খুলনায় বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সরকার একটি সন্ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করছে: ফখরুল
খুলনায় বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সরকার একটি সন্ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে আন্দোলন করছি। এরই অংশ হিসেবে আগামীকাল (২২ অক্টোবর) খুলনায় আমাদের সমাবেশ। এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে সরকার একটি সন্ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করছে খুলনায়। পথে পথে আমাদের নেতা কর্মীদেরকে সাধারণ মানুষদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে।’
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন অভিযোগ করেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, শুধু তাই নয়, খুলনা দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় যে বাড়িতে অবস্থান করেছিলেন গতকাল রাতে সেই বাসায় পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে সেখান থেকে ১৯ জনকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে।
ফখরুলের দাবি, ‘আমি জানতে পেরেছি নির্দেশ দেয়া হয়েছে সড়কে যাকে যেখানে পাওয়া যাবে তাকে গ্রেফতার করা হবে। গতকাল তারা লাঠিসোটা রামদা নিয়ে শোডাউন করেছে। মোটরসাইকেল নিয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে।’
সন্ত্রাস সৃষ্টি করার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে গ্রেফতাকৃতদের মুক্তির দাবি করেন মির্জা ফখরুল। একই সাথে খুলনা সমাবেশে যাতে বাধার সৃষ্টি না করা হয় সেজন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘খুলনায় যদি কোনো সমস্যার সৃষ্টি হয় তাহলে এর দায় সরকারকে নিতে হবে। এতে প্রমাণিত হবে এ সরকার গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে না। তারা আমাদের সমাবেশ করতে দিতে চায় না।’
খুলনায় সমাবেশকে কেন্দ্র করে গণপরিবহন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে দাবি করে ফখরুল বলেন, এটা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করছে। এখানে প্রমাণিত হয়েছে সরকার একটি গণতান্ত্রিক উপায়ে মানুষ তাদের কথা, বক্তব্য, প্রতিবাদ করুক, এটা তারা চায় না। তারা একটি সঙ্ঘাতের দিকে ঠেলে দেয়ার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে।
ফখরুল বলেন, এরা জনভীতি রোগে ভোগে, মানুষ দেখলেই ভয় পায়। তারা ভয় পাচ্ছে এভাবে যদি জনগণ জেগে ওঠে তাহলে উত্তাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। তখন তাদেরকে অত্যন্ত ধিকৃত অবস্থায় চলে যেতে হবে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘জনগণকে বাধা দিয়ে সমাবেশকে বন্ধ করতে চাওয়ার একটাই কারণ। মানুষ যদি বাড়তে থাকে তাহলে তাদের ক্ষমতায় টিকে থাকার সম্ভব হবে না। জনগণের উত্তল তরঙ্গে তাদেরকে ভেসে যেতে হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা অমর্ত্য সেনের বইটি পড়েছেন। সেখানে ৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ নিয়ে তিনি লিখেছেন। ৭৪ সালের দুর্ভিক্ষটি ছিল মানবসৃষ্ট। অর্থাৎ ওই সময় যারা ক্ষমতায় ছিলেন তাদের অব্যবস্থাপনা, অদক্ষতার কারণে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। আজকে সেই একই কারণে বাংলাদেশে একই ঘটনা ঘটছে। এখানে দুর্ভিক্ষের আগাম পদধ্বনি শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। এখন প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলছেন। অর্থাৎ তাদের এই যে ব্যর্থতা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এটা এখান থেকেই বুঝা যায়।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।