ইসিতে বিএনপির দুই মেয়র প্রার্থী তাবিথ ও ইশরাকের অভিযোগ
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে বিএনপির দুই মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন স্ব-স্ব রিটার্নিং কর্মকর্তার দফতরে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ঢাকা উত্তর সিটির আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী আতিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনেন তাবিথ আউয়াল। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে তা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন ঢাকা উত্তর সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তা।
অপরদিকে পুরনো মামলায় কাউন্সিলর প্রার্থীদের গ্রেফতার ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ করেন ইশরাক হোসেন। তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে রিটার্নিং কর্মকর্তা পুরনো মামলায় প্রার্থীদের গ্রেফতার না করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে অনুরোধ জানান। শনিবার তারা এ সব লিখিত অভিযোগ করেন।
রাজধানীর গোপীবাগে সাদেক হোসেন খোকা কমিউনিটি সেন্টারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে শনিবার দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে এ সব অভিযোগ করেন বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন।
অভিযোগে তিনি বলেন, প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে সরকারদলীয় কাউন্সিলর প্রার্থীরা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অসাধু কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে হুমকি দিচ্ছেন। প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে বিভিন্ন মামলার সম্মুখীন হতে হবে বলেও হুমকি দেয়া হচ্ছে।
মেয়র প্রার্থী হিসেবে নিজে হুমকি পেয়েছেন কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ইশরাক হোসেন বলেন, প্রশ্নই ওঠে না। আমাকে কে হুমকি দেবে? এখন পর্যন্ত ঢাকা দক্ষিণে তিনজন কাউন্সিলরকে হুমকি দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এখন থেকে নির্বাচন পর্যন্ত নতুন করে কোনো পুরনো মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানার আদেশ যাতে না হয়, এ বিষয়ে তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তাকে পদক্ষেপ নিতে বলেছেন। যে সব কাউন্সিলর প্রার্থী হুমকির সম্মুখীন হচ্ছেন, তাদের কীভাবে নিরাপত্তা দেয়া যায় এই বিষয়েও কথা বলেছেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা তাকে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন।
তবে অতীতেও এমন আশার বাণী শুনেছেন জানিয়ে ইশরাক বলেন, অতীতে অভিযোগ দেয়ার পর কমিশনের তরফ থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এবার পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা আশ্বাসের বাণী শুনিয়েছেন। আমরাও আশাবাদী হতে চাই।
পরে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবদুল বাতেন সাংবাদিকদের বলেন, অনেক আগের মামলা পুনরুজ্জীবিত করে এখন কোনো আদেশ বা ব্যবস্থা নেয়া হলে তা অনাকাঙ্খিত হবে। তবে ফৌজদারি মামলা হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যাবে।
তিনি বলেন, পুরনো মামলায় শাস্তি বা পরোয়ানা হয়ে থাকলে তফসিল ঘোষণার আগেই পদক্ষেপ নেয়া উচিত ছিল। এখন পুরনো মামলায় নতুন করে ব্যবস্থা নেয়া হলে তা ঠিক হবে না। নির্বাচনের পর ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। তবে যদি এমন হয় ফৌজদারি মামলা আছে, তা নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়, সেটা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া যাবে।
বিএনপি প্রার্থীর লিখিত অভিযোগ জমা দেয়া প্রসঙ্গে আবদুল বাতেন বলেন, লিখিত অভিযোগ আমরা পরীক্ষা করে দেখব। মামলার বিস্তারিত না দেখে মন্তব্য করা ঠিক না।
অপরদিকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বিএনপির প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। শনিবার নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট (ইটিআই) ভবনে রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কাসেমের কাছে তাবিথের পক্ষে এটি জমা দেন জুলহাস উদ্দিন।
পরে উপস্থিত সাংবাদিকদের জুলহাস উদ্দিন বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আতিকুল ইসলাম আজ (শনিবার) সকালে গুলশান-১ পার্কে নির্বাচনী মঞ্চ করে মাইক এবং সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করে আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। এ বিষয়ে বিএনপি প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের পক্ষ থেকে আমরা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমরা অভিযোগের পক্ষে কিছু স্থিরচিত্র সংযোজন করেছি।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, এ আইন ভঙ্গ করলেও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বা কোনো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এই বিধিমালা লঙ্ঘনকারী প্রার্থীকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টাও করেননি। তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা না নিলে এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন কখনই জনগণের আস্থা অর্জন করবে না।
অভিযোগ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কাসেম বলেন, বিএনপি প্রার্থীর পক্ষ থেকে অভিযোগটি পেয়েছি। ওই এলাকায় ম্যাজিস্ট্রেট যিনি আছেন আমি তার কাছে এটি পাঠাব, সেটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলব। প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।