ইরানের ৫২টি স্থানে হামলা চালাবে যুক্তরাষ্ট্র!
ইরান যদি আমেরিকানদের বা মার্কিন সম্পদের ওপর আঘাত হানে তবে যুক্তরাষ্ট্র ৫২টি ইরানি স্থানে অত্যন্ত দ্রুততার সাথে ও খুবই কঠোরভাবে আক্রমণ চালাবে বলে প্রেসিডেন্ট হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।
মার্কিন ড্রোন হামলায় ইরানি জেনারেল কাসেম সোলাইমানি নিহত হওয়ার প্রেক্ষাপটে এই মন্তব্য করেন ট্রাম্প। ইরান ওই হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছে।
ট্রাম্প টুইটারে বলেন, মার্কিন সম্পদকে টার্গেট করবে বলে খুব সাহসের সাথে কথা বলছে ইরান। তিনি বলেন, ইরান ও ও ইরানি সংস্কৃতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ ৫২টি স্থান চিহ্নিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরান যদি যুক্তরাষ্ট্রের ওপর হামলা চালায় তবে যুক্তরাষ্ট্র ওইসব স্থানে খুবই দ্রুতার সাথে ও কঠোরতার সাথে হামলা চালাবে।
সূত্র : বিবিসি
যুদ্ধের গোপন প্রস্তুতি, তেল ও সোনার বাজার ঘিরে শঙ্কার মেঘ
আরো একটা বিশ্বযুদ্ধ হতে চলেছে! গোপনে প্রস্তুতিও নাকি চলছে! মার্কিন হামলায় ইরানের সামরিক কমান্ডার জেনারেল কাশেম সোলাইমানি নিহত হওয়ার পর এই জল্পনা ছড়িয়েছে বিশ্বজুড়ে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট অবশ্য বলেছেন, ‘শুরু নয়, যুদ্ধ শেষ করতেই সোলাইমানিকে হত্যা করা হয়েছে।’ কিন্তু তাতে আশঙ্কা কমছে না। ট্যুইটারে ট্রেন্ডিং তালিকায় উপরের দিকে উঠে এসেছে ‘#ওয়ার্ল্ড ওয়ার থ্রি’। সোলেমানির মৃত্যুতে শুক্রবারই প্রভাব পড়েছিল তেল ও সোনার আন্তর্জাতিক বাজারে। একলাফে সোনার দাম ১ শতাংশের বেশি বেড়ে যায়। অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়ে ৪ শতাংশেরও বেশি। শনিবারও এই দর অপরিবর্তিত ছিল।
এরই মধ্যে ইরাকে ইরান-ঘনিষ্ঠ হাশেদ বাহিনীর একটি কনভয়ে ফের মার্কিন ড্রোন হামলা হয়। তারপরই ইরানের সেনা মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রামাজান শরিফ হুঁশিয়ারি দেন, ‘ইসরাইল ও আমেরিকার এই ক্ষণিকের উল্লাস অচিরেই শোকে পরিণত হবে। প্রয়োজনে তেহরান তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধও করতে পারে।’ সূত্রে খবর, দেশের পশ্চিম আকাশসীমায় যুদ্ধবিমানের মহড়া চলছে। একাধিক যুদ্ধবিমানকে কৌশলগতভাবে মোতায়েন করা হয়েছে।
ইরানের এক সেনা কমান্ডার আবুহামজে জানান, তেহরানের হামলা চালানোর পরিধির মধ্যে আমেরিকার অন্তত ৩৫টি সেনাঘাঁটি রয়েছে। খুব শিগগিরই প্রত্যাঘাত হবে। পিছিয়ে নেই আমেরিকাও। ইরানের প্রত্যাঘাতের শঙ্কায় পশ্চিম এশিয়ায় বাড়তি ৩ হাজার সেনা পাঠাচ্ছে ওয়াশিংটন। গত বছরই পশ্চিম এশিয়ায় প্রায় ১৪ হাজার সেনা মোতায়েন করেছিল আমেরিকা।
সোলাইমানির মৃত্যুর পর ইরাক থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের দাবিতে ইতিমধ্যেই পার্লামেন্টে চাপ বাড়াতে শুরু করেছেন সেদেশের ইরানপন্থীরা। এই ইস্যুতে ভোটাভুটির জন্য আজ, রোববার জরুরি অধিবেশন বসছে ইরাক পার্লামেন্টে। আপাতত মার্কিন নাগরিকদের অবিলম্বে ইরাক ছাড়ার আর্জি জানিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। একই আর্জি জানানো হয়েছে বাহরাইন, কুয়েত ও নাইজেরিয়ার মার্কিন নাগরিকদের উদ্দেশেও। পেন্টাগনের এক কর্মকর্তা জানান, সেনাবাহিনীর একটি ব্রিগেডকে সতর্ক করা হয়েছে। যেকোনো সময়ে লেবানন যাওয়ার জন্য তাদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। লেবাননের মার্কিন দূতাবাসে হামলার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই এই পদক্ষেপ।
এদিকে, সোলাইমানির মৃত্যুর পরপরই আমেরিকা পিছু হঠে ‘কূটনৈতিক চাল’ দেয়ার চেষ্টা করেছিল বলে দাবি করেছেন রেভলিউশনারি গার্ডের ডেপুটি কমান্ডার আলি ফাদাভি। শনিবার তিনি বলেন, ‘ওরা বলছিল, যদি প্রতিশোধ নিতেই হয়, তাহলে আমরা যা করেছি, সেই অনুপাতেই প্রতিশোধ নিতে হবে।’ এরপরই তিনি শ্লেষের সুরে জানান, ‘ইরানের প্রত্যাঘাত কেমন হবে তা স্থির করার মতো জায়গায় নেই আমেরিকা।’