবঙ্গে আসা রোগীদের দেশের জাতীয় পতাকা প্রণাম করে ঢোকা এবং রোগী না দেখা চিকিৎসা নিয়মের পরিপন্থী। চিকিৎসকদের কাছে সকল রোগী রোগীই। চিকিৎসকদের কাছে রোগীদের কোনও জাত, ধর্ম ও দেশ হয় না।

ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের ওই দুই সদস্য বলেন, ভারতে আসা বাংলাদেশি রোগীদের কোনোভাবেই চিকিৎসা বন্ধ কিংবা হয়রানি করা যাবে না। বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা দিতেই হবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com