আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দলগুলোকে নিষিদ্ধ করে বাকশাল কায়েম করতে চায়: ফখরুল

0

দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার জামায়াতকে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এ প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, জামায়াতকে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত কেন তারা (আওয়ামী লীগ) এতদিন নেয়নি? আজকে কেন এ সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তারা? এ নিয়ে তাদের অনেক ধরনের যুক্তি থাকবে, অনেক কথা বলবে, তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের কথা খুবই পরিষ্কার, বহুদলীয় গণতন্ত্রে যারা এখানে রাজনীতি করে, তাদের অধিকার আছে রাজনীতি করার। এখন জনগণের দায়িত্ব হচ্ছে, সে কার রাজনীতি গ্রহণ করবে, আর কার রাজনীতি গ্রহণ করবে না। তার জন্য দরকার অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন।

গতকাল মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বিকেলে গুলশান বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াতকে নিষিদ্ধের ইস্যুতে প্রশ্নকারী সাংবাদিকের কথার সূত্র ধরে তিনি বলেন, আপনি তো বলছেন সরকার একটার পর একটা ইস্যু তৈরি করে। সেটিকে আবার অন্য দিকে নিয়ে যায়। এটাও সেই রকম আরেকটি (জামায়াতকে নিষিদ্ধ) প্রজেক্ট। আমরা বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। এটা আমাদের ঘোষিত কর্মসূচি।

তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান আমলে কমিউনিস্ট পার্টিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। হাজী মোহাম্মদ দানেশসহ অনেকে দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছিল, ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল। যখন তা বাতিল হলো, দুই বছর তারা দেশে ফিরে এসেছিল। এই ধরনের কাজ করে স্বৈরাচার সরকার। যাদের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক থাকে না, তারা এই ধরনের কাজ করে… এগুলো তাদের করতে হয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে দেশে এত বড় সংকট। সেখানে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে, সেই রকম সরকার নেই। প্রতিনিধিত্ব করে এমন সরকার না থাকলে তো সংকট সমাধান হবে না। আজকে এ সরকারের কোনও জবাবদিহিতা নেই, তাদের কোনও বৈধতা নেই। আজকে যেভাবে তারা ডিবি অফিসে কৌশল করছে, সেভাবে কৌশল করে নির্বাচনী বৈতরণি পার হয়েছে।

সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, আজকে অত্যন্ত দুঃখ লাগে। আবার আশাবাদী হয়েছি, পত্রিকায় দেখলাম দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা রাস্তায় নেমে আসছেন। আজকে শিল্পী, সাংস্কৃতিক কর্মী, সাংবাদিকরা নেমে আসছেন, তাদের বক্তব্য রাখছেন। আজকে শতাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি বিবৃতিতে দিয়েছেন, হত্যার তদন্ত চেয়ে। তখনি দুঃখ হয়, যখন কিছু মানুষ নিলজ্জভাবে ভয়াবহ দানবের পক্ষ নিয়ে কথা বলে, এই হত্যাকে সমর্থন করেন।

কোটা আন্দোলনে নিহত ছাত্রদের পরিবার ভালো নেই দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, কারণ চোখের সামনে তাদের ভবিষ্যৎ চলে গেছে। তাদের সবচেয়ে প্রিয় জিনিসটি চলে গেছে। তাদের ৪-৬ বছরের বাচ্চাটা চলে গেছে। রাষ্ট্র কী জবাব দেবে, এসব হত্যার দায় তো রাষ্ট্রের। যেটা আমরা বলছি, এসব হত্যার দায় তাদের নিতে হবে। দায় স্বীকার করে (ক্ষমতা থেকে) চলে যেতে হবে। রাজনৈতিক সংকট রাজনৈতিকভাবে শেষ করতে হবে। তাদের নতুন নির্বাচনের ব্যবস্থা করে জনগণের প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।

কোটা আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের তদন্ত জাতিসংঘের অধীনে হওয়া উচিত জানিয়ে তিনি বলেন, কারণ বিচার বিভাগীয় কমিশন ও তদন্ত আমরা বিশ্বাস করি না। এরা নিরপেক্ষ না।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ছাত্রদের সমস্ত আন্দোলনে আমাদের সমর্থন রয়েছে। এ সান্ধ্য আইন (কারফিউ) বিরুদ্ধে কথা বলেছি। এখন বলছি, এ মুহূর্তে সান্ধ্য আইন পুরোপুরিভাবে তুলে নেওয়া উচিত। সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়া উচিত।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com