স্ত্রীর আধ্যাত্মিক গুরুর কথায় ওঠেন বসেন দ. কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট

0

স্ত্রীর আধ্যাত্মিক গুরু বলেছেন ব্ল হাউজে থাকা টিক হবে না। এ কারণেই দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ভবনে উঠছেন না দেশটির সদ্য ক্ষমতায় আসা প্রেসিডেন্ট ইউন সক ইয়ল (৬১)। ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে চাঞ্চল্যকর এ খবর উঠে এসেছে।

‘ব্লু হাউজ’। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবসের নাম। দেশ জন্মের আদিকাল থেকে প্রেসিডেন্টের বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এটি। সদ্য ক্ষমতায় আসা প্রেসিডেন্ট ইউন সক ইয়ল অবশ্য এই ভবন বসবাসের জন্য ব্যবহার করবেন না বলে সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। পরিবর্তে দেশটির ঐতিহাসিক প্রেসিডেন্ট ভবনকে সবার জন্য উন্মুক্ত ঘোষণা করেছেন তিনি। এর মাধ্যমে ৭২ বছর পর এই প্রথম ভবনটির প্রবেশদ্বার খুলে দেওয়া হলো দর্শনার্থীদের জন্য। দক্ষিণ কোরিয়ার ঐতিহ্যবাহী এই ভবটির ছাদের রং নীল হওয়ার কারণেই ‘ব্ল হাউজ’ নামকরণ হয় এটির। দেশটির প্রাচীনকালের বাড়িগুলোর আদলে বানানো হয়েছিল ভবনটি। দীর্ঘ এ সাত দশকের ১৩ প্রেসিডেন্টদের মধ্যে ইউন সক ইয়লই প্রথম ব্যক্তি যিনি কিনা সরকারি বাসস্থান হিসেবে ব্যবহার করবেন না এই রাজসিক প্রাসাদ। লোকমুখে শোনা যাচ্ছে, তার ব্যক্তিগত ওঝার (ধর্মগুরু) নিষেধের কারণে ভবন পরিবর্তনের চিন্তা মাথায় এসেছে তার। নির্বাচনি প্রচারণার সময় ওঝা বিষয়ক কানা-ঘুষা প্রথম শোনা যায় তাকে নিয়ে। জানা গেছে, তার স্ত্রী কিম কুন-হি’র (৪৯) মাধ্যমেই এই ‘আধ্যাত্মিক উপদেষ্টার’ দেখা পান তিনি। যদিও প্রশ্ন ওঠার পর থেকেই বিষয়টি অস্বীকার করে যাচ্ছেন তিনি। নির্বাচনে বিজয়ী হবার পরে ৯ মার্চ তিনি এক বক্তব্যে বলেন, ‘ওঝা নিয়ে কৌতূহল দেখি আমার থেকে ডেমোক্রেটিক দলেরই বেশি।’ বিশ্লেষকদের মতে, ব্লু হাউজে অবস্থানকালে তার পূর্বসূরি প্রেসিডেন্টদের ওপর আশা অভিশাপের ছায়া কাটাতেই ওঝার উপদেশের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। অপর দিকে, সাধারণের জন্য ব্লু হাউজ উন্মুক্ত করে দেওয়ায় নাগরিকদের মধ্যে দেখা গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। নির্মাণ প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত হোয়াং জিন-উ বলেন, ‘একদম অবিশ্বাস্য লাগছে।’ ভবনটির বাইরের জায়গাটিতে শিগগিরই বানানো হবে একটি পার্ক। সেখানে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে এই জায়গাটি পরিচিত ছিল ক্ষমতার প্রতীক হিসেবে। সোমবার পর্যন্ত এটি ছিল সেই ক্ষমতার নিদর্শন, কিন্তু এখন জায়গাটি সবার জন্য উন্মুক্ত। আমাদের সময় এই জায়গার দিকে এক ঝলক দেখাই ছিল খুব দুষ্কর। সবার জন্য জায়গাটি খুলে দেওয়ায় তাই একটু আবেগ আপ্লুত বোধ করছি। অপর দিকে, চমকপ্রদ এই ব্ল হাউজ এক পলক দেখতে লি জিন-ওক এসেছেন রাজধানী সিউলের অদূরে অবস্থিত ছোট্ট শহর সুওন থেকে।

তিনি বলেন, ‘জায়গাটিকে নাগরিকদের কাছে ফিড়িয়ে দেওয়ার চিন্তাধারাটি খুব অভিনব।’ তিনি আরও বলেন, ‘অনেক সংস্কৃতিগত মূল্য আছে জায়গাটির। আমার মতে, ব্লু হাউজ কোরিয়ার সবচেয়ে সুন্দর স্থাপনাগুলোর মধ্যে একটি। আমি আশা করছি মানুষ এখানে এসে নিজেদের উপভোগ করার পাশাপাশি, কোরিয়া এবং তার সাবেক প্রেসিডেন্টদের ইতিহাস সম্পর্কেও জানতে আগ্রহী হবেন।’ অন্য দিকে, প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের কর্মকর্তা কিম মিন-সুর মাথায় ঘুরছে ভিন্ন চিন্তা। প্রেসিডেন্ট ইউনের নতুন দাপ্তরিক কার্যালয় বানাতে গিয়ে এত লাখ-লাখ ডলার খরচ করাটা কী সদ্ব্যবহারের মধ্যে পড়ছে কি-না ঠিক নিশ্চিত নন তিনি।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com