হাইতিতে ‘তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার’ মুখোমুখি ৪০ লাখ মানুষ

0

হাইতিতে ‘তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার’ মুখোমুখি ৪০ লাখ মানুষ এবং তাদের মধ্যে ১০ লাখ দুর্ভিক্ষের মাত্র এক ধাপ দূরে রয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতিসঙ্ঘের খাদ্য সংস্থার পরিচালক জিন-মার্টিন বাউয়ার।

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ক্যারিবিয় যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির খাদ্য সঙ্কটের চিত্র তুলে ধরেন জাতিসঙ্ঘের এই কর্মকর্তা।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘সতর্ক সঙ্কেত বেজে উঠছে’ কারণ সাম্প্রতিক সময়ে গ্যাং সহিংসতা বৃদ্ধির ফলে পরিস্থিতিকে খুব খারাপ থেকে আরো খারাপ করে তুলেছে এবং মার্চের প্রথম সপ্তাহেই রাজধানী পোর্ট অ-প্রিন্সে অতিরিক্ত ১৫ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

তিনি বলেন, এক কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যার দেশটিতে ইতোমধ্যে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন তিন লাখ ৬০ হাজার মানুষ। জাতিসঙ্ঘের হিসাব মতে, মোট বাস্তুচ্যুতদের অর্ধেকেই শিশু।

বাউয়ার বলেন, ২০২০ সালে কোভিড মহামারির সময় ৪০ লাখ খাদ্য নিরাপত্তাহীন ও ক্ষুধার্ত হাইতিয়ান ছিল এবং এই সংখ্যা কমেনি, তবে দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে থাকা সংখ্যাটি ১০ লাখে উন্নীত হয়েছে।

বাউয়ার বলেন, পোর্ট-অ-প্রিন্সকে ‘একটি বুদ্বুদে’ পরিণত করা হয়েছে। যেখানে গ্যাংগুলো রাস্তা নিয়ন্ত্রণ করে, বন্দর ও বিমানবন্দর বন্ধ করে দেয় এবং কেউ ঢুকতে বা বের হতে পারে না।

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির পরিচালক বলেন, সংস্থাটি এবং তার অংশীদাররা রাজধানীতে নতুন করে বাস্তুচ্যুত লোকদের জন্য একটি গরম খাবার পরিষেবা শুরু করেছে, দিনে দুই হাজার জনের খাবার দিয়ে শুরু করে এখন তা দিনে প্রায় ১৪ হাজার জনের খাবার রয়েছে।

তবে তিনি বলেন, বন্দরটি পুনরায় চালু করা হলে না করলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ডব্লিউএফপির গুদামের সরবরাহ শেষ হয়ে যাবে।

হাইতি তার খাদ্য সরবরাহের ৫০ শতাংশের জন্য খাদ্য আমদানির ওপর নির্ভর করে। বাউয়ার বলেন, ডব্লিউএফপি নিশ্চিত করতে পারে যে পোর্ট-অ-প্রিন্সের পাশাপাশি হাইতির অন্য এলাকায় খাদ্যের দাম বাড়ছে।

তিনি বলেন, জানুয়ারিতে গোলযোগ হয়েছিল এবং দক্ষিণে খাদ্যের দাম ২৫ শতাংশ বেড়েছে, যেখানে রাস্তাঘাট অবরোধ করা হয়েছিল এবং ট্রাকগুলো মৌলিক প্রয়োজনীয়তা নিয়ে পোর্ট-অ-প্রিন্সে যেতে পারেনি। সেখানে রান্নার জন্য প্রাথমিক জ্বালানি প্রোপেনের সঙ্কট ছিল।

বাউয়ার বলেন, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে গ্যাং সহিংসতার কারণে খাদ্যপণ্যের দাম অন্তত ১০ শতাংশ বেড়েছে।

তিনি বলেন, রাজধানীর বাইরের গ্রামীণ এলাকার অর্থনীতি পোর্ট-অ-প্রিন্সের সংযোগের ওপর নির্ভর করে এবং বাণিজ্য ব্যাহত হওয়ার কারণে দেশের অন্যত্র খাদ্যের দামও বেড়েছে।

বাউয়ার বলেন, ডব্লিউএফপির এক জরিপে দেখা গেছে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে পরিবারের আয় কমে যাচ্ছে, কারণ মানুষ কাজে যেতে পারছে না। তারা ‘একটি জায়গায় আশ্রয় নিচ্ছে’ এবং অর্থ উপার্জন করছে না।

প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরির পদত্যাগের প্রভাব সম্পর্কে জানতে চাইলে বাউয়ার জানান, তিনি রাজনৈতিক গতিশীলতা পড়ার ক্ষেত্রে ভালো নন। তিনি বলেন, ‘তবে আমরা অবশ্যই আশা করি যে নিরাপত্তার উন্নতি হবে।’

তিনি বলেন, নিরাপত্তাহীনতা মানুষকে এই মুহূর্তে খুব সাধারণ কাজগুলো করতে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। সন্তানদের স্কুলে নিয়ে যাওয়া, বা সুপারমার্কেটে যাওয়া বা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উত্তর হাইতির ক্যাপ হাইতিয়েন থেকে কথা বলার সময় বাউয়ার জোর দিয়ে বলেন, ‘শুধু নিরাপত্তার দিকে নজর দিলে হবে না, আমাদের জোরাল মানবিক সহায়তাও প্রয়োজন।’

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com