১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ ঘিরে রাজধানীজুড়ে সাঁড়াশি অভিযান
আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ ঘিরে জ্বালাও-পোড়াও, ভাঙচুরের মতো নাশকতার শঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্টরা।
এ অবস্থায় রাজধানীজুড়ে ব্যাপক তৎপরতা শুরু করেছে পুলিশ।
বিভিন্ন এলাকা চিহ্নিত করে সাঁড়াশি অভিযান চলছে তাদের।
পুলিশ সূত্র জানায়, বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ ঘিরে রাজধানীতে নাশকতার আশঙ্কা রয়েছে। তাই যে কোন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি এড়াতে রাজধানীতে অভিযান চালানো হচ্ছে। ইতোপূর্বে দায়েরকৃত নাশকতা ও বিভিন্ন মামলার এজাহারভুক্ত পলাতক আসামি ও পরোয়ানাভুক্ত আসামিদের গ্রেফতার করতে এ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। এছাড়া মাদক, দণ্ডপ্রাপ্ত, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, চোর, ছিনতাইকারীসহ নানা অপরাধে জড়িতরাও রয়েছে।
এরমধ্যে বিএনপিকে শর্তসাপেক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হলেও মানতে নারাজ দলটি। নেতৃত্বস্থানীয়দের পক্ষ থেকে ‘যে কোন মূল্যে’ নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে, অনুমতির বাইরে সমাবেশ করলে সেটাকে ‘বেআইনী’ আখ্যা দিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেও সুরাহা করতে পারেনি দলটি। এ কারণে সমাবেশ ঘনিয়ে আসতেই ক্রমেই বাড়ছে উত্তেজনা ও নানা শঙ্কা।
গত ২৯ নভেম্বর পুলিশ সদরদপ্তর থেকে নির্দেশনার পর কার্যত শনিবার (৩ ডিসেম্বর) রাত থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার আবাসিক হোটেল ও মেসে অভিযানে নামে পুলিশ। ঢাকায় পরিচালিত এই বিশেষ অভিযানে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ৪৭২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
সূত্র জানায়, ডিএমপি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের যে হালনাগাদ তালিকা করেছে, তা ক্রাইম বিভাগের সব জোনের পাশাপাশি দেওয়া হয়েছে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কাছে। সেই তালিকা ধরেই ১০ ডিসেম্বর সামনে রেখে রাজনৈতিক মামলার আসামিদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।
এদিকে, রাজধানীতে বিএনপির গণসমাবেশ সামনে রেখে ঢাকার বাইরে থেকে কোনো বহিরাগত যাতে আবাসিক হোটেল ও মেসগুলোতে অকারণে অবস্থান করতে না পারে পারে, সে জন্য তল্লাশি চালানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে আবাসিক হোটেলগুলোর সঙ্গে কথা বলেছে স্থানীয় থানা পুলিশ। একই সঙ্গে ঢাকার প্রবেশ পথগুলোতে তল্লাশি চৌকি বসিয়ে সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
রোববার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়ে ডিএমপি সদর দপ্তরে যান বিএনপির ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।
আলোচনা শেষে ডিএমপির সদরদপ্তরের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেন, আমরা দেশের বিভাগীয় শহরে ৯ টি সমাবেশ করেছি। কোথাও কোন ঝামেলা হয়নি, ঢাকাতেও হবে না। তারপরও নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। এসব গ্রেফতার সমাবেশের জনসমুদ্র থামানোর জন্য করা হচ্ছে।
রাজশাহীর সমাবেশ থেকে ফেরার পথে যুবদলের সভাপতি সালাহউদ্দিন টুকু ও সাধারণ সম্পাদক নয়নকে আমিন বাজারে বেরিকেড দিয়ে গ্রেফতার করা হয়। তারা সবগুলো মামলায় জামিনে ছিলেন।
পুরান ঢাকায় ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক সমাবেশের প্রচার লেফলেট বিলি করছিলেন, এসময় তার উপর হামলা হয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীড়ের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে এমন গ্রেফতার ও হামলা করা হচ্ছে।