গাজা যুদ্ধের একবছর সামনে রেখে বিশ্বজুড়ে লাখো ফিলিস্তিনপন্থির বিক্ষোভ
গাজা যুদ্ধের একবছর সামনে রেখে রবিবার (৬ অক্টোবর) বিশ্বব্যাপী লাখো ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ করেছেন। গত বছর ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাস হামলার প্রেক্ষাপটে গাজা যুদ্ধের সূত্রপাত। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
জাকার্তা থেকে ইস্তাম্বুল হয়ে রাবাত পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সব শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছিল। এর আগে শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ও নিউইয়র্কসহ ইউরোপের বড়বড় শহরে রাস্তায় মানুষের ঢল নেমেছিল।
ইস্তাম্বুলে জড়ো হওয়া হাজারো বিক্ষোভকারীদের একজন আহমেত উনাল বলেছেন, ‘আমরা ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে এখানে এসেছি।’
এদিকে, ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলার একবছর হওয়াকে কেন্দ্র করে প্যারিসে মিছিল করেছেন সেখানকার ইহুদি সম্প্রদায়ের মানুষ। ইসরায়েলের দাবি অনুযায়ী, ওই হামলায় অন্তত ১ হাজার ২শ মানুষ নিহত ও ২৫০ জন জিম্মি হয়েছিলেন।
এই হামলার জবাবে শুরু হওয়া অভিযানে গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, চলমান আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত অন্তত ৪২ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
রবিবার বিশ্বের অন্যতম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় মার্কিন দূতাবাসের সামনে অন্তত হাজারখানেক মানুষ বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। তাদের দাবি ছিল, মার্কিন প্রশাসনকে অবিলম্বে ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করতে হবে।
৭ অক্টোবর সামনে রেখে সিডনিতে ফিলিস্তিনপন্থি হাজারো জনতা জড়ো হয়েছিলেন। যথেষ্ট পুলিশের উপস্থিতি সত্ত্বেও সেখানে মানুষ ফিলিস্তিন ও লেবাননের পতাকা উড়িয়েছেন।
এদিকে, ইসরায়েলি পতাকা ওড়ানোর কারণে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। ওই পতাকায় ‘স্টার অব ডেভিড’-এর বদলে ‘স্বস্তিকা’ (নাৎসি বাহিনীর ব্যবহৃত প্রতীক) অঙ্কিত ছিল।
গাজা ও লেবাননে চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে মরক্কোর রাজধানী রাবাতে মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন হাজার হাজার জনতা। ইসরায়েলের সঙ্গে মরক্কোর কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা। তেল আবিবের সঙ্গে রাবাতের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের বিরোধিতা করে স্লোগান দেওয়া হয়, ‘স্বাভাবিকীকরণকে না বলুন, ফিলিস্তিন বিক্রির জন্য নয়’ (নো টু নরমালাইজেশন, প্যালেস্টাইন ইজ নট ফর সেল)।
গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংসতার মাত্রা প্রত্যক্ষ করে বিশ্বব্যাপী বড় বড় একাধিক বিক্ষোভ প্রদর্শিত হয়েছে। এমনকি ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় মিত্র যুক্তরাষ্ট্রেই ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে কয়েক সপ্তাহব্যাপী আন্দোলন চালিয়ে গেছেন।
এদিকে, বিক্ষোভে ইহুদিবিদ্বেষ ও ইসলামভীতিসূচক পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা। বিশ্বব্যাপী ইহুদি ও মুসলিমদের প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করেছেন তারা।
ইসরায়েলের ‘আত্মরক্ষার অধিকারের’ পক্ষে বরাবরই সাফাই গেয়ে আসছে মার্কিন প্রশাসনসহ অন্যান্য মিত্র রাষ্ট্র। কিন্তু গাজায় চলমান আগ্রাসন ও সম্প্রতি লেবাননে শুরু হওয়া অভিযান নিয়ে ইসরায়েলের তীব্র নিন্দা করছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।