মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রে চলছে উত্তেজনা
আগামী নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রে চলছে উত্তেজনা। বিশেষ করে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী ও বতর্মান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে নির্বাচনী বিতর্কে হেরে যাওয়ার পর পরিস্থিতি বদলে গেছে। খোদ ডেমোক্র্যাটরা এখন চাচ্ছেন, নির্বাচনের আগেই বাইডেনকে সরিয়ে প্রার্থী হিসেবে অন্য কাউকে দাঁড় করাতে। কিন্তু নভেম্বরের আগে ডেমোক্র্যাটরা তাদের প্রার্থী পরিবর্তন করতে সক্ষম হবেন কিনা- এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স কথা বলেছে ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশন থিঙ্ক ট্যাঙ্কের সিনিয়র ফেলো ইলাইন কামার্কের সঙ্গে। কামার্ক ‘প্রাইমারি পলিটিকস’ নামে একটি বহুল পরিচিত বইয়ের লেখক। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কমিটিরও (ডিএনসি) সদস্য। কামার্ক রয়টার্সের কয়েকটি প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন।
ডেমোক্র্যাটদের হাতে কী বিকল্প আছে
কামার্ক বলছেন, ডেমোক্র্যাটরা তাদের প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতার ব্যাপারে বাইডেনের বিকল্প চিন্তা বা ‘প্লান বি’ বলে কিছু রাখেনি। বাইডেন মূলত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দলের পক্ষ থেকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে যাচ্ছেন। যেহেতু এই গ্রীষ্মের আগে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দলের পক্ষ থেকে নমিনেশন পাবেন না, সেহেতু ডেমোক্র্যাটদের হাতে প্রার্থী পরিবর্তন করার এখনও সময় আছে। আগেই বাইডেন হয়তো নিজের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তবে কেউ যদি তার বিরুদ্ধে প্রার্থী হিসেবে চ্যালেঞ্জ করেন, তাহলে বাইডেনের টিকে থাকা কঠিন হবে। অথবা তিনি আগামী আগস্টে শিকাগোতে অনুষ্ঠেয় ডেমোক্র্যাট কনভেনশনে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিতে পারেন। ডিএনসির সদস্য পদ ত্যাগ করে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যুতসই প্রার্থী দাঁড় করাতে সহায়তা করার সুযোগও তাঁর রয়েছে।
কী ঘটতে চলেছে
কামার্ক মনে করেন, একই মুহূর্তে পরিস্থিতি বাইডেনের অনুকূলে রয়েছে। তিনি প্রার্থিতা থেকে সরে যেতে রাজি হতে পারেন অথবা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারেন। তবে এখনও তিনি সরে যাওয়ার কোনো ইঙ্গিত দেননি এবং কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীও তাঁর সামনে আসেনি। যদিও সম্প্রতি ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কের পর ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গেভিন নিউসম বাইডেনকে নিয়ে কিছু নেতিবাচক কথা বলেছিলেন, তবে তা গুরুতর প্রভাব ফেলেনি।
বাইডেন পদত্যাগ করলে কী হবে
কামার্ক বলছেন, বাইডেন তাঁর প্রার্থিতা ধরে রাখতে প্রাথমিক নির্বাচনে গত কয়েক মাসে রাজ্য ও অঞ্চলগুলোতে চার হাজার ডেমোক্র্যাটিক প্রতিনিধি সংগ্রহ করেছেন। এসব প্রতিনিধি প্রার্থিতা নির্ধারণে সরাসরি তাকে ভোট দেবেন, যদিও আইনে অন্য কাউকে সমর্থন করার অধিকার তাদের রয়েছে। যদি বাইডেন তার প্রতিনিধিদের নিয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন, তাহলে অন্য যে কোনো প্রার্থী তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়বেন।
বাইডেনের পরিবর্তে কে প্রার্থী হবেন
কামার্ক মনে করেন, বাইডেনের বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে নিজেকে ঘোষণা করার মতো কোনো প্রার্থী ডেমোক্র্যাট দলে নেই। তবে কেউ কেউ প্রার্থী হতে চাইবেন। এই তালিকায় কমলা হ্যারিস এক নম্বরে থাকবেন, তা নিশ্চিত বলা যায়। তবে আইন অনুযায়ী, সেটা হবে বাইডেন অযোগ্য ঘোষিত হলে বা মৃত্যুবরণ করলে। কারণ, দল সরাসরি ভাইস প্রেসিডেন্টকে প্রার্থী মনোনীত করতে পারবে না।
বাইডেন প্রার্থী না হলে ক্যালিফোর্নিয়া গভর্নর নিউসম, মিশিগানের গভর্নর গ্রেচেন হুইটমার, কেনটাকি গভর্নর অ্যান্ডি বেশার এবং ইলিনয়ের গভর্নর জেবি প্রিটজকার নির্বাচনী দৌড়ে এগিয়ে আসতে পারেন। কিন্তু তারা এখনও সবাই বাইডেনকে সমর্থন দিচ্ছেন, এমনকি নির্বাচনী প্রচারে অংশও নিচ্ছেন।