শতভাগ বই বিতরণ না হওয়ায় আনন্দে ছেদ শিক্ষার্থীদের

0

করোনাভাইরাসের কারণে দুই বছর পাঠ্যবই উৎসব হয়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় নতুন বছরের প্রথম দিন সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে আবার উৎসবের আয়োজন করে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হয়েছে। বই পেয়ে অনেক শিক্ষার্থী আনন্দে আপ্লুত হয়েছে ঠিক, তবে উৎসবে একটু ছেদ পড়েছে শতভাগ বই বিতরণ করতে না পারায়। অর্থাৎ সব শিক্ষার্থী পুরো বই পায়নি। বেশিরভাগকে আংশিক বই নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়েছে। আবার দুয়েকটি ক্লাসের শিক্ষার্থীরা বই পায়নি এমন ঘটনাও ঘটেছে।

নতুন বই বিতরণ উপলক্ষ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠে কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। আর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠান ছিল গাজিপুরের কাপাসিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে। উভয় অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয় দু’টির মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী এবং সচিবসহ শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সরকার এবার সারা দেশে প্রায় ৩৩ কোটি ৯০ লাখ পাঠ্যবই বিতরণ করছে। প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী আছে ৪ কোটি ৯ লাখ ১৫ হাজার ৩৮১জন। এর মধ্যে প্রাথমিক স্তরে ২ কোটি ১৮ লাখ ৩ হাজার ৩০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৯ কোটি ৬৬ লাখ ৮ হাজার ২৪৫ বই বিতরণ করার কথা। শনিবারের সরকারি তথ্য অনুযায়ী মোট বইয়ের প্রাথমিকে ৭০ আর মাধ্যমিকে ৭৫ শতাংশ বই পাঠানো হয়েছে। বাকি বই এখনও তৈরি হয়নি। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সচিব নাজমা আখতার বলেন, চলতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে অবশিষ্ট বই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলে যাবে। কাগজ সংকট, বিদ্যুৎ-জ্বালানির ঘাটতি, দরপত্র প্রক্রিয়ায় বিলম্ব আর দরদাতাদের প্রাথমিক স্তরের কাজ নিয়ে ধর্মঘটের কারণে এবার মুদ্রণ কাজ শেষ হয়নি।

এই একই কথা সরকারি পাঠ্যপুস্তক উৎসব অনুষ্ঠানেও শোনা গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, কাগজের অভাবে প্রেস থেকে সব বই দিতে পারিনি। আগামী এক মাসের মধ্যে সব শিক্ষার্থীর মধ্যে তা বিতরণ করতে পারব বলে আশা করছি।

এই মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহমেদ বলেন, এনসিটিবির দেওয়া তথ্যমতে ৮০ শতাংশ বই সারা দেশে পাঠানো হয়েছে। এর আগে শনিবার রাতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব যুগান্তরকে বলেছিলেন, ‘মাধ্যমিকের ৭০ শতাংশ বই পৌঁছে গেছে। বাকিগুলো মধ্য জানুয়ারির মধ্যে পৌঁছে যাবে। আসলে বছরের প্রথম দিন সব বই লাগে না। তাছাড়া সবার ভর্তিও শেষ হয় না। তাই উৎসব করার মতো বই পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।’

দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো রাজধানীর উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল ও কলেজ, ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজ, মতিঝিল সরকারি বালক-বালিকা বিদ্যালয়, আজিমপুর সরকারি গার্লস স্কুল ও কলেজ, উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ নামি-দামি সব প্রতিষ্ঠানেই নতুন বই বিতরণ করতে দেখা গেছে। তবে সব শিক্ষার্থীকে শতভাগ বা গোটা সেট বই দেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে। উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কেবল পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির বাংলা ভার্সন আর অষ্টম শ্রেণিতে ইংরেজি ভার্সনের বই দেওয়া হয়েছে। বাকি শিক্ষার্থীদেরকে আগাম নোটিশ দিয়ে সোমবার (আজ) যেতে বলা হয়েছে।

প্রাথমিকের উৎসব ঢাকায় : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠে মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে সব শিক্ষার্থী বই পায়নি। সকালে শীত উপেক্ষা করে নতুন বইয়ের আশায় এসে না পেয়ে অনেক শিক্ষার্থী মন খারাপ করেছে। বছরের প্রথম দিনে নতুন বই না পেয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন অভিভাবক এবং শিক্ষকরাও।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com