ইসরাইলের হামলায় দিন দিন করুণ হচ্ছে গাজার পরিস্থিতি: অমানবীয় নির্যাতনের শিকার বন্দিরা

0

ইসরাইলের হামলায় দিন দিন করুণ হচ্ছে গাজার পরিস্থিতি। একের পর এক হামলায় অসহনীয় অবস্থায় দিন পাড় করছেন গাজার বাসিন্দারা। একদিকে গাজার বেসামরিক অন্যদিকে ইসরাইলে ফিলিস্তিনি বন্দিরা।

যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ইসরাইলি কারাগারে অমানবীয় নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন তারা। নিষ্ঠুর ও বর্বরতা পূর্বের চেয়ে বহুগুণে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিদের গ্রেফতারও বেড়েছে।

৭ অক্টোবরের আগে ইসরাইলি কারাগারে প্রায় ৫,২০০ ফিলিস্তিনি বন্দি ছিল যা যুদ্ধের পর দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কর্মকর্তা ও অধিকার গোষ্ঠীর মতে, যুদ্ধের পর থেকে ইসরাইল গাজা থেকে প্রায় ৪,০০০ শ্রমিককে গ্রেফতার করেছে। পৃথকভাবে পশ্চিম তীরের পাশাপাশি পূর্ব জেরুজালেমে রাতারাতি সেনা অভিযানে আরও ১,০৭০ ফিলিস্তিনিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এদিকে বন্দিদের ওপর করা হচ্ছে অত্যাচার, মারধর এবং অমানবীয় আচরণ। বন্দি আইনজীবী সংগঠনগুলোর যৌথ বিবৃতি অনুসারে, ইসরাইলিদের দ্বারা নিয়মতান্ত্রিক বন্দিদের অপরাধের ভয়ংকর তথ্য উঠে এসেছে।

ফিলিস্তিনি আটকদের ওপর সহিংসতা জোরদার করেছে ইসরাইলি বাহিনী। নারীদের ওপর চালানো সহিংসতা তুলনামূলক আরও বেশি। অধিকাংশ সময়ই বন্দিদের কক্ষে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রাখা হয়। ইচ্ছাকৃতভাবে পানি ও খাবার থেকে বঞ্চিত করা হয়। মাঝে মাঝে ইসরাইলি পুলিশ বন্দিদের নির্যাতন করতে কুকুর, স্টান গ্রেনেড, টিয়ারগ্যাস এবং লাঠিসোঁটা ব্যবহার করে।

টেনে হিঁচড়ে মাটিতে ফেলে একস্থান থেকে অন্যস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। কেউ গুরুতর আহত হলে কারাগার কর্তৃপক্ষ চিকিৎসা থেকেও বিরত রাখে বন্দিদের। বন্দিদের স্বাস্থ্যের প্রতিও ইচ্ছাকৃত অবহেলা করা হয়। মানসিকভাবেও তাদের প্রতিনিয়ত হেনস্তা করা হয়। এমনকি কারাগারে নির্দিষ্ট গণ্ডির ভেতর অসংখ্য বন্দিকে একসঙ্গে রাখা হয়।

একসঙ্গে ১০ জনেরও বেশি বন্দিকে ঘরে রাখা হয়। এমন অসংখ্য ফিলিস্তিনি বন্দি রয়েছেন যাদের নির্জন কারাগারে এককভাবে রাখা হয়। তদুপরি, যুদ্ধের প্রথম দিকে, ইসরাইল বন্দিশালায় টেলিভিশন, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি বাজেয়াপ্ত করে, বন্দিদের জিনিসপত্র ধ্বংস করে, তাদের পোশাক বাজেয়াপ্ত করে। পাশাপাশি শারীরিক সহিংসতা, পারিবারিক পরিদর্শন স্থগিত করা, আইনজীবীদের সাথে দেখা করতে অস্বীকার করা এবং বান্দদের লন্ড্রি সুবিধাসহ নানা সুযোগ সুবিধা স্থগিত করা হয়েছে। আরব অর্গানাইজেশন ফর হিউম্যান রাইটস ইন ইউকে (এওএইচআর ইউকে) মতে, এই গ্রেফতার এবং আচরণগুলো মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।

রামাল্লাহর অধিকার গোষ্ঠীর প্রধান সাহার ফ্রান্সিস বলেছেন, ‘গ্রেফতারগুলো এখন ২৪ ঘণ্টা চলছে। গাজার বেশির ভাগ লোককে দক্ষিণ নাকাব মরুভ‚মির কাছে শেডে টাইম্যান নামক একটি সামরিক ঘাঁটিতে আটকে রাখা হয়েছে। রামাল্লার কাছে ওফার কারাগারে এবং অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের আনাতা গ্রামের কাছে আনাতোট সামরিক ক্যাম্পে আরও কয়েকশ বন্দি রয়েছেন।’

রামাল্লায় এক সংবাদ সম্মেলনে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের বন্দিবিষয়ক কমিশনের প্রধান কাদুরা ফারেস বলেছেন, বন্দিদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো ‘অভূতপূর্ব’ এবং ‘বিপজ্জনক’। গত কয়েক দিন ধরে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের প্রত্যেককে ভীষণভাবে লাঞ্ছিত করা হচ্ছে। অনেক বন্দির অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, হাত-পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তাদের সঙ্গে অবমাননাকর ও অপমানজনক অভিব্যক্তি প্রকাশ করা হচ্ছে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com