‘এখনকার রাজনীতি মাস্তানি-গুন্ডামি-টেন্ডারবাজি’

0

রাজনীতি একটি দারুণ জিনিস যখন সেটার মধ্যে কল্যাণ থাকে। তবে এখন যেটাকে রাজনীতি বলছি, সেটা আসলে মাস্তানি-গুন্ডামি-টেন্ডারবাজি। আজ সোমবার (২২ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনের পাশে প্যারিস রোডে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব এ কথা বলেন।

মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে শিক্ষার্থীকে নির্যাতন ও টাকা ছিনতাই, অন্যান্য আবাসিক শিক্ষার্থীদের হয়রানি এবং শিক্ষাঙ্গনে নৈরাজ্য সৃষ্টির প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) নিপীড়ন বিরোধী ছাত্র-শিক্ষক ঐক্য।

এ সময় পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব বলেন, রাজনীতি একটি দারুণ জিনিস, যখন সেটার মাঝে কল্যাণ থাকে। এখন যেটাকে রাজনীতি বলছি, সেটা হচ্ছে মাস্তানি, গুন্ডামি, টেন্ডারবাজির নাম। আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়কে একটা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে দেখতে চাই। ছাত্রলীগের একদল গুন্ডাকে লালন করা হচ্ছে। যদি লালন করা নাই হয়, তাহলে আমাকে প্রতিনিয়ত এমন ঘটনা দেখতে হচ্ছে কেন?

গোপনে এই ধরনের নিপীড়ন আরও বেশি চলছে। আমি শিক্ষক হিসেবে চুপ থাকতে পারি না। ভয়কে জয় করতে পারলে, সেদিন থেকে এই নৈরাজ্য বন্ধ হয়ে যাবে। আবরাবের মতো যদি পরিণতি হয়, তাহলে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা কী হবে একবার ভেবে দেখেছেন? আমরা এর অবসান দেখতে চাই। আমরা এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি চাই না।

আরবি বিভাগের অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসুদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল প্রাণ শিক্ষার্থী। সেখানে প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন আর সেটার প্রতিবাদে আমাদের এখানে দাঁড়াতে হচ্ছে। যারা এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছে, তাদের ছাত্র পরিচয় দিতে আমাদের লজ্জা লাগে। আমরা এমন ঘটনার তীব্র নিন্দা জানায়। ছাত্রলীগের গুন্ডারা শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে কাজ না করে, তাদের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে।

এ সময় শিক্ষার্থীর অভিভাবক বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর হামিদ বলেন, শোকের মাসে আমাদের প্রতিবাদে দাঁড়াতে হচ্ছে। এটা শোকসন্তপ্ত জাতির কাছে বেমানান। এখন থেকে তাহলে মাস্তানি বিভাগ খোলা হোক বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাহলেই সেটা ভালো হবে। আর নাহলে এগুলোকে উৎখাত করুন।

প্রশাসনের প্রশ্রয়কে দায়ী করে রাকসু আন্দোলন মঞ্চের আহ্বায়ক আব্দুল মজিদ অন্তর বলেন, ছাত্রলীগ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে, কিন্তু প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। শত-শত শিক্ষার্থীকে বঞ্চিত করে গুটি কয়েক সন্ত্রাসীকে নিয়ে তারা হাঁটছে। এ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা মেধা নিয়ে ভর্তি হয়ে কিছু শিক্ষকের মদদের কারণে চোর, বাটপার, সন্ত্রাসী হয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের হয়। পরবর্তীতে তারা দেশের যে সেক্টরেই যাচ্ছে, সেখানেই দুর্নীতির আখড়া বানিয়ে ফেলছে। মতিহার হলে সামসুল ইসলামের ওপর যে নির্যাতন করা হয়েছে, তার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।

ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি নাইমুল ইসলাম নাইম বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে রাজনৈতিক যে অপসংস্কৃতির চর্চা চলছে, তা শুধু একটি সংগঠন করছে। তা হলো ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগই এখন ছাত্রলীগের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। হোটেল মালিক থেকে চাঁদাবাজি, দোকান থেকে ছিনতাই, শিক্ষার্থীদের মারধর, সিট বাণিজ্যসহ অনেক অপকর্ম ছাত্রলীগ করছে। এসব অপকর্ম করেও তারা মুক্তভাবে ক্যাম্পাসে বিচরণ করছে। মতিহার হলের শিক্ষার্থীকে যে নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে, আমরা তার সুষ্ঠু বিচার চাই।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com