পতিত সরকারের দোসরদের চারপাশে বসিয়ে রেখে সংস্কার সম্ভব নয়: কাদের গনি

0

বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করার জন্য নানা ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্র দেশের ভেতর ও বাইরের।

পতিত সরকারের দোসরদের চারপাশে বসিয়ে রেখে সংস্কার সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, এই সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসে আছে ফ্যাসিবাদের দালালরা। জেলা প্রশাসক (ডিসি) হিসেবে যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাদের অনেকেই ফ্যাসিবাদের দোসর। সচিব, উপদেষ্টাদের পিএস, এপিএসসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগপ্রাপ্তদের প্রায় সবাই শেখ হাসিনার দোসর। এদের না সরালে সরকারকে বিপদে পড়তে হবে। বিভিন্ন বাহিনী থেকে ‘র’র এজেন্টদের সরাতে হবে। না হয় ফ্যাসিবাদ আবার ঠুস করে ঢুকে পড়বে।
রোববার স্থানীয় সময় রাত ৯টায় নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ বলেন। শহীদ তৌহিদ স্মৃতি সংসদ এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

শহীদ তৌহিদ স্মৃতি সংসদের সভাপতি আহসান উল্লাহ মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন জাকির এইচ চৌধুরী, আবদুর রহিম বাহার, নুর আলম, মাসুদ রানা,খান মোহাম্মদ টিপু, জাহাঙ্গীর আলম,মাহমুদুল হক, সালেহ আহমেদ রুমেল, মশিউর রহমান রুবেল, হারুন রশীদ, মোজাম্মেল হোসেন সাগর। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আল মামুন সুমন।

২০১৪ সালের ২৮ জানুয়ারি বিএনপি নেতা তৌহিদ ইসলামকে ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে র‍্যাব তুলে নিয়ে যায়। ঘটনার দুই দিন পর ৩০ জানুয়ারি বেগমগঞ্জে রাস্তার পাশে তার গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়।

কাদের গনি বলেন, আজ এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি অবদান তারেক রহমানের। তার নির্দেশেই আমরা জীবনবাজি রেখে রাজপথে নেমে এসেছিলাম। পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় তারেক রহমানকে মামলা দিয়ে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে। তাকে এখনো আমরা দেশে ফিরিয়ে আনতে পারিনি। বিভিন্ন ধরনের টালবাহানা চলছে। কোনো টালবাহানা দেশের মানুষ সহ্য করবে না। আমরা পরিষ্কার করে সরকারকে বলে দিতে চাই, সব মামলা প্রত্যাহার করে দ্রুত তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

সাংবাদিক, পেশাজীবী ও আন্দোলনকারী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মামলার প্রসঙ্গ টেনে পেশাজীবীদের এ নেতা বলেন ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় দেওয়া উদ্দেশ্যমূলক সব মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। মিথ্যা মামলাগুলো প্রত্যাহার করে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।

তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে সাংবাদিকদের এ নেতা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে বিতর্কিত করার নানান ষড়যন্ত্র চলছে। কেউ কেউ বিগত দখলদার সরকারের মতো এই সরকারকে ক্ষমতা দখলে রাখার কু-পরামর্শ দিচ্ছে। এই ফাঁদে পা দেওয়া হবে তাদের জন্য আত্মঘাতী। বিএনপি বলেছে, একটি যৌক্তিক সময় সরকারকে অবশ্যই দেবে। যৌক্তিক সময় মানে এই না যে তারা অনেক বেশি সময় নিয়ে আমাদের আগের অভিজ্ঞতার মতো অন্য কিছুর মধ্যে জড়িয়ে দেবে। সেটা করা যাবে না। যত দ্রুত নির্বাচন দেওয়া যাবে, ততই দেশের জন্য এবং অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য মঙ্গলজনক হবে।

কাদের গনি বলেন, পাঁচ বছর পরপর নির্বাচনের দাবি নিয়ে রাস্তায় নামতে হয়। নির্বাচন ব্যবস্থাকে আওয়ামী লীগ ধ্বংস করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে নির্বাচিত সরকারের অধীনে নির্বাচন ব্যবস্থা চালু করে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিতে হবে। মানুষের অধিকার, মানবিক মূল্যবোধ, সাম্য প্রতিষ্ঠার ও বৈষম্য দূর করে মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য অতি দ্রুত আলোচনা করে সংস্কারের মাধ্যমে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা জরুরি।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com