জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, যুদ্ধ করেছিলেন, পালিয়ে যাননি: দুদু
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। যুদ্ধ করেছিলেন পালিয়ে যাননি। সফল হয়েছিলেন। আমার মতে, এই উপমহাদেশে একমাত্র বীর যদি থাকেন। তিনি হলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।
দুদু বলেন, যারা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে কটুক্তি করে। তারা যাকে নেতা মনে করে। ওই তিন বছরে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে বিপন্ন করে এটা কল্পনা করা যায় না। যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করা কোন দেশে এ ধরনের ঘটনা নাই। কিন্তু সেটি আমার দেশে আমার ভূমিতে হয়েছে। এটা ইতিহাস থেকে বাদ দেয়ার কোন সুযোগ নাই।
বুধবার (৯ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ৭ নভেম্বর জাতীয় ‘বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ১৯৭৫ সালে ২টি ঘটনা ঘটেছে। একটা হল শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নির্মম নির্দয়ভাবে হত্যা হয়েছে। আরেকটি হল বাকশাল সরকারের পতন হয়েছে। কিন্তু তারা (আওয়ামী লীগ) একটা ঘটনার কথা বলে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই সাথে নভেম্বরের ঘটনা ঘটেছে।
তিনি বলেন, অনেকে বলে ৩রা নভেম্বর থেকে সাত নভেম্বর পর্যন্ত দেশে কোন সরকার ছিল না। তখন সেনাবাহিনী প্রধানের ব্যাচ কে পড়েছিলেন? খালেদ মোশারফ। তিনি খন্দকার মুশতাকের পতন ঘটিয়ে বিচারপতি সায়েমকে রাষ্ট্রপতি বানিয়েছিলেন। সে সময়ে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু তারা চার নেতার হত্যাকাণ্ডের দায় নিতে চায় না। তারা (আওয়ামী লীগ) খালেদ মোশারফকে বাঁচাতে চায়। খালেদ মোশারফই জেলখানার হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। পরবর্তীকালে অন্যের কাঁধে দোষ চাপানোর চেষ্টা করেছে। আবার তারা ৩ নভেম্বরকে শোক দিবসের হিসাবে পালন করে। এক মানুষের কত রূপ।
কৃষকদলের সাবেক এই সাধারণ সম্পাদক বলেন, ১৯৭৪ সালে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। আর এখন বলছে হবে। আমি শেখ সাহেবকে একটা বিষয়ে ধন্যবাদ দেই। তিনি কোন কিছু গোপন রাখেন নি। তিনি প্রকাশ্যে তার দলসহ সকল দলকে নিষিদ্ধ করেছিলেন। তিনি যে একদল করছেন। বাকশাল কায়েম করছেন। পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে সংবিধান সংশোধন করছেন। এবং সেই সংবিধানে লেখা হচ্ছে আজীবন তিনি রাষ্ট্রপতি থাকবেন। তার সময়ে তিনি এটা স্পষ্ট করেছেন। তিনি ধন্যবাদ পেতেই পারেন। তবে এটা তো গণতন্ত্রের জন্য না। স্বৈরতন্ত্র তিনি স্পষ্ট করেছেন। কিন্তু আজকের প্রধানমন্ত্রী সত্যটা বললেই হয়। বাপের বেটি হওয়া উচিত তো। বাকশালী রাষ্ট্রপতি মেয়ে এখন প্রধানমন্ত্রী একটু সত্য কথা বললেই তো হয়।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনি নিজেকে কেন এত গণতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক বলছেন এটা মানাচ্ছে না। আপনি একা কর্তৃত্ববাদী শাসক না। আমরা আগেও কর্তৃত্ববাদী শাসন দেখেছি। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালে কর্তৃত্ববাদী শাসন আমরা দেখেছি। আপনি তার ধারাবাহিক।
তিনি বলেন, আমি যদি আওয়ামী লীগের কাউকে জিজ্ঞাসা করি। খন্দকার মুশতাক ক্ষমতা গ্রহণ করার পর শেখ মুজিবুর রহমানের মন্ত্রী পরিষদের বর্ধিত একটা রূপ ছিল। এটা যদি কেউ বলে আপনারা অস্বীকার করবেন কিভাবে? খন্দকার মুশতাক সে সময় তো পার্লামেন্ট ভেঙ্গে দেয়নি। শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার জন্য পার্লামেন্টের কোন সদস্য কি পদত্যাগ করেছিলেন? শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের উদ্দেশ্যে প্রায় বলেন আমার বাবা লাশ দুদিন পড়েছিল আপনারা কেউ যাননি। ৭ নভেম্বর তার বিপরীত। যে রাষ্ট্র যে রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জিয়াউর রহমান তার শাহাদাতের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে তার জানাজায় অংশগ্রহণ করতে এসেছিল। বাংলাদেশের আর কারো সাথে শহীদ জিয়ার তুলনা হয় না।