সিটি নির্বাচনে বিএনপি সব বিধি মানছে, ভাঙছে আওয়ামী লীগ: খসরু
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে বিএনপি সব আচরণবিধি মানলেও আওয়ামী লীগ সব বিধিই ভাঙছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
আমির খসরু বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হতে হলে সবার সমান সুযোগ থাকার দরকার। সেখানেই সমস্যা হচ্ছে। আমরা বলেছি সরকারি দল আচরণবিধি ভঙ্গ করছে। এমপি-মন্ত্রীরা প্রথম থেকেই প্রচারে যাচ্ছে, এটি পরিষ্কার।
নির্বাচনী ক্যাম্পের প্রসঙ্গ টেনে খসরু বলেন, বিধি অনুযায়ী ফুটপাতের ওপর অফিস করা যাবে না, কিন্তু ঢাকায় ১০০ এর বেশি জায়গায় ফুটপাতের উপর আওয়ামী লীগের অফিস করা হয়েছে, সবার সামনেই এটি হচ্ছে। আমরা বলেছি এসব অফিস ভেঙে ফেলা উচিত। তারপরও আবার অফিস করলে শোকজ করতে হবে, তারপরও আবার করলে প্রার্থিতা বাতিল হওয়া উচিত, কিন্তু তা হচ্ছে না। উল্টো অনেক ক্ষেত্রে ফুটপাত অতিক্রম করে রাস্তায়ও অফিস চলে আসছে।
বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের ওভার সাইজ পোস্টার টাঙানো হচ্ছে, এমন পোস্টার বিএনপির একটিও নেই। তারা মাইক ব্যবহারের বিধিও মানছে না।
এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইসি কী বলেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা আমাদের বলেছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্য সব ফুটপাতের অফিস ভাঙা হবে। ওভার সাইজ পোস্টার যেগুলো টাঙানো হয়েছে, সবগুলো তারা নামাবে এবং নিয়ম না মানলে মাইক অপসারণ করা হবে।
নির্বাচন পর্যবেক্ষকের প্রসঙ্গ টেনে আমির খসরু বলেন, সার্ক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন নামের যে সংগঠন, তাদের কানাডীয় একজন নারী দেশে এক কথা বললেও বাইরে আরেক কথা বলেন। তিনি দুটি সংগঠনে আছেন, যার মালিক আওয়ামী লীগ।
পর্যবেক্ষক সংস্থার ২২টার মধ্যে ১৮টির কোনো ওয়েবসাইট নেই দাবি করে তিনি বলেন, তাদের ম্যান পাওয়ার নেই। সব দলীয় লোকজন সেখানে। তারা নির্বাচনের দিন পর্যন্ত বলবে সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে। আর যেখানে দেশের পর্যবেক্ষকরাই পর্যবেক্ষণ করতে পারছেন না, সেখানে বিদেশিরা কী করতে পারবেন?
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইভিএম শঙ্কা তৈরি করবে, কিন্তু এসব পর্যবেক্ষকরা সেসব স্বাগত জানাবে। মাঠে ম্যাজিস্ট্রেটের কোনো মোবাইল টিম নেই অভিযোগ করে খসরু বলেন, বিএনপি প্রার্থীর ওপর আক্রমণ হচ্ছে, তাদের সিকিউরিটি (নিরাপত্তা) নেই। তাদের গায়ে হাত তুলছে, সেখানে কোনো সমাধান হচ্ছে না।
ইশরাকের প্রচারণায় আওয়ামী লীগের সংঘর্ষের বিষয়ে তিনি বলেন, দেশে যে রাজনীতি চলছে, সেখানে বিএনপি আওয়ামী লীগকে আক্রমণ করেছে এটা বিশ্বাস করার কোনো কারণ আছে? গতকাল বিএনপি কর্মীদের পেটানোর পর আওয়ামী লীগ আবার উল্টো মামলা করেছে। এখন নতুন নিয়ম হয়েছে যে আগে পেটাবে পরে মামলা দেবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে ৬ সদস্য প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান মিয়া, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আব্দুস সালাম, বিজন কান্তি সরকার, যুগ্ম মহা-সচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। ইসির পক্ষ থেকে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিইসি কে এম নূরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম ও কবিতা খানম।