সুষ্ঠু নির্বাচন করার ক্ষমতা এই নির্বাচন কমিশনের নেই: রিজভী

0

সুষ্ঠু নির্বাচন করার ক্ষমতা এই নির্বাচন কমিশনের নেই জানিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫০টি আসনে ইভিএম দেয়ার ঘোষণায় নির্বাচন কমিশনের কড়া সমালোচনা করে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, নির্বাচন কমিশন যে সরকারের আজ্ঞাবহ তা আবারো প্রমাণ করেছেন।

আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে তিনি এ সব কথা বলেন। চা শ্রমিকদের দৈনিক তিন শ’ টাকা মজুরি, আবাসন, খাদ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ মৌলিক অধিকারের দাবিতে আন্দোলন ও কর্মবিরতির প্রতি সংহতি জানিয়ে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল।

তিনি বলেন, ক্ষমতায় টিকে থাকতে সরকার কেন বিদেশীদের কাছে সহযোগিতা চাচ্ছেন। সেটা আবারো গতকাল প্রমাণ করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রথমেই আমরা বলেছি এই সরকার যেখানে যাকে নিয়োগ করবে তাদের পরিচয় যাইহোক, তাদের অন্তর ছাত্রলীগ, যুবলীগ। যুবলীগ, ছাত্রলীগের অন্তর থাকার কারণে গণভবন থেকে যে নির্দেশনা আসবে তার বাইরে তারা যাবে না। সুষ্ঠু নির্বাচন করার ক্ষমতা এই নির্বাচন কমিশনের নেই। সেটা তিনি নিজেই আবার প্রমাণ করলেন। রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে তিনি যে সংলাপ করেছিলেন সেখানে অধিকাংশ দল ইভিএমের বিপক্ষে কথা বলেছিলো। কিন্তু গতকাল তিনি বললেন ১৫০টি আসনে ইভিএম ব্যবহার হবে। তাহলে কিসের জন্য এই সংলাপ?

চা শ্রমীকদের দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবির প্রতি সংহতি জানান রিজভী। পাশাপাশি শ্রমিকদের দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবি বাস্তবায়নের জন্য কর্তৃপক্ষকে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ারও আহবান জানান।

রিজভী বলেন, শ্রমিকদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য সরকারের গুরুদায়িত্ব আছে। কিন্তু সরকারের এখানে কোনো গুরুদায়িত্ব দেখতে পাচ্ছি না। এই মুহূর্তে ১২০ টাকা একজন শ্রমিক মজুরি পায়। অন্য সবকিছু বাদ দিলেও খাদ্যের যে দাম তাতে এই টাকা দিয়ে কি পেটভরে খাওয়াও সুযোগ আছে। আগে বলত, গরিব মানুষ ভর্তা-ভাজি দিয়ে ভাত খায়। এখন ভর্তা-ভাজির দাম অনেক। ভর্তা করতে মরিচ লাগে, তার দাম আকাশ ছুঁই ছুঁই করছে। এখন বলতে হবে কোনো রকম লবণ দিয়ে ভাত খাওয়া। কিন্তু সেই ভাত কেনারও সমর্থ নেয়।

বিএনপির এই নেতা বলেন, এই সরকার যে তাবেদার সরকার, নতজানু সরকার, অন্যদেশে মুখাপেক্ষী, এগুলো আমাদের নতুন করে আর বলতে হচ্ছে না। বর্তমান সরকারের মন্ত্রীরা প্রমাণ করে দিচ্ছে তারা কাদের সরকার। কারণ ওরা তো জনগণের কাছে যেতে পারবে না। এত অবিচার, এত অন্যায়, এত গুম-খুন। জনগণের কাছে তারা যাবে কি করে? জনগণের মধ্যে উনাদের কোনো ভিত্তি নাই। এজন্য ওরা বিদেশের ভিত্তি তৈরি করছে। দেশের স্বার্থ বিক্রি করে দিয়ে নিজেদের ক্ষমতায় থাকার স্বার্থে বিদেশের কাছে ধর্ণা দিচ্ছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মাঝেমধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে। নিজেদের স্বার্থে দেশের নিরাপত্ত বিদেশের কাছে বিক্রি করে দেয়াকে কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলে? ওরা আসলে মিথ্যার চেতনায় বিশ্বাস করে। মিথ্যার চেতনা ঢেকে দেয়ার জন্যই তারা মুক্তিযুদ্ধে চেতনার কথা বলে।

উপস্থিত সবার উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, ‘আয়না ঘরের’ কথা শুনেছেন না? ‘আয়না ঘর’ এখন ভূতের ঘর, আতঙ্কের ঘর হিসেবে সারা দেশের মানুষের মুখে মুখে। আমরা যারা বিরোধী দলের রাজনীতি করি, সরকারের অন্যায়, অবিচার, গুম, খুনের সমালোচনা করি তারা আতঙ্কে থাকি। সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললে তাদের ধরে নিয়েই অত্যাচার করা হয়। নির্যাতন করা হয়, নির্যাতনের মাত্রা বীভৎস। এত রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে ‘আয়না ঘর’ হওয়ার কথা ছিল না। এই ঘরে তো বিরোধী দলীয় নেতা নিয়ে অত্যাচার করার কথা ছিল না।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com