আন্তর্জাতিক আদালতের নির্দেশ মানতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জামায়াতের

0

আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর গণহত্যা রোধে নিজেদের ক্ষমতা অনুযায়ী সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে সেদেশের সরকারকে যে নির্দেশ দিয়েছে তা বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির আমীর ডা. শফিকুর রহমান আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বিচার আদালত মিয়ানমারের গণহত্যা রোধে যে ঐতিহাসিক রায় প্রদান করেছেন আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে এ রায়কে অভিনন্দন জানাচ্ছি। মিয়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের উপর গণহত্যা বন্ধ করে তাদের সুরক্ষায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীন জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার যে আবেদন আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গাম্বিয়া সরকার করেছে সেজন্য আমি গাম্বিয়া সরকারকেও আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। নির্যাতিত মানবতার পক্ষে এ রায় একটি ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। এর মাধ্যমে নির্যাতিত ও গণহত্যার শিকার রোহিঙ্গারা আন্তর্জাতিক শক্তির এক যুগান্তকারী সমর্থন অর্জন করল।’

বিবৃতিতে জামায়াত আমীর বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা রোধে নিজেদের ক্ষমতা অনুযায়ী সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে মিয়ানমারকে  বৃহস্পতিবার নির্দেশ দিয়েছে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত। এছাড়া রোহিঙ্গাদের উপর যে জুলুম-নির্যাতন চালানো হয়েছে, তার প্রমাণ সংরক্ষণ করতেও আইসিজে মিয়ানমারের সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে। আইসিজে’র এই রায় বাস্তবায়ন করার জন্য আমি মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) সভাপতি বিচারপতি আবদুল কাউই আহমেদ ইউসুফ বলেন, আইসিজির অভিমত হচ্ছে যে, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে এখনো অতিশয় অরক্ষিত অবস্থায় আছে। আদালত আরো উল্লেখ করেছে যে, রোহিঙ্গাদের রক্ষার উদ্দেশে অস্থায়ী ব্যবস্থা হিসেবে যে আদেশ দেয়া হয়েছে তা মানতে মিয়ানমারের আন্তর্জাতিক আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে।’

‘মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ২০১৭ সালের আগস্টে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে এক নির্মম অভিযান শুরু করে। এ সময় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের হাজার হাজার ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। শতশত রোহিঙ্গা পুরুষকে হত্যা করে এবং শত শত রোহিঙ্গা নারীকে গণধর্ষণ করে। এ সময় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর জাতিগত নির্মূল অভিযান থেকে বাঁচতে প্রায় ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। জাতিগত নির্মূলের এই ধারা এখনো অব্যাহত রয়েছে’-যোগ করেন শফিকুর রহমান।

তিনি আরো বলেন, ‘মিয়ানমারের যে সকল রোহিঙ্গা নাগরিক জাতিগত নির্মূলের শিকার হয়ে বাংলাদেশসহ প্রতিবেশি কয়েকটি রাষ্ট্রে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে তারা যাতে মিয়ানমারে ফিরে গিয়ে জানমালের নিরাপত্তাসহ সকল নাগরিক অধিকার ভোগ করতে পারে সে ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং সেই সাথে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের উপর গণহত্যা রোধে নিজেদের ক্ষমতা অনুযায়ী সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে মিয়ানমারের সরকারকে যে নির্দেশ দিয়েছে তা বাস্তবায়নে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য আমি জাতিসংঘ, ওআইসি ও গণতান্ত্রিক বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জনাচ্ছি।’ 

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com