হিসাব কষেই ঝুঁকি নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ইরানের জাতীয় বীর হিসেবে খ্যাত কাসেম সোলাইমানিকে হত্যা করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা তিনি হিসাব কষেই নিয়েছেন। তার সামনে যেসব বিকল্প ছিল, সম্ভবত তিনি তার মধ্য থেকে সেরাটাই বেছে নিয়েছেন। এশিয়া টাইমসে প্রকাশিত এক বিশ্লেষণে এমনটা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, ক্ষমতা পাওয়ার পর ট্রাম্পের হাতে তেমন বিকল্প ছিল না। বিশেষ করে তার পূর্বসূরি জর্জ ডব্লিউ বুশ প্রশাসনই এজন্য দায়ী। ইরাকের সাদ্দাম হোসেনকে সরিয়ে তিনি পশ্চিম এশিয়ায় কয়েকশ’ বছর পুরনো সুন্নি-শিয়া ভারসাম্য নষ্ট করে দিয়েছিলেন। সাদ্দামকে সরিয়ে তিনি ইরাকে ক্ষমতায় বসিয়েছিলেন ইরানপন্থি শিয়া সরকারকে।
সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসনে বিশ্বাস ছিল বুশের। ফলে তার ওই সিদ্ধান্ত নব্য রক্ষণশীলরা ইতিবাচকভাবে নেয়।
কিন্তু বাস্তবতা হলো, ওই কারণেই এই অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারের সুযোগ পেয়ে যায় ইরান। ট্রাম্প অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন ইরানের ওপর। কিন্তু এতে যে ইরান দমে গেছে, তা নয়। সম্প্রতি, ইরাকে যখন ইরান সমর্থিত মিলিশিয়াদের ওপর বিমান হামলা চালালো যুক্তরাষ্ট্র, তখন বাগদাদে মার্কিন দূতাবাসে হামলা চালিয়ে উস্কানি দেয় ইরান। ইরানের উদ্দেশ্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রকে নমনীয় করা। যুক্তরাষ্ট্র হয়তো ইটের বদলে পাটকেল মারতে পারতো। কিন্তু ট্রাম্প সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি আনুপাতিক পদক্ষেপের ধার ধারবেন না।
ইরানের মার্কিন দূতাবাস হামলা, আর যুক্তরাষ্ট্রের হাতে সোলেমানির হত্যাকাণ্ড, দুই-ই খুব ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। মার্কিন দূতাবাসে মিলিশিয়া হামলায় সমর্থন দিয়ে লাল দাগ অতিক্রম করেছিল ইরান। ঠিক তেমনি জেনারেল সোলেমানিকে হত্যা করে ট্রাম্পও লাল দাগ অতিক্রম করেছেন। কোনো রাষ্ট্রই এ ধরনের সিদ্ধান্ত খেয়ালখুশি মতো নেয় না। ইরানের আঞ্চলিক কৌশল নির্ভর করে অনিয়মিত যুদ্ধ কৌশলের ওপর।
ইরাক, সিরিয়া ও লেবাননের শিয়া মিলিশিয়ারা এই যুদ্ধে লিপ্ত। এ ছাড়া দেশটির আছে কৌশলগত কিছু অস্ত্রও। যেমন, মধ্যমপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। সেপ্টেম্বরে ইরান নিজেদের কৌশলগত শক্তিমত্তার কিছুটা জানান দিয়েছিল। তখন মাটিঘেঁষা ক্রুজ মিসাইল ও স্বচালিত ড্রোন ব্যবহার করে সৌদি আরবে আরামকোর তেল স্থাপনায় হামলা চালাতে সক্ষম হয় দেশটি। ২০১৭ সালে ইরান ২০০০ কিলোমিটার পাল্লার খোরামশার ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছিল। এটি স্পষ্ট নয় যে, এই অস্ত্র কতটা কার্যকর বা ইরানের হাতে এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র কয়টি আছে। তবে এমনটা খুবই সম্ভব যে, দোহায় অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটির ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গুঁড়িয়ে দেয়া বা পারস্য উপসাগরে অবস্থিত কোনো মার্কিন রণতরীর বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অকার্যকর করে আক্রমণ হানার মতো যথেষ্ট ক্ষেপণাস্ত্র ইরানের আছে।
তবে পারস্য আসলে একটি ক্ষীয়মাণ শক্তি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে ফ্রান্স যে অবস্থায় ছিল, ইরানও আজ সেই অবস্থায় আছে। ইরানে ৬৫ বছর বয়সী প্রত্যেক নাগরিকের বিপরীতে কাজ করার মতো নাগরিক আছে ৫ জন। কিন্তু ২০৫০ সাল নাগাদ এই অনুপাত পাল্টে যাবে। বর্তমান হিসাব অনুযায়ী, প্রতি ১ জন অবসরপ্রাপ্ত নাগরিকের বিপরীতে ১.৮ জন কর্মী থাকবে। ইরানের অর্থনীতি ধসে যাবে। দেশটির পেনশন সিস্টেম ইতিমধ্যেই দেউলিয়া হয়ে গেছে। আঞ্চলিক আধিপত্য ধরে রাখতে ইরানের একমাত্র আশা হলো মেসোপটোমিয়া ও লেভান্তজুড়ে শিয়া উপস্থিতি আরো বিস্তৃত করা। এক্ষেত্রে মাধ্যম হতে পারে লেবাননের হিজবুল্লাহর মতো মিলিশিয়া, কিংবা সিরিয়ায় ৮০ হাজার সদস্যের মার্সেনারি মিলিশিয়ারা, যাদের বেশির ভাগই আফগান ও পাকিস্তানি শিয়া।
নেপোলিয়নকে তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী তালেরান্ড যেমনটা বলেছিলেন, ইরানের সমস্যা হলো যে, বেয়নেট দিয়ে আপনি যা ইচ্ছা তা করতে পারবেন না। শুধু পারবেন না বেয়নেটের ওপর বসে যেতে।
শিয়া বিশ্বে নিজের ভাবমূর্তি বজায় রাখতে হলে ইরানকে এখন অবশ্যই নিজের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে। কিন্তু ইরাকে যদি যুক্তরাষ্ট্র আর সিরিয়াতে ইসরাইল সক্রিয় হয়, তাহলে ইরানের এই অগ্রযাত্রা ব্যাহত হবে। গোলান উপত্যকার পাশ ঘেঁষে নিজেদের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তে ইরানি প্রক্সি বাহিনীর উপস্থিতি কিছুতেই মেনে নেবে না ইসরাইল।
সিরিয়ায় ইরানি স্থাপনা ও উপস্থিতি লক্ষ্য করে হাজার হাজার বার বিমান হামলা চালিয়েছে দেশটি। রাশিয়া এই কেবল সম্প্রতিই একটু অনুযোগের সুরে বলেছে, হামলার তীব্রতা বেড়েছে। সুতরাং, ইরানি নেতাদের মন বোঝার চেষ্টা না করেও বলা যায় যে, সিরিয়ায় ইসরাইলি হামলার বিপরীতে নৈতিক বিজয় দেখাতে কিছু একটা করে দেখানো জরুরি হয়ে গিয়েছিল ইরানের জন্য। এ ছাড়া ঘরে অর্থনৈতিক দুর্দশা তো আছেই। নভেম্বরেই বিরাট সরকারবিরোধী প্রতিবাদ বেশ কঠোর হাতে দমন করেছে ইরান। হতাহতের সর্বোচ্চ সংখ্যা ১০০০। ৩০শে ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র ইরান সমর্থিত মিলিশিয়াদের
৫টি ঘাঁটিতে হামলা চালায়। এরপরই মূলত ইরান সিদ্ধান্ত নেয় যে, নিজেদের ভাবমূর্তি ঠিক রাখতে হলে নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দিতে হবে। এরপরই মূলত ইরাকে শিয়া প্রক্সি গোষ্ঠী হামলা চালায় মার্কিন দূতাবাসে। ওই হামলার পর ট্রাম্পের হাতে বিকল্প ছিল খুব অল্প। ইরাক যুদ্ধে ৫ হাজার মার্কিন সেনা মারা গেছে। আহত হয়েছে ৫০ হাজার জন। ব্যয় হয়েছে কয়েক ট্রিলিয়ন ডলার। আর ওই যুদ্ধের মাধ্যমে ইরানি উচ্চাকাঙ্ক্ষার বিপরীতে যে সাদ্দাম ছিলেন, তাকে হটিয়ে দেয়া হয়েছে। এভাবে মূলত ইরানের আঞ্চলিক আধিপত্যের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করে দেয় যুক্তরাষ্ট্রই।
ইরান চেয়েছিল মার্কিন দূতাবাসে হামলা হলে তা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অপমানজনক হবে। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা আঘাত হানা ব্যতীত উপায় ছিল না। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সেক্ষেত্রে বেশিই প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। হত্যা করেছে ইরানের জাতীয় বীরকে। ট্রাম্প ইরানকে আরো বেশি অপমানিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এখন ট্রাম্পের সমালোচনা করা সহজ, কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্টের সামনে এর চেয়ে ভালো বিকল্প প্রস্তাব করা কঠিন। তিনি হয়তো ইরান সমর্থিত মিলিশিয়াদের ওপর হামলা অব্যাহত রাখতে পারতেন। কিন্তু ওই হামলায় তেমন একটা কাজ হচ্ছিল না।
এই সমীকরণে ইরান বা যুক্তরাষ্ট্র কারও সামনেই ভালো বিকল্প নেই। ইরানকে অবশ্যই নিজের ভাবমূর্তি রক্ষা করে চলতে হবে, নয়তো দেশটির ধর্মীয় শাসকগোষ্ঠী ধসে পড়বে। কিন্তু কাশেম সোলেমানিকে হত্যার পর ইরান এখন কীভাবে নিজের ভাবমূর্তি ঠিক রাখবে? আমেরিকার মিত্র ইসরাইল বা সৌদি আরবের ওপর হামলা করা যেতে পারে, কিন্তু সেটি এখানে যথেষ্ট হবে না। কারণ, ওয়াশিংটন প্রকাশ্যেই হত্যা করেছে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ এক নেতাকে। সুতরাং, পাল্টা আঘাত করতে হবে যুক্তরাষ্ট্রের ওপরই।
সবচেয়ে ভয়াবহ সম্ভাব্যতা হলো, ইরান হয়তো মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র, ক্রুজ মিসাইল ও ড্রোন ব্যবহার করে হামলা চালাতে পারে দোহায় অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিতে। সৌদি আরবে আরামকো স্থাপনায় সেপ্টেম্বরে ইরান যে হামলা চালিয়েছিল বলে বলা হয়, তাতেই মার্কিন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্যাট্রিয়টের দুর্বলতা ফাঁস হয়ে যায়। প্রমাণ হয়ে যায় যে, ৬০ মিটারের চেয়ে নিচ দিয়ে আসা ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করতে সক্ষম নয় প্যাট্রিয়ট। আর ইরানের আছে এমন নিচ দিয়ে আঘাত হানতে সক্ষম ক্রুজ মিসাইল। কিন্তু আমেরিকানরাও এই সমীকরণ বুঝতে পেরেছে। সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ, দোহায় অবস্থিত মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ডের নেতৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ দোহা থেকে সাময়িক সময়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় স্থানান্তর করা হয়। ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের ঝুঁকির কারণেই ওই পদক্ষেপ নেয় ইরান।
কিন্ত ইরান যদি এখন দোহা ঘাঁটিতে সত্যিই হামলা চালায়, আমেরিকান প্রতিক্রিয়া হবে ভয়াবহ। মাত্র দুই ডজন ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমা হামলা দিয়েই ইরানের সম্পূর্ণ অর্থনীতিকে মাটিতে মিশিয়ে দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই। ইরানের ৬০ শতাংশ বিদ্যুৎ চাহিদা মেটায় এক ডজনেরও কম সংখ্যক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। মাত্র ৮টি পরিশোধনাগার থেকেই ইরানের খনিজ পদার্থের ৮০ ভাগ পরিশোধিত হয়। একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলাই একটি পরিশোধনাগার ধ্বংসে যথেষ্ট। তেমন কষ্ট না করেই যুক্তরাষ্ট্র ইরানের খার্গ বন্দর ধ্বংস করে দিতে পারে, যেখান থেকে ইরানের ৯০ শতাংশ জ্বালানি তেল রপ্তানি হয়। সুতরাং, কোনো ছোটোখাটো মার্কিন যুদ্ধজাহাজকে টার্গেট করার
সম্ভাবনাই বেশি। কিন্তু আরো কোনো ছোট মার্কিন ঘাঁটি। এটি বেশ জটিল ইস্যু। সোলেমানি হত্যার উপযুক্ত প্রতিশোধ নিতে হলে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর কঠোর আঘাত হানতে হবে ইরানকে, কিন্তু এমনভাবে করতে হবে যেন যুক্তরাষ্ট্র পাল্টা আঘাত না হানে। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য আরেকটি বিবেচ্য হচ্ছে এ ধরনের সংঘাতের কারণে তেলের দাম ও বিশ্ব অর্থনীতির ওপর সম্ভাব্য প্রভাব পড়ার বিষয়টি। যুক্তরাষ্ট্র যদি ইরানি অর্থনীতি ধ্বংসও করে দেয়, তবুও ইরানের কাছে যথেষ্ট সমরাস্ত্র থাকবে, যা দিয়ে পারস্য উপসাগরের বাণিজ্য পথ বন্ধ করে দেয়া যাবে। তা হলে বিশ্ব অর্থনীতি বেশ বাজে পরিস্থিতিতে পড়বে।
একটি বিষয় স্পষ্ট যে, দূতাবাসে হামলার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র এমন প্রতিক্রিয়া দেখাবে তা আশা করেনি ইরান। ইরান যদি এমনটা আশঙ্কা করতো, জেনারেল সোলেমানি কোনো অবস্থাতেই ব্যক্তিগতভাবে বাগদাদ বিমানবন্দরে থাকতেন না। ইরানকে এখন এমন এক প্রতিক্রিয়া ঠিক করতে হবে, যার পরিণতি হিসাব করা কঠিন হবে। আর বড় ধরনের সংঘাত সৃষ্টি হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। ইরান হয়তো নিজেদের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে সীমিত হামলা চালাতে পারে। ইরান যদি চুপ থাকে, তাহলে এই অঞ্চলে দেশটিকে যে সবাই সমীহ করে চলে, তা নষ্ট হয়ে যাবে। আর তখনই ট্রাম্প জুয়ায় জিতে যাবেন! আঘাত আসার আগেই আক্রমণ করে ফেলাই সবচেয়ে বেশি কার্যকর।
অনেক সময় এটিই সবচেয়ে কম সহিংস পদক্ষেপ। বিশ্বে যতগুলো বড় ও দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ হয়েছে, সেগুলো এত রক্তাক্ত হতো না, যদি আরেকটু আগে শুরু হতো। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ক্ষেত্রে এটি আরো প্রযোজ্য। জার্মানি যদি ১৯০৫ সালে প্রথম মরক্কো সংকট চলাকালেই ফ্রান্সের ওপর আক্রমণ করতো, তাহলে ফলাফল যেতো জার্মানির বিপক্ষে। কারণ, তখনও বৃটেন ফ্রান্সের সঙ্গে চুক্তি করেনি, রাশিয়াও নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ নিয়ে ব্যস্ত ছিল। কিন্তু পরে যখন যুদ্ধে জড়ালো দুই পক্ষ, ফলস্বরূপ পশ্চিমা সভ্যতা প্রায় ধ্বংসের কিনারে পৌঁছে যায়। অথচ, তখনই জার্মান শাসক উইলহেমকে তার সমরবিদরা হামলার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তিনি ওই পরামর্শ অগ্রাহ্য করে শান্তি বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নেন। উইলহেমের জার্মানি নৈতিকভাবে উঁচু স্তরের ছিল তা নয়, কিন্তু যুদ্ধে খুব দ্রুত যদি
একপক্ষ জিতে যায়, সেটি দীর্ঘস্থায়ী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের চেয়ে ঢের উত্তম।
ঠিক একইভাবে বলা যায়, বৃটেন ও ফ্রান্স যদি জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য, অর্থাৎ হিটলারের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ঠেকাতে ১৯৩৬ সালের পরপরই যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে শুরু করতো, তাহলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধও অমন দীর্ঘ ও রক্তক্ষয়ী হতো না। ১৯৩৬ সালে হিটলার যখন পুনরায় রাইনল্যান্ড দখলে নিলেন, তখনই প্রস্তুতি শুরু করা উচিত ছিল বৃটেন ও ফ্রান্সের। যত দেরি হয়েছে, ততই সমস্যা বেড়েছে।
এ কারণেই বলা যায়, ট্রাম্প সমস্যাকে বাড়তে না দিয়ে আগেই এসপার-ওসপার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ভবিষ্যতই বলে দেবে কাশেম সোলেমানিকে হত্যার পরিণতি কী বয়ে নিয়ে আনে। কিন্তু এমন সম্ভাবনা আছে যে, এটি ট্রাম্পের মাস্টারস্ট্রোক হিসেবেই প্রমাণিত হবে।