সরকারের পদত্যাগ ও ১০ দফা দাবি আদায়ে জনগণ চাইলে হরতাল-অবরোধ সবই হবে: ফখরুল
সরকারের পদত্যাগ ও ১০ দফা দাবি আদায়ে জনগণ চাইলে হরতাল-অবরোধ সবই হবে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারের পদত্যাগ ও ১০ দফা দাবি আদায়ে চার দিন নীরব পদযাত্রা শেষে ঢাকায় আবারও দুই দিন পদযাত্রা করবে বিএনপি। মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই কর্মসূচি ঘোষণা দেন।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে অনুষ্ঠিত দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম-স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আয়োজনে গোপিবাগ ব্রাদার্স ক্লাব মাঠ থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাব পর্যন্ত পদযাত্রা করা হবে। ১২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আয়োজনে পদযাত্রা করা হবে শ্যামলী ক্লাব মাঠ থেকে রিংরোড, শিয়ামসজিদ, তাজমহল রোড, নূরজাহান রোড, মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড হয়ে বসিলা পর্যন্ত।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে চায়। তবে জনগণ যখন চাইবে তখন হরতাল অবরোধ সব হবে। আশা করি সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। শান্তিপূর্ণভাবে ১০ দফা দাবি মেনে নেবে।’
সরকার প্রথম থেকেই উস্কানি দিয়ে সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায় মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে। বিএনপির ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মসূচি দেওয়ার পর এখন আওয়ামী লীগ পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছে।
তিনি উল্লেখ করেন, ‘সরকার চেষ্টা করছে দেশকে অনিশ্চয়তার দিকে নিয়ে যেতে। বিএনপি নয় আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যে সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি করা। সরকার ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে তাদের ক্ষমতা ধরে রাখতে সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি করছে।’ এ সময় তিনি আওয়ামী লীগকে ইউনিয়ন পর্যায়ের পাল্টা কর্মসূচি প্রত্যাহারে আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে সরকারকে বাধ্য করা হবে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে। প্রতিটি রাজনৈতিক দল চাইছে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হোক। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারকে দাবি মানতে বাধ্য করা হবে। কীভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করা যায় তার উদ্যোগ নিতে হবে।’
তিনি বলেন, বিএনপি জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে সরকারকে বাধ্য করবে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে। প্রতিটি রাজনৈতিক দল চাইছে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হোক। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারকে দাবি মানতে বাধ্য করা হবে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির তদন্ত দাবি করে যে বিবৃতি প্রকাশ করেছে তা নিয়ে বিএনপির উদ্বেগ প্রকাশের কথা জানান মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, সরকার অবৈধ ক্ষমতা আকড়ে ধরে রাখতে পুলিশকে ব্যবহার করে বিএনপির আন্দোলন দমানোর ষড়যন্ত্র করছে। পুলিশকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যেন না জড়ানো হয় স্থায়ী কমিটির সভায় সে দাবি করা হয়।
ফখরুল বলেন, উন্নয়নের কথা বলে মানুষের সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ সরকার। ব্যর্থতার দায় নিয়ে অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ দাবি করছি।
তিনি বলেন, বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচি নস্যাৎ করার জন্য নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। অবিলম্বে আটকদের মুক্তির দাবি করা হয়।
এ সময় ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় হতাহতে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। দুই দেশের সরকার ও জনগণের সঙ্গে একাত্মতা ও সমবেদনা প্রকাশ করা হয় বিএনপির পক্ষ থেকে।