সাগর-রুনি হত্যায় বিগত সরকারের অত্যন্ত প্রভাবশালী অনেকে জড়িত: শিশির মনির
সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডে বিগত সরকারের অত্যন্ত প্রভাবশালী লোক জড়িত ছিলেন। প্রাথমিক তদন্তে এমন তথ্য উঠে এসেছে বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। তিনি বলেন, শুধু সরকারের দায়িত্বে ছিলেন তা না, সরকারকে পাশে থেকে যারা সহযোগিতা করেছেন, তাদের মধ্যেও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নাম এসেছে।
রবিবার (১৩ অক্টোবর) সুনামগঞ্জ পৌর শহরের পুরাতন বাসস্টেশনের একটি হোটেল মিলনায়তনে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি। সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর বাদীপক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনিরকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, তদন্ত চলা অবস্থায় সুনির্দিষ্ট ব্যক্তির নাম বলায় আইনগত বাধা আছে, তাই বলছি না। তবে ইন্ডিকেশন (নির্দেশনা) আছে, ইশারাই যথেষ্ট। আমার মনে হয়, এই বাধা এখন আর নেই। সে জন্য নামগুলো আসতে আর অসুবিধা হবে না।
২০১২ সালে সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রায় ১২ বছর পর একটি টাস্কফোর্স গঠন করে তদন্তের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন জমার জন্য সময় দেওয়া হয়েছে ছয় মাস। আমি যুক্ত হওয়ায় প্রাথমিক নথি দেখার সুযোগ হয়েছে। মামলাটি যেহেতু তদন্তে আছে, তাই এখন কিছু বলা যাবে না। বেশ কিছু সেনসেটিভ (সংবেদনশীল) ব্যক্তির নাম আছে।
শিশির মনির আরও বলেন, আমার কাছে মনে হয়, এখন তদন্তটা প্রোপার ডাইরেকশনে (যথাযথ নির্দেশনা) আছে। যে জায়গায় গিয়ে থেমে গিয়েছিল, সেই জায়গায় সরকার এখন আর কোনও বাধা দিচ্ছে না। যেহেতু বাধা দিচ্ছে না, তাই দুয়েকটা স্টেটমেন্ট আসছে। খুবই সেনসেটিভ স্টেটমেন্ট, খুবই সেনসেটিভ ইনফরমেশন (সংবেদনশীল তথ্য)। এ জন্য আমার কাছে মনে হয়, অগ্রগতি হবে প্রোপার লাইনে।
এই আইনজীবী বলেন, একটি গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট আছে; ডিএনএ রিপোর্ট। এই ডিএনএ সাগর ও রুনির গায়ে দু’জনের ডিএনএ শনাক্ত করা হয়েছে। এই দুজন কে, সেটা খোঁজা হচ্ছে।
এক প্রশ্নের জবাবে শিশির মনির বলেন, অপরাধের সঙ্গে সাধারণত ব্যক্তিই জড়িত থাকে। তবে গণমাধ্যম, গণমাধ্যমের বাইরে সরকারের উচ্চপদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামও এসেছে। এগুলো ক্রস চেক করতে হবে।
ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন বাতিল করা হবে বলেও সভায় জানান আইনজীবী শিশির মনির। তিনি বলেন, এই আইন কোনও সভ্য সমাজে থাকতে পারে না। মানুষের কথা বলার অধিকার না থাকলে মানুষের সাংবিধনিক অধিকার ক্ষুণ্ণ হবে। জনগণের বাকস্বাধীনতা হরণ করা হবে। সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ হবে। এসব না থাকলে গণতন্ত্র আইনের শাসন বলে কিছু থাকে না। ফলে স্বৈরাচার তৈরি হয়। আইন মন্ত্রণালয়ের ২৬ জন সদস্য মত দিয়েছেন ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন সম্পূর্ণভাবে বিলুপ্ত করার।