৯০০ বছর পর এমন বিরল তারিখের সাক্ষী আপনি, অপেক্ষা আবার ১০১০ বছরের!

রোববার আশ্চর্য এক তারিখের সাক্ষী এই দুনিয়া। ৯০০ বছর পর এমনতর তারিখ এল। উল্টো আর সোজা সব দিক থেকেই এক এই তারিখ। এর পোশাকি নাম প্যালিনড্রোম। আবার কবে আসবে এমন দিন? ০২-০২-২০২০ এই তারিখ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিস্তর আলোচনা। সোশ্যাল মিডিয়ার নানাবিধ ছবি থেকে মিম এবং প্যালিনড্রোমের খুঁটিনাটি তথ্য জেনে নিন।

বিরলতম তারিখ
৯০০ বছর পর ফিরে এল এমন বিরলতম দিন! ০২-০২-২০২০। দিনের থেকেও বিরলতম এই তারিখ। এটি আদতে একটি আন্তর্জাতিক প্যালিনড্রোম তারিখ। ‘মাস/দিন/বছর’ বা ‘দিন/মাস/বছর’—তারিখটি যেভাবেই লেখা হোক না কেন, কার্যকর হয় যে কোনো বিপরীত দিক থেকে।

সংখ্যাতত্ত্বের খেলা
২০২০ সালের এই ২ ফেব্রুয়ারি তারিখটি একটি আন্তর্জাতিক প্যালিনড্রোম। ০২-০২-২০২০ তারিখের উল্টো দিক থেকেও সংখ্যাটি একই। শব্দ আর সংখ্যাতত্ত্বের খেলায় যারা পটু, প্যালিনড্রোম নামটি তাদের কাছে খুবই পরিচিত।

৯০০ বছর আগে
প্যালিনড্রোম মানে হল যে শব্দকে সামনে বা পিছন থেকে পড়লে উচ্চারণ আর অর্থের কোন বদল হয় না। এ জাতীয় প্যালিনড্রোমের শেষ তারিখটি ছিল ১১-১১-১১১১। অর্থাৎ প্রায় ৯০০ বছর আগেকার ঘটনা।

সর্বব্যাপী প্যালিনড্রোমস
এই ধরনের তারিখগুলোকেই বলা হয় সর্বব্যাপী প্যালিনড্রোমস। পরবর্তী ১০১০ বছরের জন্য আর এমন কোনো তারিখ পাওয়া যাবে না। ৩০৩০ সালের ৩ মার্চ অবধি অপেক্ষা করার পরই আবার আসবে সর্বব্যাপী প্যালিনড্রোমস।

আট-অঙ্কের প্যালিনড্রোম
এই শতাব্দীতে মাত্র ১২টি আট-অঙ্কের প্যালিনড্রোম রয়েছে, ইউনিভার্সিটি অব পোর্টল্যান্ডের অধ্যাপক আজিজ ইনান দ্য ওয়াশিংটন সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জানিয়েছেন।

প্যালিনড্রোম কী?
এমন কিছু বিশেষ শব্দ আর সংখ্যা যার আরম্ভ বা শেষ দুদিক থেকেই পড়লে শব্দের উচ্চারণ আর অর্থের কোন বদল হয় না। আবার সংখ্যার মানও একই থাকে। এরই পোশাকি নাম প্যালিনড্রোম (Palindrome)। মূল গ্রীক শব্দ প্যালিনড্রোমাস (অর্থ: Running back again) থেকে ইংরেজি প্যালিনড্রোম শব্দটি এসেছে। বাংলা ভাষায় একে দ্বিমুখী শব্দ বা সংখ্যা বলা যায়। এই ধরনের দ্বিমুখী শব্দ বা বাক্য সাজাতে যারা দক্ষ তাদের ‘পেলিনড্রোমিস্ট’ বলা হয়।
​
মজার প্যালিনড্রোম:
গণিতে প্যালিনড্রোমিক সংখ্যার অভাব নেই। সাধারণভাবে যে কেউ হাজার হাজার প্যালিনড্রোমিক সংখ্যা তৈরি করতে পারেন। যেমন ১১, ২২, ১২১, ২৩২, ২৪৪২, ১২৩২১ ইত্যাদি। তবে এক্কেবারে সহজ অ্যালগোরিদম পদ্ধতিতে যে কোনো অ-প্যালিনড্রোমিক সংখ্যাকে প্যালিনড্রোমিক সংখ্যায় সহজেই রূপান্তরিত করা যায়।

ধরা যাক, একটি সংখ্যা হল ৫৭ (দুই, তিন, চার বা তার বেশি অঙ্কের সংখ্যাও ধরা যেতে পারে)। এবার সংখ্যাটিকে উল্টে দেওয়া হল। তাহলে সংখ্যাটি হল ৭৫। এবার এই দুটি সংখ্যা যোগ করা হল। তাহলে এবার সংখ্যাটি হল (৫৭+৭৫)=১৩২। একেও উল্টে দেওয়া হল। তাহলে সংখ্যাটি হল ২৩১। আবার এই দুটো সংখ্যা যোগ করা হল। যোগফল হল (১৩২+২৩১)=৩৬৩। এটি একটি প্যালিনড্রোমিক সংখ্যা।

এবার, তিন অঙ্কের সংখ্যা নিয়ে দেখা যাক। ধরা যাক সংখ্যাটি ২৫৫। একই নিয়মে ২৫৫+৫৫২=৮০৭, ৮০৭+৭০৮=১৫১৫, ১৫১৫+৫১৫১=৬৬৬৬। তিন ধাপেই পাওয়া গেল প্যালিনড্রোমিক সংখ্যা। এভাবেই যে কোনো সংখ্যাকেই এই নিয়মে পর পর যোগ করে গেলে একসময় প্যালিনড্রোমিক সংখ্যা চলে আসবে।

দেরিতে প্যালিনড্রোম
তবে, এ যাবৎ সবচেয়ে দেরিতে যে সংখ্যাটির প্যালিনড্রোম তৈরি করা গেছে এই নিয়মে তা হল ১,১৮৬,০৬০,৩০৭,৮৯১,৯২৯,৯৯০। ২৬১ ধাপের পর এটি প্যালিনড্রোমে পরিণত হয়।

অঙ্কে প্যালিনড্রোমিক
পাশাপাশি অঙ্কে প্যালিনড্রোমিক মজার দৃষ্টান্তও প্রচুর। যেমন- ৯ সংখ্যাটির প্যালিনড্রোম জাদু। ৯-এর সব গুণিতককে (যেমন ০, ৯, ১৮, ২৭,…. ৯০) পর পর পাশাপাশি লিখলে তা কিন্তু লম্বা একটা প্যালিনড্রোমিক সংখ্যা হয়ে যাবে। সংখ্যাটি হল- ০৯১৮২৭৩৬৪৫৫৪৬৩৭২৮১৯০ ।

ম্যাজিক সংখ্যা ১
আবার ১ সংখ্যাটিরও প্যালিনড্রোমিক ম্যাজিক রয়েছে। ১ দিয়ে তৈরি সমসংখ্যক অঙ্কের দুটি সংখ্যার গুণফল সবসময় প্যালিনড্রোমিক হবে। যেমন- ১১x১১=১২১, ১১১x১১১=১২৩২১, ১১১১x১১১১=১২৩৪৩২১, ১১১১১x১১১১১=১২৩৪৫৪৩২১ ইত্যাদি। এই সময়।